এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম:মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, দেশীয় ও বিদেশী চক্র একত্রিত হয়ে সুপরিকল্পিতভাবে বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যা করে। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ স্বাধীন করতে চেয়েছিলেন। এটাই ছিল প্রতিপক্ষের দৃষ্টিতে অন্যায়। যেদিন বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয় সেদিন ও তার পরদিন দুটি রাষ্ট্র বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। তারা বঙ্গবন্ধুর মৃত্যু পর্যন্ত বাংলাদেশকে মেনে নেয়নি।
আজ শনিবার (২৭ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ-এর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি মিলনায়তনে শোকাবহ আগস্ট উপলক্ষ্যে বরিশাল বিভাগ অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত 'বঙ্গবন্ধু: বাংলাদেশ' শীর্ষক আলোচনা ও শোকসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এ সময় মন্ত্রী আরও বলেন, বাঙালির ইতিহাস ও ঐতিহ্য থেকে দেখা যায়, বাংলা ভাষাভাষীরা একটা সময় ঐক্যবদ্ধ অবস্থানে ছিল না। তারা বিভিন্নভাবে বিভক্ত ছিল। বঙ্গবন্ধু বাঙালিদের একটি প্লাটফর্মে আনতে চেয়েছিলেন। সেটার নামকরণ করা হয়েছিল বাঙালি জাতীয়তাবাদ। বাঙালিদের জাতীয়তা বোধে উদ্বুদ্ধ করে বাঙালি জাতীয়তাবাদ সৃষ্টির পদক্ষেপ নিয়ে সফল হয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। বাঙালিত্বকে ঘিরেই বঙ্গবন্ধু বাঙালিদের স্বাধিকার ও স্বাধীনতার মূল মন্ত্রে দীক্ষিত করে ক্রমান্বয়ে এগিয়ে চলেছিলেন। একটি জাতিসত্তাকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করে তিনি একটি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ উপহার দিয়েছিলেন।
বঙ্গবন্ধু যা দিয়েছেন তার প্রতিদান আমরা দিতে পারিনি কিন্তু বঙ্গবন্ধুর দেওয়া সবকিছু আমরা উপভোগ করছি। আজ বাংলাদেশ স্বাধীন-সার্বভৌম। আজ বাংলাদেশের নিজস্ব সত্তা, নিজস্ব পতাকা, নিজস্ব পাসপোর্ট রয়েছে- যোগ করেন মন্ত্রী।
শ ম রেজাউল করিম আরও বলেন, জাতির জনকের হত্যার বিচার পেতে জাতিকে ৩৪ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা থাকার কারণে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার করা ও কিছু খুনির ফাঁসির রায় কার্যকর করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ষড়যন্ত্রে,পরিকল্পনায় যারা জড়িত ছিল এবং যারা দায়িত্ব পালন করেনি তাদের বিচার হয়নি।
মন্ত্রী আরও বলেন, সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের রক্ষা করে জিয়াউর রহমান। ১৯৭৯ সালে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে আইনে পরিণত করে সংবিধানের তফসিলভুক্ত করেছে জিয়াউর রহমান। তার সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতায় বঙ্গবন্ধুর খুনিরা দেশে ও দেশের বাইরে পুনর্বাসিত হয়।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু একটি বিশ্বাস, একটি দর্শন। বঙ্গবন্ধু একটি সত্তা। বঙ্গবন্ধু একটি অজেয় পাথেয়। বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথ ধরে শুধু বাঙালিরা নয় বিশ্বের নির্যাতিত সব মানুষ তার মুক্তির পথ খুঁজে পেতে পারে।
বরিশাল বিভাগ অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও সিনিয়র সচিব (পিআরএল) লোকমান হোসেন মিয়ার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু। বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব উদ্দিন আহমদ বীর বিক্রম ও বরিশাল বিভাগ অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ড. মো. মতিউর রহমান। আরও বক্তব্য প্রদান করেন আলোচনা ও শোকসভার আহ্বায়ক ইতিহাসবিদ সিরাজ উদদীন আহমেদ।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মাহবুব হোসেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মেজবাহ উদ্দিন, বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের সচিব মুঃ আঃ হামিদ জমাদ্দার এ সময় উপস্থিত ছিলেন।