সিলেট অঞ্চল, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ইঁদুর নিধন অভিযান ২০২৩ উদ্বোধন এবং ২০২২ পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত

মো. জুলফিকার আলী: “ইঁদুরের দিন শেষ, গড়বো সোনার বাংলাদেশ” এ প্রতিপাদ্য বিষয়ে- কৃষি সস্প্রসারণ অধিদপ্তর, সিলেট অঞ্চল, সিলেট জেলা, সিলেট সদর উপজেলা ও মেট্রোপলিটন অফিস, সিলেট এর আয়োজনে অতিরিক্ত পরিচালকের কার্যালয়ের কনফারেন্স কক্ষে সিলেট অঞ্চল, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ইঁদুর নিধন অভিযান ২০২৩ উদ্বোধন এবং ২০২২ পুরষ্কার বিতরণ আজ ১৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই কৃষিবিদ মো. আনিছুজ্জান, অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য), ডিএই. সিলেট মাল্টিমিডিয়ার সাহায্যে ইঁদুর ও ইঁদুর দমনের উদ্দেশ্য, ইঁদুর বংশবিস্তার ও স্বভাব ,মাঠ ফসলের ক্ষতি, ইঁদুর দমনের কৌশল উপস্থাপন করেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রায় ১০ শতাংশ ধান, গম ইঁদুর খেয়ে ফেলে ও নষ্ট করে। তিন মাসের জন্য ধান গুদামে রাখা হলে ৫ থেকে ১০ ভাগ ইঁদুরের দ্বারা ক্ষতি হতে পারে। এ পর্যন্ত দেশে ১৮ প্রজাতির ইঁদুর শনাক্ত করা হয়েছে । ইঁদুর ধান ফসলে তিন মৌসুমেই আক্রমণ করতে পারে। তবে আমন মৌসুমে নিরাপদ আশ্রয়স্থল, পর্যাপ্ত খাদ্য এবং পানি সহজলভ্য হওয়া এবং মৌসুমের শেষভাগে বৃষ্টিপাত কম ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এসময়ে ইঁদুরের প্রজনন খুব বেশি হয়। প্রতি ধান মৌসুমে একটি স্ত্রী ইঁদুর অনুকূল পরিবেশে প্রায় ২৪টি বাচ্চা দিতে পারে।

অনুষ্ঠানে একজন সফল কষকের “সর্বনাশ ইঁদুর ও ইঁদুর দমনের কৌশল শিরোনামে সংবাদের ভিডিও প্রদর্শন করা হয়।

উক্ত অনুষ্ঠানে ফেঞ্চুগঞ্জের উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সুব্রত দেবনাথ এর সঞ্চলনায় কৃষিবিদ মোহাম্মদ খয়ের উদ্দিন মোল্লা, উপপরিচালক, কৃষি সস্প্রসারণ অধিদপ্তর, সিলেট এর সভাপত্বিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ মোশাররফ হোসেন খান।

তিনি অঞ্চলের জেলা উপজেলা পর্যায়ে জাতীয় ইঁদুর নিধন অভিযান ২০২৩ উদ্বোধনী ঘোষণা করেন। উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি বলেন- সারা বছর ব্যাপী যে কোন কৌশল ব্যবহার করে ইঁদুর দমন করতে হবে। তবে ইঁদুরের প্রজনন শুরুর পূর্বেই ইঁদুর নিধন করা দরকার। তাই আমন মৌসুমে ইঁদুর দমনের উপযুক্ত সময় ভাদ্র থেকে মধ্য কার্তিক। এসময় সবাই মিলে একযোগে বেশি জায়গার ইঁদুর নিধনের আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ইহার সংখ্যা কমিয়ে আনা সম্ভব। ইঁদুর দ্বারা ফসলের যে ক্ষতি হয়, বাড়ির আসবাপত্র, কাপড়, বইপত্র কেটে ক্ষতি করে তা কমানো গেলে একদিকে যেমন ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি হবে, অন্যদিকে কৃষকের আয়ও বাড়বে।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্যে রাখেন হবিগঞ্জ জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ নূরে আলম সিদ্দিকী। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সিলেট অঞ্চলে জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার, অতিরিক্ত উপপরিচালক, উপজেলা কৃষি অফিসারবৃন্দ, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাবৃন্দ , কৃষি তথ্য সার্ভিসের কর্মকর্তাসহ কৃষক-কৃষণী প্রমূখ।

ইঁদুর নিধন অভিযান ২০২২ সালে পুরষ্কার প্রাপ্তদের হাতে পুরস্কার ক্রেস্ট,সনদপত্র ও নদগ অর্থ তুলে দেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ মোশাররফ হোসেন খান।

অনুষ্ঠানে এ বছর অঞ্চল পর্যায়ে সর্বোচ্চ ইঁদুর নিধনকারী ০৩ জান উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা- প্রথম পুরস্কার প্রাপ্ত সুমন ঘোষ, হবিগঞ্জ সদর,হবিগঞ্জ; দ্বিতৃীয় পুরস্কার প্রাপ্ত আনিছুর রহমান,ছাতক, সুনামগঞ্জ; তৃতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত– মাহমুদুর রহমান, মাধবপুর, হবিগঞ্জ। অঞ্চলের ০২ জন কৃষক-আলি মর্তুজা, গ্রাম: ভাদৈ, সদর, হবিগঞ্জ ও শামীম আলম, লক্ষীপুর ,ছাতক, সুনামগঞ্জ । উপজেলা পর্যায়ে ০১ টি উপজেলা – উপজেলা কৃষি অফিসারের কার্যালয়, শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার।