ইসলামিক ডেস্ক: হালাল উপায়ে ব্যবসা পরিচালনা একটি ইবাদত যার মাধ্যমে সওয়াব অর্জন করা যায়। তবে ব্যবসা করতে হবে সততার সঙ্গে। অসৎ পন্থায় ব্যবসা করা নিষেধ। অসৎ পদ্ধতিতে ব্যবসা করা হারাম। রাসুল (সা.) বলেন, ‘সৎ ও আমানতদার ব্যবসায়ী কিয়ামতের দিন নবী, সত্যবাদি ও শহিদদের সঙ্গে থাকবে।’ আর অসৎ ব্যবসায়ীর অবস্থান হবে ঘৃণিত। আফসোসের বিষয় হলো আমাদের সমাজে বর্তমানে সারাদেশে শহর থেকে শুরু করে গ্রামে পর্যন্ত এক শ্রেণির অপরাধী চক্র গড়ে উঠেছে। তারা খাদ্য মজুদ করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে। ইসলাম খাদ্যসামগ্রী ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি আটকে রেখে কৃত্রিম সঙ্কট তৈরির মাধ্যমে অধিক মুনাফা অর্জনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।
দুনিয়া ও আখিরাতে মজুদদারির ভয়াবহ শাস্তির কথা পবিত্র কুরআন মাজিদে বর্ণনা করা হয়েছে। মজুদদারি সম্পর্কে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন- ‘যারা সোনা-রুপা (ধন-সম্পদ) জমা করে এবং আল্লাহর রাস্তায় খরচ করে না তাদের জন্য আপনি যন্ত্রণাদায়ক আজাবের সংবাদ দিন। সেদিন এসব ধন-সম্পদ আগুনে গরম করা হবে। অতঃপর তা দিয়ে তাদের কপাল, পাঁজর আর পিঠে দাগ দেয়া হবে। (বলা হবে), তোমরা যা কিছু নিজেদের জন্য জমা করে রেখেছিলে এগুলো তো সে সব ধন-সম্পদ। সুতরাং তোমরা যা কিছু জমা করে রেখেছিলে, এখন তার স্বাদ আস্বাদন করো।’ (সূরা আত-তাওবাহ : ৩৪-৩৫)
ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত উমর রা: ব্যবসায়ীদের পণ্য মজুদকরণ সম্পর্কে ঘোষণা করেছিলেন, ‘আমাদের বাজারে কেউ যেন পণ্য মজুদ করে না রাখে। যাদের হাতে অতিরিক্ত অর্থ আছে তারা যেন বহিরাগত ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সমস্ত খাদ্যশস্য কিনে তা মজুদ করে না রাখে।
যেহেতু মজুদদারি জনসাধারণের স্বার্থের পরিপন্থী তাই ইসলামে তা নিষিদ্ধ। যে কোনো খাদ্যপণ্যের মূল্যের ঘোড়ার লাগাম টেনে ধরতে শুধু অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ভাঙলেই চলবে না, প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য দেশে উৎপাদনেরও ব্যবস্থা করতে হবে। সেই সাথে বিভিন্ন ক্ষেত্র থেকে মধ্যস্বত্বভোগীদের চিরতরে বিতাড়িত করতে হবে। তবেই নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য জনগণের নাগালের মধ্যে আনা সম্ভব।