জাতীয় ফল ঘুরাতে পারে দেশের অর্থনীতির চাকা

কৃষিবিদ ড. এম. মনির উদ্দিন: জানুয়ারী মাসের শীতের তীব্রতায় তাপমাত্রা কমে যাওয়া ও ঘন কুয়াশার আচ্ছাদনে দেশের খাদ্য ভান্ডার হিসেবে পরিচিত উত্তরবঙ্গের কৃষকদের সাথে কথা বলা এবং সরেজমিনে মাঠ পর্যবেক্ষনের মাধ্যমে যে চিত্র দেখা যায় তাতে রবি ফসল বিশেষ করে আলু ও ভুট্টার উৎপাদন মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। বাংলাদেশের কৃষি ইতিমধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে অনেক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে যা দেশের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তায় সার্বিকভাবে প্রভাব ফেলবে। জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে দেশের খাদ্য উৎপাদন ও খাদ্য ব্যবস্থার পরিবর্তন ঘটছে এবং পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে আগামী দিনগুলোতে কৃষিতে আরো পরিবর্তন আসবে মানুষের খাদ্য ও পুষ্টির যোগান নিশ্চিত করার জন্য।

বিগত বছরগুলোতে সরকারের নেয়া বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ডের ফলে দেশে বিভিন্ন ফসলের উৎপাদন অত্যন্ত সন্তোষজনকভাবে বেড়েছে। আর, এর মধ্যে ফলজাতীয় ফসল বিশেষভাবে বেড়েছে যার ফলে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে ফল উৎপাদনে শীর্ষ ১০ দেশের তালিকায় স্থান পেয়েছে। বিশেষ করে, মৌসুমী ফলের বৈচিত্র্যের কারনে বাংলাদেশ বিগত কয়েক বছরে ফল উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। জাতিসংঘের কৃষি ও খাদ্য সংস্থার মতে, গত ১৮ বছর ধরে দেশের ফলের বার্ষিক উৎপাদন গড়ে ১১ শতাংশ বেড়েছে। সেইসাথে গত ১০ বছরে ফলের ব্যবহারও বেড়েছে দ্ধিগুন।

মৌসুমী ফলের মধ্যে কাঁঠাল বড় গাছে জন্মানো বাংলাদেশের জাতীয় ফল। গবেষকদের মতে, কাঁঠালের মতো পুষ্টিকর অন্য কোন ফল নেই। কাঁঠাল থেকে কোন কিছুই নষ্ট হয়না এবং পৃথিবীতে আর কোন ফল বা ফসলের এমন বৈচিত্র্যময় ব্যবহার উপযোগীতা নেই। কৃষি বিজ্ঞানীরা কাঁঠালকে একটি অলৌকিক ফসল হিসেবে অভিহিত করেছেন যা সারা বিশ্বের লক্ষ লক্ষ মানুষকে অনাহার থেকেও বাচাতে পারে। যেহেতু দেশে বর্তমানে উৎপাদিত কাঁঠালের অর্ধেকই পাকার পর নষ্ট হয়ে যায় তাই এর ব্যবহারে পরিবর্তন আনা জরুরী। বিভিন্ন গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা যায়, কাঁঠালের সংগ্রহত্তোর অপচয়ের পরিমান প্রায় ৪৫-৫০ শতাংশ। আর, এই বিশাল অপচয় রোধের সহজ উপায় হচ্ছে কাঁচা কাঁঠালের বৈচিত্র্যময় ব্যবহার বাড়ানোর মাধ্যমে দেশের খাদ্য ব্যবস্থায় যুক্ত করা। সেইসাথে কাঁচা ও পাকা কাঁঠালের প্রক্রিয়াজাত পণ্য তৈরী করে তা দেশীয় ও দেশের বাইরের বাজারে সরবরাহ করার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহন করা।

দেশের জাতীয় ফল কাঁঠালকে ঘিরে আমাদের যে সনাতনী খাদ্য ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে তা থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব দেশের উৎপাদিত কাঁঠালের ব্যাপক অপচয় রোধের পাশাপাশি এর প্রক্রিয়াজাত বিকল্প খাদ্যপণ্য দেশীয় খাদ্য তালিকায় যুক্ত করা এবং বিদেশের বাজারে সরবরাহ করার সুযোগ তৈরীর মাধ্যমে। অর্থাৎ প্রতিবছর দেশে উৎপাদিত ১৮-২০ লাখ টন কাঁঠালের বড় একটি অংশ কাঁচা অবস্থায় দেশীয় খাদ্য তালিকায় যুক্ত করা অতীব জরুরী। সেইসাথে কাঁচা কাঁঠালের বিকল্প নানা ধরনের খাদ্যপণ্য বা কাঁচা কাঁঠাল সরাসরি বিদেশে রপ্তানীর ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। যেহেতু ইতিমধ্যে বিভিন্ন দেশে কাঁচা ও পাকা উভয় কাঁঠালেরই প্রচুর চাহিদা তৈরী হয়েছে।

দেশে ব্যাপক পরিমানে উৎপাদিত কাঁচা কাঁঠালের ব্যবহার বাড়াতে পারলে এই জাতীয় ফলটি দেশের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তায় ব্যাপক ভুমিকা রাখতে সক্ষম হবে। আজকাল দেশের তরুন ছেলেমেয়েসহ শহরের বড় একটি শ্রেনী ফাস্টফুডের প্রতি আকৃষ্ট। আর ফাস্টফুডের গুরুত্বপুর্ন খাদ্যের আইটেমগুলো হচ্ছে বার্গার, রোল, শর্মা, কাটলেট, স্যান্ডউইচ, সমোসা, সিংগারা, টিক্কা, কাবাব, বারবিকিউ, ভেজিটেবল পরোটা ইত্যাদি যার মধ্যে সাধারনত মুরগী, গরুর মাংস ও সব্জি ব্যবহার করা হয়। ফাস্টফুডের এই সকল খাদ্য তৈরীতে প্রোটিনসমৃদ্ধ কাঁচা কাঁঠাল সম্পুর্ন বা আংশিকভাবে ব্যবহার করে খাদ্যের পুষ্টিমান বাড়ানোর পাশাপাশি কাঁচা কাঁঠালের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ দেশের খাদ্য ব্যবস্থায় যুক্ত হতে পারে। গ্রামাঞ্চলে কাঁচা কাঁঠাল সব্জি বা তরকারী হিসেবে কদাচিৎ ব্যবহার করার প্রচলন অনেক আগে থেকে থাকলেও অধিকাংশ মানুষই কাঁচা কাঁঠালের পুষ্টিগুণ সর্ম্পকে মোটেই অবগত নয়। এক্ষেত্রে, মানুষের সচেতনতা বাড়াতে পারলে গ্রামাঞ্চলেও এই কাঁচা কাঁঠালের ব্যবহার বহুগুন বাড়ানো সম্ভব এবং এতে গ্রামীন মানুষের খাদ্য নিরাপত্তায় ভুমিকা রাখার পাশাপাশি পুষ্টিমান উন্নত হওয়া ও কাঁঠালের অপচয় রোধে সহায়ক হবে।

কাঁচা কাঁঠাল ভিটামিন-সি এর একটি ভাল উৎস, যখন এর বীজে পাওয়া যায় উচ্চমানের প্রোটিন, পটাশিযাম, ক্যালসিয়াম ও আয়রণ। যেহেতু কাঁচা কাঁঠালে রয়েছে প্রচুর প্রোটিন তাই কাঁঠালের মাংস বা ভেগান মিট হিসেবে রপ্তানী করার প্রচুর সুযোগ রয়েছে। কাঁঠালের স্বাস্থ্যগত উপকারীতা যেমন কোলেস্টেরোলের মাত্রা নিয়ন্ত্রন, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রন, হ্নদরোগ প্রতিরোধ, ক্যান্সারের ঝুকি হ্রাস এর বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি ও দ্রুত নগরায়ন, রেস্টুরেন্ট চেইন এবং হোটেল থেকে কাঁঠালের চাহিদা বাড়ায় এর বাজার সম্প্রসারনের সুযোগ তৈরী হচ্ছে। কাঁঠাল থেকে রস, কাঁঠালের বিরিয়ানী, বীজের বেকিং ময়দার হালুয়া, ঔষধের উপাদান পাওয়া যায়।

কাঁঠালের ভিতরের কান্ড দিয়েও কাটলেট তৈরী করা যায়। পাকা কাঁঠালের রস দিয়ে দুধভাত খাওয়া, কাঁঠাল দিয়ে মুড়ি খাওয়া, কাঁঠালের গুড়, কাঁঠালের মচির ভর্তা যা টকযুক্ত ও ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ, কাঁঠালের হলুদ কোয়া যা ভিটামিন-এ সমৃদ্ধ। অর্থাৎ কাঁঠালকে নিয়ে তৈরী হয়েছে নুতন এক অর্থনৈতিক সম্ভাবনা। পাকা কাঁঠালের প্রক্রিয়াজাত শিল্প গড়ে উঠলে কাঁঠালের চিপস, কৌটাজাত রসালো ফল, জুস ও অন্যান্য পানীয় উৎপাদন ও বাজারজাতকরনের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা আনা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। এ জন্য এখন কাঁঠালের বানিজ্যিক বিপণন কৌশল বা পরিকল্পনা করা প্রয়োজন।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা তার ’এক দেশ এক অগ্রাধিকার পণ্য বা ওসিওপি’ প্রকল্পের আওতায় এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের একটি বিশেষ কৃষিপণ্য হিসেবে কাঁঠালের উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। ১৯৭৯ সালে জাপানের ওইতা প্রিফিকচারে ’এক গ্রাম এক পণ্য’ কর্মসুচী শুরু হয়েছিল যার সুত্র ধরেই ২০২১ সালে ওসিওপি কার্যক্রম শুরু হয়। কাঁঠাল একটি রপ্তানী পণ্যে পরিনত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে যেটি দেশের নুতন অর্থনৈতিক সুযোগ তথা গেম চেঞ্জার হিসেবে কাজ করতে পারে। সেইসাথে জনবহুল বাংলাদেশের পরিবর্তিত খাদ্যাভাসে টেকসই অবদান রাখতে পারে। কারন বিশ্বব্যাপী কাঁঠালের একটি শক্তিশালী ও ক্রমবর্ধমান চাহিদা রয়েছে এবং এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারলে জাতীয় ফল হবে দেশের অর্থনীতির চাকা ঘুরানোর একটি উপযুক্ত নিয়ামক। যেহেতু কাঁঠাল গ্রীস্মমন্ডলীয় এলাকার একটি গুরুত্বপুর্ন ফল যা ইউরোপ, আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে জন্মে না। ফলে এর বিভিন্ন ধরনের ঔষধিগুণ, প্রচুর প্রোটিন, ভিটামিন ও খনিজের উৎস সেইসাথে এটির চাষে কোন রাসয়নিক প্রয়োজন না হওয়ায় এই সমস্ত দেশে প্রচুর চাহিদা রয়েছে।

ভারত তার বেশিরভাগ কাঁচা কাঁঠাল যুক্তরাজ্য, আমেরিকা, কানাডা, নিউজিল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাতে রপ্তানী করে এবং বিশ্বে কাঁচা কাঁঠালের বৃহত্তম রপ্তানীকারক। বিশ্বে কাঁচা কাঁঠাল রপ্তানীতে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ভিয়েতনাম। থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়া ৪.১৭ বিলিয়ন ডলারের লাল মাংসের বিকল্প কাঁচা কাঁঠালের প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের বাজার দখল করেছে এবং ২০২৫ সালের মধ্যে এর বাজার ৭.৫৪ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে বলে ধারনা করা হচ্ছে। কাজেই বিশ্বের দ্বিতীয় কাঁঠাল উৎপাদনকারী বাংলাদেশ এখানে একটি বড় বাজার দখল করতে পারে।

দেশের রপ্তানীর তালিকায় ইতিমধ্যে যুক্ত হয়েছে পাকা কাঁঠাল ও কাঁঠালের প্রক্রিয়াজাত পণ্য। বাংলাদেশ কৃষিভিত্তিক পণ্য উৎপাদনকারী ও বণিক সমিতির (বিএপিপিএমএ) অধীনে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান কাঁঠাল থেকে তৈরী অসমোটিক ডিহাইড্রেটেড খাবার এবং কাঁঠালের বীজের পাউডার ইউরোপীয় ইউনিয়নের ফুড চেইনে রপ্তানী করেছে। প্রধানমন্ত্রীর এ টু আই প্রকল্পের মাধ্যমে জাতীয় ফলের ভেল্যূ সংযোজনের জন্য কাঁচা কাঁঠাল থেকে মাংসের বিকল্প চিপস প্রক্রিয়াকরণে বেসরকারী খাতকে জড়িত করার পদক্ষেপ নিয়েছে। বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাস্ট্র, কানাডা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলিতে লাল মাংসের বিকল্প হিসেবে সিদ্ধ ও প্রক্রিয়াজাত কাঁচা কাঁঠালের খাবার জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

দেশের মোট ফল উৎপাদনের ২৫ শতাংশই কাঁঠাল এবং ইতিমধ্যে ফলটির কাঁচা প্রক্রিয়াজাত পণ্য রপ্তানী শুরু হয়েছে। বিশ্বের বৃহত্তম জনবহুল দেশ চীনেও কাঁঠালের ক্রমবর্ধমান বাজার দখল করার বিরাট সম্ভাবনা রয়েছে। চীনের বাজারে ইতিমধ্যে থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামের কাঁঠালের আধিপত্য রয়েছে। আমরা কাঁচা কাঁঠাল এবং এর প্রক্রিয়াজাত পণ্য উভয়ই চীনে রপ্তানী করতে পারি। বাংলাদেশে বর্তমানে যে কাঁঠাল উৎপাদিত হচ্ছে তা বীজ থেকে গাছ হওয়ায় প্রতিটি গাছের জেনেটিক বৈশিষ্ট্য ভিন্ন।

দেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা এবং বিদেশের বাজারের চাহিদাকে বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট (বারি) সম্প্রতি মোট ৬টি কাঁঠালের জাত আবিস্কার করেছে যেগুলো গ্রাফটিং পদ্বতিতে চারা করা যায় বিধায় এর থেকে উৎপাদিত গাছ নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যের হয়। এর মধ্যে বারি কাঁঠাল-৬ আঠামুক্ত, বছরে ২ বার ফলন দেয় এবং দেড় বছর বয়স থেকেই ফলন পাওয়া যায়। দেশে ইতিমধ্যে ভিয়েতনামের কিছু কাঁঠালের জাত আনা হয়েছে যেগুলো দেড় বছরের মধ্যে ফল দিয়ে থাকে। এই ফলগুলোতে ল্যাটেক্স বা আঠা নেই। সেইসাথে সারাবছরব্যাপী ফলন পাওয়া যায়। এর মধ্যে বিভিন্ন রং এর কাঁঠাল রয়েছে যেমন হলুদ, লাল ও পিংক যা দেখতে অত্যন্ত আকর্ষনীয় ও সুস্বাদু। ইতিমধ্যে এই সমস্ত কাঁঠালের বাগান সৃজন শুরু হয়েছে যার উৎপাদিত কাঁঠাল হবে ৪-৬ কেজি ওজনের যা বিদেশের চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করতে ভুমিকা রাখবে।

অত্যন্ত আশাব্যাঞ্জক এবং বাস্তব সফলতা এই যে, পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) তাদের একটি প্রকল্পের মাধ্যমে আইসল্যান্ডের একটি সুপারস্টোরে ৪ লাখ পিস কাঁঠালের বার্গার সরবরাহ করেছে এবং পিকেএসএফ এর এই কর্মসুচিটি অব্যাহত আছে। বিএআরসি (ইঅজঈ), পিকেএসএফ এর তৈরী কাঁঠালের বার্গারের ফুড ভেল্যু পরীক্ষা করে যা পেয়েছে তাতে কাচা কাঁঠালের তৈরী বার্গারের প্রতি ১০০ গ্রাম কাঁঠালের প্যাটিতে ৯.৭৮ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ১০.৮৭ গ্রাম প্রোটিন, ৮.৪৭ গ্রাম চর্বি, ১৯.৩২ গ্রাম ডায়েটারি ফাইবার এবং ১৫৯ কিলোক্যালরি শক্তি থাকে।

কাঁঠালের প্যাটি স্বাদ, গন্ধ ও রসালোতার দিক থেকে মাংসের সাথে তুলনীয়। নিরামিষ খাদ্যের জন্য বিশ্বব্যাপী চাহিদা বাড়ছে এবং ভবিষ্যতে এই খাতে উল্লেখযোগ্য রপ্তানীর সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতিবছর দেশ থেকে বিভিন্ন দেশে প্রায় ১০০০ টন পাকা কাঁঠাল রপ্তানী হচ্ছে। দেশের মাটিতে উৎপাদিত জাতীয় ফল কাঁঠালের বৈচিত্র্যময় ব্যবহার বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তায় সারাবছর জুড়ে ব্যাপক ভুমিকা রাখতে সক্ষম। সেইসাথে কাঁচা ও পাকা উভয় ধরনের কাঁঠালের সরাসরি এবং প্রক্রিয়াজাত কাঁঠাল পণ্য বিদেশে রপ্তানীর উদ্যোগ নেয়া জরুরী যার মাধ্যমে দেশের রপ্তানী বানিজ্যে নুতন দিগন্ত উন্মোচিত হতে পারে।

দেশের সম্ভাবনাময় এই জাতীয় ফলকে নিয়ে নীতি নির্ধারনী পর্যায়ে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহন করে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশীপের মাধ্যমে দেশের আভ্যন্তরীন খাদ্য ব্যবস্থায় কাঁঠালের সর্ব্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করার পাশাপাশি দেশের বাইরে কাঁচা ও পাকা কাঁঠাল এবং কাঁঠালের প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য রপ্তানীর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহনের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করার সুযোগ তৈরী করা এখন সময়ের দাবি।
লেখক-এগ্রোনমিস্ট ও কনসালট্যান্ট
গেইন বাংলাদেশ