বিশেষ প্রতিবেদক:বৃহত্তর খুলনা অঞ্চলে ডেইরি খামারিদের ব্যাপক সাড়ার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হলো প্রজেনী শো-২০২২। এসিআই এনিমেল জেনেটিক্স-এর এই আয়োজনে খুলনা-সাতক্ষীরা-বাগেরহাট এবং তৎসংলগ্ন প্রত্যন্ত এলাকার প্রায় এক হাজার দুগ্ধ এবং মাংস উৎপাদনকারী খামারিরা অংশগ্রহণ করেন। দিনব্যাপি খামারীদের উৎসাহ ও অংশগ্রহণ ছিল লক্ষণীয়।
বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার ইন্সটিটিউট অব লাইভস্টক সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি (ILST))-এর অডিটরিয়ামে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খুলনা বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. অরুণ কান্তি মন্ডল। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি(ILST))-এর অধ্যক্ষ ডাঃ নুরুল্লাহ মোঃ আহসান, খুলনা জেলা কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র-এর উপ-পরিচালক ডা. স্বপন কুমার রায়, ডুমুরিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কৃষিবিদ আশরাফুল কবির সহ প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের স্থানীয় পর্যায়ের সায়েন্টিফিক অফিসারবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বিশেষজ্ঞ হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন এসিআই এনিমেল জেনেটিক্সের এডভাইজার ডা. হীরেশ রঞ্জন ভৌমিক, এসিআই এনিমেল হেলথ-এর চীফ টেকনিক্যাল এডভাইজার ডা. এম এ ছালেক। এছাড়াও এসিআই এনিমেল জেনেটিক্সের বিজনেস ডিরেক্টর মোজাফফর উদ্দিন আহমেদ তাদের কার্যক্রমের সার্বিক দিগুলি বিশেষভাবে তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ডেইরি শিল্পে এখন তরুণ প্রজন্মের বিচরণ বেড়েছে। তারা সবসময় উন্নত এবং টেকসই প্রযুক্তি ব্যবহার করতে চায়। নতুনদের অধিকাংশই তরুণ তারা চাকুরীর পিছনে না ঘুরে তারা ডেইরি খামার করে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করছে। এখন তাদের প্রয়োজন টেকসই প্রযুক্তি ও উন্নত জাতের উপস্থাপন। ডেইরি খামারীদের মাঝে এসিআই অ্যানিমেল জেনেটিক্স-সেলক্ষে কাজ করে যাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা আরো বলেন, প্রাণিসম্পদ সেক্টরে গত কয়েক দশকে ব্যাপক উন্নয়ন ঘটেছে ডেইরি শিল্প তার থেকে পিছিয়ে নেই। বিগত সময়ের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় প্রতিটি গাভীর দৈনিক গড় দুধ উৎপাদন ছিল তিন লিটার যেখানে এখন দৈনিক পাঁচ থেকে ছয় লিটার গড়ে দুধ পাওয়া যাচ্ছে। এখন প্রযুক্তিগত উন্নয়নের ঘটালেই দুধ ও মাংসের উৎপাদন বৃদ্ধি সম্ভব বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
এ প্রসঙ্গে এসিআই এনিমেল জেনেটিক্সের বিজনেস ডিরেক্টর মোজাফফর উদ্দিন আহমেদ এগ্রিলাইফকে বলেন, এই প্রজেনী শো তে উক্ত এলাকার বাছাইকৃত ৫০টি বাছুর প্রদর্শন করা হয়। যার মধ্যে ৪০টি বাছুর ছিল ফ্রিজিয়ান এবং ১০ টি ছিল শাহীওয়াল জাতের। খামারীরা যাতে সঠিক টেকনোলজি ব্যবহার করে ডেইরি খামারের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করতে পারেন বিশেষ করে জাত উন্নয়নের মাধ্যমে দুধ ও মাংসের উৎপাদন বৃদ্ধি ছিল এই প্রজেনী শো-এর মূল উদ্দেশ্য।
মোজাফফর উদ্দিন আরো বলেন, বর্তমান সময়ে খামারিদের এমন জাত ব্যবহার করা দরকার যাতে দুধ এবং মাংসের উৎপাদন বৃদ্ধি পায় এবং উৎপাদন বৃদ্ধি পেলে স্বাভাবিকভাবে এসব পণ্যের মূল্য ক্রয় ক্ষমতার মাধ্যমে মধ্যে থাকবে। ফলে সাধারণ ভোক্তাদের মধ্যে দুধ ও মাংসের চাহিদা বৃদ্ধি পাবে। খামারিরাও দ্রুত বাজারজাত করে লাভের মুখ দেখতে পারবে। সর্বোপরি প্রান্তিক পর্যায়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে প্রান্তিক পর্যায়ে ব্যাপক সংখ্যক লোকের কর্মসংস্থান হবে যা সরকারের পাশাপাশি এসিআই-এর অন্যতম লক্ষ ।
দেশে বর্তমানে দৈনিক ২০ লিটার দুধ উৎপাদনক্ষম গাভীর সংখ্যা বিশ লাখের উপর আর ১০ লিটার দুধ উৎপাদন ক্ষম গাভীর সংখ্যা ১৫ থেকে ১৬ লাখের মধ্যে। নতুন প্রজন্সের ডেইরি উদ্যোক্তাদের দুধ ও মাংস উৎপাদনের মাধ্যমে তাদের মুখে হাসি ফোটানোই এসিআই এনিমেল জেনেটিক্সের মূল লক্ষ্য বলে জানান আয়োজকরা।