এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম:ডিমের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, তবে এটি সাময়িক; এবং শিগগিরই দাম কমে আসবে। ভোজ্যতেলের উৎপাদন বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, আগামী ৩-৪ বছরের মধ্যে ভোজ্যতেলের চাহিদা শতকরা ৪০ ভাগ দেশে উৎপাদনের জন্য কৃষি মন্ত্রণালয় সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে।
আজ রবিবার সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে প্রাণিসম্পদ খাতে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বৃদ্ধিতে আমাদের অবস্থান ও করণীয় শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো: আব্দুর রাজ্জাকএসব কথা বলেন। আদর্শ প্রাণিসেবা লিমিটেড এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
প্রাণিসম্পদে অবশ্যই বীমা প্রয়োজন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে একটি গাভীর দাম ৫-১০ লাখ টাকা। সেজন্য প্রাণিসম্পদে অবশ্যই বীমা হওয়া উচিত। তবে বীমা কোম্পানির উপর দেশের মানুষের বিশ্বাস নেই। তারা গ্রাহককে ব্যাপকভাবে হয়রানি ও প্রতারণা করে। এই হয়রানি ও প্রতারণা বন্ধ করে বীমাকে গ্রাহকবান্ধব করতে হবে। বীমাতে মানুষের আস্থা বৃদ্ধি করতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, প্রকৃত কৃষককে আরও সহজ শর্তে জামানাত ছাড়াই ঋণ দেয়া যায়। সরকার কৃষিখাতে ৪% স্বল্প সুদে কৃষকদেরকে ঋণ দিচ্ছে। কিন্তু এ ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে বিদ্যমান কঠিন শর্ত অনেক সময়ই কৃষক পূরণ করতে পারে না। সেজন্য ঋণ দেয়ার পদ্ধতি আরও সহজ করতে হবে। প্রকৃত কৃষককে জামানাত ছাড়াই ঋণ দেয়া যায়।
সেমিনারে কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইসমাইল হোসেন, কৃষি ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আব্দুল্লাহ হারুন পাশা, কৃষিবিদ আওলাদ হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংককিং ও বীমা বিভাগের অধ্যাপক হাসিনা শেখ, ব্যাংক এশিয়ার সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরফান আলী, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কায়সার হামিদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
আলোচকগণ প্রাণিসম্পদখাতে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি, ঋণ ও বিনিয়োগের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তারা বলেন, কৃষিঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে ব্যাংকারদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন দরকার। এছাড়া, গ্রাম পর্যায়ে এখনও বেশিরভাগ ব্যাংক শাখা স্থাপন করে নি। অন্যদিকে, ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানসমূহ (এমএফআই) ও এনজিওগুলো বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে কম সুদে ঋণ নিয়ে গ্রাম পর্যায়ে ২০-২৫% চড়া সুদে ঋণ বিতরণ করে থাকে।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইউনিডোর ন্যাশনাল প্রোজেক্ট কোঅর্ডিনেটর ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক আইনুল হক। প্রবন্ধে জানান হয়, ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রাণিসম্পদখাতে ঋণ বিতরণের পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা,যা মোট কৃষিঋণের ১৪%। প্রাণিসম্পদখাতে আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে মূল বাধা হলো ঋণ প্রক্রিয়ায় পদ্ধতিগত জটিলতা, জামানাতজনিত জটিলতা, প্রাইভেট ব্যাংকগুলোর অনীহা, মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য, প্রাণিসম্পদের মৃত্যুঝুঁকি, বীমার প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা না থাকা প্রভৃতি।
প্রবন্ধে আরও বলা হয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদখাতে বিগত ১৩ বছরে অভাবনীয় সাফল্য অর্জিত হয়েছে। তারপরও প্রাণি প্রতি গড় মাংস ও দুধ উৎপাদনে উন্নত দেশের তুলনায় এখনও বাংলাদেশ পিছিয়ে। এছাড়া, প্রতিবছর প্রায় এক লাখ টনেরও বেশি গুড়াদুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য আমদানি করতে হয়, যাতে খরচ হয় বছরে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা।