আবুল বাশার মিরাজ, বাকৃবি: ‘যানবাহনের অপ্রতুলতার কারণে সময়মত ক্লাসে পৌঁছাতে পারতাম না। এই সার্ভিসটির কারণে এখন সময়মত ক্লাসে যেতে পারছি, অর্থের সাশ্রয় হচ্ছে, সময় বেঁচে যাচ্ছে ও শিক্ষার পরিবেশ গতিশীল হচ্ছে।’ এমন অনুভূতি ব্যক্ত করেছিলেন জয় বাংলা বাই-সাইকেল সার্ভিসটির সুবিধাভোগী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের আবাসিক ও কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থী রাকিবুল ইসলাম।
ময়মনসিংহে অবস্থিত ১২০০ একরের সুবিশাল ক্যাম্পাস বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি)। এ ক্যাম্পাসের হলগুলো থেকে ক্লাসে যেতে পথের দূরত্বও অনেকটা। আর সেই দূরত্বে যাতায়াত কষ্টকে লাঘবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ কর্মীরা এক অনন্য উদ্যোগ নিয়েছেন। যার নাম, ‘জয় বাংলা বাই-সাইকেল সার্ভিস’। দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য বিনামূল্যে সাইকেল ব্যবহারের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে এই সার্ভিসের মাধ্যমে। হলের সাইকেল গ্যারেজটি থেকে হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা নিজের নাম ও রোল লিখে নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী বিনামূল্যে সাইকেল ব্যবহার করতে পারছেন।
রাকিবুলের মতো অনেকেই বলেন, আমাদের হলগুলো থেকে অনুষদের দ‚রত্ব অনেক বেশি। প্রতিদিনই ৩-৪ বারে ৮০-৯০ টাকা যাতায়াতেই খরচ হয়। এই খরচ বহন করা আমাদের জন্য কঠিন। বিশেষ করে ব্যবহারিক ক্লাসগুলো বিভিন্ন ফিল্ড, খামার ও ল্যাব হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে আরো ভোগান্তিতে পড়তে হয়। জয় বাংলা বাইক সার্ভিস কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বাকৃবি শাখা ছাত্রলীগকে ধন্যবাদ দিতে চাই।
জানা গেছে, বাকৃবি ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে ১৪টি আবাসিক হল। হলগুলো থেকে ক্লাস ও ল্যাবের দ‚রত্ব প্রায় ২-৩ কিলোমিটার। ক্লাসের উদ্দেশ্যে এসব জায়গায় পৌঁছাতে শিক্ষার্থীদের নিজস্ব বাই সাইকেল, রিকশা ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু, অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের অনেকের নিজস্ব বাই সাইকেল না থাকায় সময়মত ক্লাসে বা ল্যাবে পৌঁছাতে পারেন না। এতে করে পড়ালেখায় পিছিয়ে পড়া ও ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছিল অসচ্ছল শিক্ষার্থীরা। এ সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে আবাসিক অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের ক্লাসে যাওয়া ও দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য বিনাম‚ল্যে ‘জয় বাংলা বাই-সাইকেল সার্ভিস’ নামে সাইকেল সার্ভিস চালুু করা হয়। স¤প্রতি হল ছাত্রলীগের উদ্যোগে এই সার্ভিসের উদ্বোধন করেন বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান।
সেবাটি সম্পর্কে জানতে চাইলে বাকৃবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি খন্দকার তায়েফুর রহমান রিয়াদ বলেন, ‘সবাই যেন সময়মত ক্লাসে যেতে পারে, শিক্ষার পরিবেশ গতিশীল থাকে তার জন্যই এই উদ্যোগটি নেওয়া। জয় বাংলা বাই-সাইকেল সার্ভিস অতিদ্রæত বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হলেই চালু করা হবে।’