বিশেষ প্রতিনিধি: কৃষি সেক্টরের প্রতিটি স্তরে বিনিয়োগের রয়েছে অবারিত সুযোগ। কৃষি গবেষণা থেকে শুরু করে উৎপাদন, প্রসেসিং. এক্সপোর্ট, ফরোয়ার্ড লিংকেজ সর্বক্ষেত্রেই রয়েছে বিনিয়োগের ব্যাপ্তি। কাজেই এখানে সাউথ আফ্রিকান ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। এসব সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকা উভয়েই উপকৃত হতে পারে। এ সুযোগগুলিকে কাজে লাগিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বিনিয়োগকারীদের স্বাগত জানান এসিআই এগ্রি বিজনেসেস-এর প্রেসিডেন্ট ড. এফ এইচ আনসারী।
বুধবার ২৩ আগস্ট দক্ষিণ আফ্রিকায় সবচেয়ে বৃহত্তম শহর জোহানেসবার্গের রেডিসন হোটেল অ্যান্ড কনভেনশন সেন্টারে ‘দ্য রাইজ অব বেঙ্গল টাইগার: বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড বিজনেস সামিট’ এ গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) যৌথ আয়োজনটি দক্ষিণ আফ্রিকার স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় রোড শো শুরু হয়ে বিকাল ৩টা পর্যন্ত চলে।
সামিটে ড. এফ এইচ আনসারী বলেন, আমাদের দেশের জনসংখ্যা অত্যন্ত বেশি ফলে আমাদের বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ বাজার বেশ বড়। এখানে রয়েছে বিনিয়োগের অনেক সুযোগ। দেশের প্রতি বছর বিশ্ববিদ্যালয়গুলি থেকে কৃষি গ্রাজুয়েট. বিজনেস গ্রাজুয়েট ও সাধারণ গ্রাজুয়েটরা বের হচ্ছেন। আমাদের এ কারিগরি ও মেধাবী দক্ষ জনশক্তি কৃষি শিল্পকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান বীজ মার্কেটে প্রাইভেট সেক্টরের ব্যবসায়ীরা এখানে বেশ ভালো করছে। আমাদের দেশে ফিল্ড ক্রপস থেকে শুরু করে পোল্ট্রি, ক্যাটেল এবং ফিস ইন্ডাস্ট্রিতে ব্যাপক পরিমাণে ক্যালসিয়াম কার্বনেটের প্রয়োজন হয়। অন্যদিকে সাউথ আফ্রিকায় প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম কার্বনেট উৎপাদন হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, সাউথ আফ্রিকান ব্যবসায়ীরা এক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে পারেন। ফারমেন্টেশন কেমিস্ট্রিতে দক্ষিণ আফ্রিকার শিল্পোদ্যাক্তারা অত্যন্ত দক্ষ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের দেশে প্রচুর পরিমাণে উৎপাদিত কাঁঠাল দ্বারা তারা ফুড, কসমেটিক্স শিল্পকে অনেক সমৃদ্ধ করতে পারেন।
কৃষির পোস্ট হারভেস্টের কথা উল্লেখ করে ড. আনসারী বলেন, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ ব্যবসায় বিনিয়োগ উভয় দেশের ব্যবসায়ীদের বিশ্ববাজারে উভয় দেশকে অনেক এগিয়ে দিতে পারে। এসময় তিনি এসিআই সীড কর্তৃক সম্প্রতি বাজারজাতকৃত ইন্ডাস্ট্রিয়াল জাতের আলু ভ্যালেনসিয়া'র তথ্য তুলে ধরেন। এছাড়া তিনি ফরওয়ার্ড লিংকেজ-এ বিনিয়োগের যথেষ্ট বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ রয়েছে বলে উল্লেখ করেন।
পোল্ট্রিকে দেশের অন্যতম একটি বৃহৎ শিল্প উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখানে পোল্ট্রি প্রসেসিং শিল্পের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। পোল্ট্রি প্রসেস করে দেশের মার্কেটের পাশাপাশি আবার সাউথ আফ্রিকায় প্রক্রিয়াজাতকৃত পোল্ট্রি পণ্য রপ্তানির সুযোগ রয়েছে। এছাড়া ডেইরি পোল্ট্রি এবং ফিস ইন্ডাস্ট্রিতে প্রচুর পরিমাণে ভুট্টার প্রয়োজন হয় যার অধিকাংশই আমদানী নির্ভর। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রতিবছর ৬ মিলিয়ন মেট্রিক টন চাহিদার বিপরীতে আমাদের এই বিপুল পরিমাণ ভুট্টার যোগান দিতে পারেন সাউথ আফ্রিকান ব্যবসায়ীরা। দক্ষিণ আফ্রিকায় ভুট্টা চাষের জন্য রয়েছে প্রচুর জমি যেখানে বাংলাদেশী বিনিয়োগকারীরা ভুট্টা উৎপাদন ও প্রসেস করে বাংলাদেশে রফতানী করে এই শিল্পকে আরো এগিয়ে নিতে পারেন।
কৃষি মেশিনারিজ ব্যবসায়ের বিনিয়োগের ব্যাপারে তিনি তথ্য উপাত্ত দিয়ে উপস্থিত সাউথ আফ্রিকান শিল্পোদ্যাক্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
‘দ্য রাইজ অব বেঙ্গল টাইগার: বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড বিজনেস সামিট’ শীর্ষক এবারের পার্টনার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সহযোগিতায় করেছে আলিফ গ্রুপ। এতে দক্ষিণ আফ্রিকায় বসবাসরত বাংলাদেশি ও দেশটির বিনিয়োগকারীরা যোগ দেন।