নিজস্ব প্রতিবেদক:পরিবেশের ছাড়পত্র পেতে ডেয়রি খামারীদের কোন সমস্যা হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী জনাব মোঃ শাহাব উদ্দিন এমপি। এলক্ষে পরিবেশ মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে। বক্তব্য প্রদান কালে মঞ্চ থেকেই তিনি পরিবেশ অধিদপ্তরকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করেন যাতে ডেয়রি খামারীরা পরিবেশের ছাড়পত্র পেতে কোনরকম হয়রানির স্বীকার না হন।
শনিবার (৩ ডিসেম্বর) মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলায় আন্তর্জাতিক খামারি উৎসব ২০২২ এ যোগ দিয়ে বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী এসব কথা বলেন। গো-খাদ্য যাতে খামারীদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসা যায় সেই লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার। এ লক্ষ্যের প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় যথাযথ পদক্ষেপ নিবে বলে আশা করেন তিনি। এই সমস্যা বেশিদিন থাকবে না বলে জানান তিনি।
আন্তর্জাতিক এই ডেইরি উৎসবে ভিডিও বার্তার মাধ্যমে শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন প্রাণীসম্পদ মন্ত্রী জনাব শ ম রেজাউল করিম এমপি এবং ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জনাব জাহিদ আহসান রাসেল এমপি। উৎসবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব ডঃ নাহিদ রশিদ প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মঞ্জুর মোঃ শাহজাদা বক্তব্য রাখেন।
মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার গ্রামীণ পরিবেশে চমৎকার রিসোর্ট ঢালী আম্বারস নিবাসটি দিনব্যাপি মেতে উঠেছিল দেশ-বিদেশের প্রায় ৫ হাজার ডেইরি খামারির অংশগ্রহণে। ডেইরী শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় নানা উপকরণ, আদর্শ মডেল উপস্থাপন, গ্রামীণ পরিবেশে লোকজ খেলা আর দেশীয় ঐতিহ্যের গান ও নাচ খামারীদেরকে অনেকদিন পর একটি নির্মল বিনোদন প্রদান করে।
বিশাল আকার সুইমিং পুল আর হেলিকপ্টার রাইড ছিল খামারীদের জন্য। আমেরিকা, কানাডা, ভেনেজুয়েলা, নেদারল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, ভারত, পাকিস্তানসহ সাতটি দেশের বিদেশি খামারিরার এখানে অংশ গ্রহন করেন এবং তারা তাদের খামারের অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন। খামারীরা জানান বাংলাদেশের ডেইরি শিল্প যে পর্যায়ে যাওয়ার কথা এখনো সে পর্যায়ে যায় নাই সে ক্ষেত্রে বেশি-বিদেশি খামারীদের অভিজ্ঞতা এবং খামারের জ্ঞানার্জনের মধ্য দিয়ে এই উৎসবটি দেশের সকল খামারির জন্য ব্যাপক সুফল বয়ে আনবে।
তৃণমূল ফার্ম থেকে শহরকেন্দ্রিক ফার্ম ছাড়াও প্রাণিসম্পদের সাথে জড়িত বিভিন্ন কোম্পানির পণ্য উপকরণ যন্ত্রপাতি সম্পর্কেও তারা অবগত হন। অংশগ্রহণকারী একাধিক খামারির সাথে কথা বলে জানা যায় তারা মনে করেন এ ধরনের আয়োজন প্রতিবছর একবার করে হলেও হওয়া প্রয়োজন এতে খামারিদের মধ্যে একতাবদ্ধ হয়ে থাকার সুযোগ মিলে।
বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মাস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইমরান হোসেন বলেন তাদের মূল উদ্দেশ্য সারা বাংলাদেশের খামারিদেরকে এক ছাতার নীচে নিয়ে আসা। তিনি এগ্রিলাইফকে বলেন সারা বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা থেকে খামারীরা এখানে অংশগ্রহণ করেছেন। এই উৎসবের মাধ্যমে সারা বাংলাদেশের খামারীদের মধ্যে একটি অটুট মেলবন্ধন তৈরী হয়েছে। বারের উৎসবে আরও ব্যতিক্রম ছিল তাদের এই আয়োজনে বিদেশি খামারি বন্ধুদের উপস্থিতি বলেন ইমরান হোসেন।
ডেইরি শিল্প সংশ্লিস্টরা বলেন, এখানে সবচেয়ে উপকৃত হয়েছে আমাদের দেশের প্রান্তিক পর্যায়ের খামারীরা কারণ তারা উৎপাদন থেকে বিপণন সকল পর্যায়ে একে অন্যের সাথে অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন। আয়োজকরা মনে করেন এখান থেকে প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো কাজে লাগিয়ে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় দেশে ডেইরি শিল্প আগামীতে প্রাণিসম্পদ খাতের অন্যতম একটি আর্থিক খ্যাত হিসেবে আবির্ভূত হবে।