বাকৃবি প্রতিনিধি: বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) ছাত্রীদের অধিকতর নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে তৈরি করা হয় সান্ধ্য আইন। কিন্তু হল প্রভোস্টদের কোনো কঠোরতা নেই এসব আইন মেনে চলতে। তাই যখন প্রয়োজন রাতে অবাধে বাইরে ঘুরে বেড়ান শিক্ষার্থীরা। অনেক সময় একাধিক শিক্ষার্থী অনৈতিক কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়েন বলেন জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তাকর্মীরা। এদিকে নিরাপত্তার স্বার্থে এসব রাতে ঘুরে বেড়ানো শিক্ষার্থীদের নিয়ন্ত্রণ করতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডি।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, সান্ধ্য আইন অনুযায়ী শীতকালে মেয়েদের হল গেট সন্ধ্যা ৭ টা এবং গ্রীষ্মকালে ৮ টার সময়ে বন্ধ হবে। বর্তমানে অধিকাংশ ছাত্রী এই আইন মানতে নারাজ। রাত ৯ টার পরও এসব শিক্ষার্থীরা বাইরে অবস্থান করে বলে জানান একাধিকসূত্র।
পশুপালন অনুষদের জান্নাতুল ফেরদৌসী জান্নাত বলেন, আমরা বাকৃবিতে সকাল ৮ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত ক্লাস করি। এই ক্লাস করার কারণে দিনের আর তো কোনো সময়ই থাকেনা। সেখানে যদি আমাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বলেই দেওয়া হয় এই সময়ের মধ্যে হলে থাকতে হবে, তাহলে এটার কারণে শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা ভাবে কিছু করাটা কঠিন হয়ে যাবে। তাই আমার মতে এই আইন থাকা উচিত না।
বেগম রোকেয়া আবাসিক হলের শিক্ষার্থী আকলিমা আক্তার বলেন, আমার ব্যক্তিগত কোনো সমস্যা নেই। আমি এই আইন বাস্তবায়নের পক্ষে। কিন্তু অনেক সময় শহরে যাওয়ায় যানজটের কারণে ক্যাম্পাসে ফিরতে দেরি হয়। এ কারণে হলে ঢুকতে ঝামেলার সম্মুখীন হতে হয়। তাই যদি ৯ টা পর্যন্ত খোলা থাকে তাহলে সুবিধা হয়।
শেখ ফজিলাতুনন্নেছা মুজিব আবাসিক হলের শিক্ষার্থী কাশফিয়া হোসেন বলেন, নিজেদের নিরাপত্তার জন্য নির্ধারিত সময়ের পর বাইরে না থাকাই উচিত। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অবশ্যই বুঝে শুনে এই সময় নির্ধারণ করেছেন। এই সময়টি আরেকটু বাড়িয়ে সাড়ে ৮ টা পর্যন্ত করে তাহলে আরও ভালো হয়।
সচেতন শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, হলে নিয়মিত মনিটরিং করা হয় না। প্রভোস্টদের হলে খুজে পাওয়া যায় না। শিক্ষার্থীদের নিয়মিত খোঁজ খবর রাখার দায়িত্ব হাউজটিউটরদের। কিন্তু ছাত্রীহল গুলোতে হাউজ টিউটররা হলে আসে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো আজহারুল ইসলাম বলেন, সন্ধ্যা আইন আগের মতই রয়েছে। কেবল বাস্তবায়ন করার জন্য কাজ করা হয়। এ ব্যাপারে হল প্রভোস্ট আমাদের সহযোগিতা করে না। হলের ভিতরের বিষয়ে আমরা কিছুই করতে পারি না। হলের গেট সব সময় খোলা থাকলে মেয়েরা বের হবেই এটা আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না। তবে হলের বাইরের আমরা নিয়মিত মনিটরিং করি। সহকারী প্রক্টরবৃন্দ সর্বদা ক্যাম্পাস তদারকি করে। কোনো শিক্ষার্থী যদি অপকর্ম করে তাদের বিরুদ্ধে আমরা আইননানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট কাউন্সিলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. নূরুল হায়দার রাসেল বলেন, সান্ধ্য আইন বাস্তবায়ন করার জন্য নতুন করে টিম গঠন করা হয়েছে। হাউস টিউটররা একাডেমিক কাজে ব্যস্ত থাকায় হলে নিয়মিত সময় দিতে পারে না। সান্ধ্য আইন বাস্তবায়নে প্রক্টরিয়াল বডির সাথে হাউজ টিউটরটা কাজ করবেন। আশা করি তারা এই আইন ভালোভাবে বাস্তবায়ন করতে পারে। নিয়মিত মনিটরিং করা ও তদারকি করবে প্রক্টরিয়াল বডি।