এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম: আজ ২৩ জুন এই ঐতিহাসিক দল আওয়ামীলীগের ৭৪-তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন ঢাকার স্বামীবাগে বিখ্যাত রোজ গার্ডেনে জন্ম হয়েছিল দেশের এই প্রাচীনতম রাজনৈতিক দলটির। এই দলের জন্মলাভের মধ্য দিয়েই রোপিত হয়েছিল বাঙালীর হাজার বছরের লালিত স্বপ্ন-স্বাধীনতা সংগ্রামের বীজ। দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) নীল দলের আহবায়ক প্রফেসর ড. সৈয়দ মোহাম্মদ এহসানুর রহমান ও সদস্য সচিব প্রফেসর ড. মোঃ ফারুক ইমাম, শুরু থেকে আজ পর্যন্ত যেসব নেতাকর্মী দলের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে জড়িত ছিলেন-আছেন তাঁদের প্রাণঢালা অভিনন্দন জানিয়েছেন।
জন্মলগ্ন থেকেই দেশের মাটি ও মানুষের প্রতি দলটির নেতাকর্মীদের অঙ্গীকার ও ত্যাগ-তিতিক্ষার মধ্য দিয়ে শুরু হয় পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বাঙালী জাতির গৌরবোজ্জ্বল সংগ্রামের ইতিহাস। জনগণের অকুণ্ঠ ভালবাসা ও সমর্থন নিয়েই এই দলটি বিকশিত হয়।
প্রথম কমিটিতে সভাপতি ছিলেন মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী এবং সাধারণ সম্পাদক ছিলেন শামসুল হক। যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন সে সময়ের তরুণ নেতা শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৪৯ সালে গঠিত পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ পরবর্তীকালে নাম থেকে মুসলিম শব্দটি বাদ দিয়ে দলের নেতৃত্ব দলকে একটি অসাম্প্রদায়িক দলে রূপান্তর করেন। ১৯৬৬ সালের ১৮ মার্চ দলের কাউন্সিল অধিবেশনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে সভাপতি আর তাজউদ্দীন আহমদকে সাধারণ সম্পাদক করে দল পুনর্গঠন করা হয়।
বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ১৯৭১ সালের মার্চ মাসে ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধ শেষে পাকিস্তানের কারাগার থেকে ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি মুক্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ১০ জানুয়ারি দেশে ফিরে সরকার গঠন করে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনের দুরূহ কাজটি হাতে তুলে নেন এবং সাড়ে তিন বছরের মাথায় দেশটাকে নিজের পায়ের ওপর দাঁড় করিয়ে দেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে দলটিকে সম্পূর্ণভাবে নেতৃত্বশূন্য করার উদ্দেশ্যে কারাগারে বন্দি জাতীয় চার নেতাকেও হত্যা করা হয়। বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা-শেখ হাসিনা আর শেখ রেহানা দেশের বাইরে থাকার কারণে ঘটনাচক্রে বেঁচে যান। ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগের এক বিশেষ কাউন্সিল অধিবেশনে প্রবাসে নির্বাসন জীবনযাপনকারী শেখ হাসিনাকে সর্বসম্মতভাবে দলের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। সেই বছর ১৭ মে শেখ হাসিনা দেশের এক ক্রান্তিকালে দেশে ফেরেন, যখন দেশে জেনারেল জিয়া সব প্রতিপক্ষকে দমন করে একজন একনায়কের মতো দেশ শাসন করছেন।
১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২১ বছর পর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের ম্যান্ডেট পায়। বর্তমানে তিনি শুধু বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নন, বিশ্বেও একজন স্বীকৃত রাষ্ট্রনায়ক। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ ও ক্যারিশম্যাটিক নেতৃত্বে মহামারি করোনা সফলভাবে মোকাবিলা করে দেশকে বিশ্বের কাছে রোল মডেল হিসেবে দাঁড় করিয়েছেন-দেশি-বিদেশি সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়ন করেছেন পদ্মাসেতু। বাস্তবায়নের পথে রয়েছে মেট্রোরেল, বঙ্গবন্ধু টানেল, পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পসহ নানা মেগাপ্রকল্প যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকারের দুরদর্শি নেতৃত্বের ফসল।
অতীত চর্চাটা গুরুত্বপূর্ণ কারণ, নতুন প্রজন্ম এই ইতিহাস না জানলে তাদের হাতে আওয়ামী লীগ কখনো নিরাপদ নয়; আর যেখানে আওয়ামী লীগে গত ২০ বছরে এত পরগাছার জন্ম হয়েছে সেগুলোকে সমূলে উৎপাটন করে এই ঐতিহাসিক দলটি জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আবার বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগের দিকে যাত্রা শুরু করুক-এটাই আমাদের একমাত্র কামনা। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অসাম্প্রদায়িক, উন্নত ও সমৃদ্ধিশালী বাংলাদেশ বিনির্মাণে সকলকে সচেষ্ট হওয়ার উদাত্ত আহবান জানিয়েছে বাকৃবি নীল দল।