এগ্রিলাইফ ডেস্ক: এ সপ্তায় ডিম, পরের সপ্তায় কাঁচা মরিচ, আরেক সপ্তায় চিনি, সয়াবিন তেল এভাবে পুরো বছর জুড়ে কিছু অসাধু ও অতিমুনাফালোভী ব্যবসায়ী কৃত্রিম কারসাজি ও নিত্যনতুন অজুহাত দিয়ে নিত্যপণ্যের বাজারে ক্রেতা-ভোক্তাদেরকে জিম্মি করে পকেট কাটছে। আর ভোক্তা কিছু হায় হতাশ করে সরকারকে দোষারোপ করছেন। নির্বোধ বালকের মতো নিরবে এই জিম্মি দশায় খাদ্য কেনা ও খাদ্য তালিকায় কাটছাট করে কোনভাবে জীবন জীবিকা নির্বাহ করছেন।
পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো ভোক্তারা যদি তাদের কণ্ঠস্বর জোরদার করে প্রতিবাদ মুখর হয়ে দাম বাড়লে ঐ পণ্য কেনা কমাতে পারতো, তাহলে বিগত কয়েক বছর আগের ঘটনার মতো পেয়াঁজের কারসাজির মতো বিক্রি না করে টনকে টন যেভাবে পঁচে গিয়েছিলো তার মতো দশা হতো। তাই এখন প্রয়োজন নিত্যপণ্য নিয়ে কারসাজি করলে ভোক্তাদের সম্মিলিত প্রতিরোধ ও পণ্য বর্জনের মতো কঠিন পদক্ষেপ। আর এই কাজে নেতৃত্ব দিতে পারে দেশের তরুন সমাজ। কারন আজকে যারা কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তারাই আগামি দিনগুলোতে পরিবার, সমাজ ও দেশের দায়িত্বভার নিবে।
২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ইং নগরীর বহদ্দারহাটস্থ ভোজন বাড়ি রেস্টুরেন্ট কনফারেন্স হলে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) যুব গ্রুপ চট্টগ্রাম মহানগরের এর উদ্যোগে আয়োজিত নিরাপদ খাদ্য ও ভোক্তা অধিকার আইন নিয়ে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় বিভিন্ন বক্তাগন উপরোক্ত মন্তব্য করেন।
ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় অতিথি ছিলেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় উপ-পরিচালক ফয়েজ উল্যাহ, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়েনের সাবেক সভাপতি এম নাসিরুল হক, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব চান্দগাঁও থানা সভাপতি মোহম্মদ জানে আলম, সাধারন সম্পাদক ইসমাইল ফারুকী, ক্যাব পাঁচলাইশের সাধারন সম্পাদক মোহাম্মদ সেলিম জাহাঙ্গীর।
ক্যাব যুব গ্রুপের চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি আবু হানিফ নোমানের সঞ্চালনায় কর্মশালায় নিরাপদ খাদ্য নিয়ে অধিবেশ পরিচালনা করে জেলা নিরাপদ খাদ্য অফিসার মোহাম্মদ ফারহানুল ইসলাম ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আনিসুর রহমান।
আলোচনায় অংশ নেন ক্যাব যুব গ্রুপের ইব্রাহিম ফারুক, মিনা আকতার, ইমদাদুল ইসলাম, ওমর করিম, মুহাম্মদ রায়হান, তানিয়া সুলতানা, খালেদ সাইফুল্লাহ, দিসরাতুল মুনতাহা, ফাতিন, বাবলু বড়ুয়া, ফয়েজ সাদ, ফাতিন মাহমুদ, মোঃ রায়হান, ইয়াসিন আরাফাত, সাফার আহমদ, আরাফাত হোসেন, মহারাজ চৌধুরী ও আবরুল করিম নিহাল প্রমুখ।
কর্ম অধিবেশনে জেলা নিরাপদ খাদ্য অফিসার মোহাম্মদ ফারহানুল ইসলাম নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে ভোক্তা ও বিক্রেতাদের করনীয় নিয়ে ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আনিসুর রহমান পণ্য ও সেবা কিনে প্রতারিত হলে করনীয় বিষয়ে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন প্রদান করেন। একই সাথে ভোক্তা অধিকার নিয়ে প্রতারিত হলে ১৬১২১ ও খাদ্যে ভেজাল হলে ১৬১৫৫ এই হট নাম্বারে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা হয়। এছাড়াও ওয়েটসাইট ও ইমেইলেও প্রতিকার প্রাপ্তিতে অভিযোগ জানানো এবং প্রয়োজনে ক্যাব এর মাধ্যমে অভিযোগ জানানোর কথা বলা হয়।
বক্তারা আরও বলেন, বর্তমানে তরুন সমাজ সোস্যাল মিডিয়া, গেম নিয়ে আসক্তির কারনে ভোক্তাদের প্রতি প্রতিনিয়ত অবিচার, হয়রানি ও প্রতারণাসহ মুনাফাখোর ও খাদ্যেভেজাল মিশ্রণকারীদের বিরুদ্ধে সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রতিরোধ গড়ে না উঠায় মুল্যসন্ত্রাসীদের কর্মকান্ড করোনা ও ডেঙ্গু থেকেও প্রকট হয়ে উঠেছে। একশ্রেণীর মানুষ টাকা, মুনাফা মুনাফা বলে পুরো সময় জিকির জিকির করে মানুষের জীবনকে চরম হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে। তাই প্রতিটি কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এমনকি পাড়া মহল্লায় তরুণদেরকে ক্যাব যুব গ্রুপের আওতায় সংগঠতি হয়ে অসাধু ব্যবসায়ী ও মুনাফাখোর, সিন্ডিকেটদের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। এখন সময় এসেছে এসমস্ত অনিয়ম ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা।
কর্মশালায় ক্যাব যুব গ্রুপের ৭২জন সদস্য/সদস্য অংশনেন।