এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম: কৃষক ও চা শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা নিশ্চিত করার উপর গুরুত্বারোপ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা টিপু মুনশি বলেছেন কৃষকরা যেন কারো হাতের পুতুল না হয়। কারো ইচ্ছার উপর যেন তাদের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিতে না হয়। এসময় নিজেদের স্বার্থ সংরক্ষণে কৃষক-শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানান মন্ত্রী।
আজ পঞ্চগড়ে বাংলাদেশ চা বোর্ড এবং স্মল টি গার্ডেন ওনার্স এন্ড টি ট্রেডার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ আয়োজিত পঞ্চগড় সরকারি অডিটরিয়ামে বাংলাদেশের তৃতীয় চা নিলাম কেন্দ্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
টিপু মুনশি বলেন, শুধু নিলাম কেন্দ্র করলেই হবে না, যারা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে নিদারুণ কষ্ট করে চা উৎপাদন করছেন তাদের স্বার্থ সংরক্ষণ করতে হবে। যদি এটা করা না যায় তাহলে এই নিলাম কেন্দ্র হবে মূল্যহীন। তাই কৃষক ও চা শ্রমিকরা যেন ন্যায্য মূল্য পায় তা নিশ্চিত করতে হবে। চা উৎপাদনকারীরা কেন তাদের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না এমন প্রশ্ন রেখে বাণিজ্যমন্ত্রী কৃষক-শ্রমিকরা সঠিক মূল্য না পেলে উত্তরবঙ্গসহ দেশের অন্যান্য চা বাগানগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশংকা প্রকাশ করেন।
এসময়, কৃষকের জন্য চায়ের ন্যায্য মূল্য নির্ধারণ এবং তার বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার জন্য মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ চা বোর্ড এবং জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেন তিনি। কৃষক-শ্রমিকরা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হোক এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
তিনি জানান, দেশের চা উৎপাদনের ৬৫ শতাংশ উৎপাদন হয় সিলেট অঞ্চলে। সেখানে চা নিলাম কেন্দ্র হতে একশো বছরের বেশি সময় লেগেছে। কিন্তু এখানে মাত্র ২০ বছরের মধ্যে নিলাম কেন্দ্র করা সম্ভব হলো। এটা সত্যিই গৌরব ও সৌভাগ্যের।
মন্ত্রী বলেন, চায়ের গুণগত মান ঠিক রাখতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে চা পাতা উত্তোলনের জন্য কৃষকদের বিনামূল্যে যন্ত্রপাতি সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। চা শিল্পের উন্নয়নে এ শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্টদের সকলকে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে এবং এটি অব্যাহত থাকবে।
তিনি আরো বলেন, পঞ্চগড়ে চা নিলাম কেন্দ্র হলো। এখন দরকার থাকার জন্য কিছু ভালো মানের আবাসিক ব্যবস্থা। কারণ আমরা জানি চা নিলামের সময় সশরীরে যারা অংশ নিবেন তারা এখানে আসবেন। যদি তাদের ভালো মানের একটা পরিবেশ দেয়া না যায় তাহলে নিলাম কেন্দ্রের সুফল পাওয়া যাবে না।
এ প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী ঠাকুরগাঁওয়ে এয়ারপোর্ট চালু করা গেলে বায়াররা সকালে এসে নিলামে অংশ নিয়ে বিকেলে চলে যেতে পারবেন উল্লেখ করে এয়ারপোর্ট চালু করার বিষয়ে সর্বোচ্চ মহলে কথা বলবেন বলবেন বলেও উল্লেখ করেন।
এর আগে, বাণিজ্যমন্ত্রী উদ্বোধনী স্থলে স্থাপিত বিভিন্ন টি স্টল পরিদর্শন করেন।
স্মল টি গার্ডেন ওনার্স এন্ড টি ট্রেডার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ মোঃ আমিরুল হক খোকনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন রেল মন্ত্রী এ্যাডভোকেট মো: নূরুল ইসলাম সুজন, পঞ্চগড়-১ আসনের সংসদ সদস্য মোঃ মোজাহারুল হক প্রধান এমপি, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ এবং বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনাররেল আশরাফুল ইসলাম, এনডিসি, পিএসসি।
সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক মো: জহুরুল ইসলাম, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আঃ হান্নান শেখ এবং পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা, পিপিএম।
এছাড়াও, স্থানীয় প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ চা চাষের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।