এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম:দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিয়ে এক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা জ্বালানি সংকট মোকাবেলায় এ খাতে দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরে বিকল্প জ্বালানি উৎসের অন্বেষণ এবং এর সম্ভাবনার ওপর জোর দিয়েছেন।
আজ শনিবার (১৩ আগস্ট) ঢাকার ইসিবি চত্বরে, নতুন সংবাদমাধ্যম-Press Xpress এর আয়োজনে 'জ্বালানি নিরাপত্তাঃ বর্তমান অবস্থা এবং এগিয়ে যাওয়ার পথ' শীর্ষক আলোচনায় ব্যয়বহুল জ্বালানি তেলের উপর নির্ভরতা কমানোর লক্ষ্যে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এল এন জি) ব্যবহারে জোর দেন বক্তারা।
এসময় পরিবেশবান্ধব সবুজ জ্বালানির ব্যবহার বাড়ানোর এবং বৈদ্যুতিক যানবাহনের উপর আরও বেশি মনোযোগ দেওয়ার আহ্বান জানান তারা। আলোচনায় মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষায় নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও জ্বালানি দক্ষতা-ভিত্তিক পাঠ্যক্রম অন্তর্ভুক্ত করা এবং প্রাতিষ্ঠানিক ও মানবসম্পদ সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্যও সুপারিশ করা হয়েছে।
পরিচালক, সেন্টার ফর এনার্জি রিসার্চ, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শাহরিয়ার আহমেদ চৌধুরী দেশের 'জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বর্তমান অবস্থা ও অগ্রগতির পথ' সম্পর্কিত মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, "বিশ্বব্যাপী জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করার পূর্বে পরিবেশ সম্পর্কে পুনর্বিবেচনা করা উচিত কারন জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বিপুল কার্বন নিঃসরণ ঘটায়। এটি পরিবেশের ভারসম্যের জন্য হুমকি।" তার মতে, "অর্থনৈতিক অঞ্চল (ইজেড) এবং রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড) সহ নতুন শিল্প ও বাণিজ্যিক বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য নেট-মিটারিং বাধ্যতামূলক করা উচিত।"
ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষক শেখ মোহাম্মদ ফয়জুল আজিম বলেন ‘এনার্জি ক্রাইসিস: কোর ইস্যুস’ শীর্ষক আরেকটি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, "সরকার একটি সমন্বিত জ্বালানি-বিদ্যুৎ খাতের মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন করছে, যা আগামী নভেম্বরের মধ্যে প্রস্তুত হতে পারে।" "পূর্বে আমরা দেখেছি যে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের জন্য আলাদা মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করা হয়েছে কিন্তু উভয়ের মধ্যে সমন্বয় ছিল না। আমরা আশা করি নতুন পদক্ষেপটি জ্বালানি-নিরাপত্তা এবং একই সাথে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করবে," বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বাংলাদেশ এলপিজি অটোগ্যাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সিরাজুল মাওলা বলেন, "সবুজ জ্বালানি পৃথিবীতে কোনো প্রভাব ছাড়াই টেকসই পরিবেশ বজায় রাখতে সাহায্য করে।" তিনি আরও বলেন, "অটো গ্যাস হল এলপিজির সাধারণ নাম যখন এটি যানবাহনের অভ্যন্তরীণ জ্বলন-ইঞ্জিনগুলিতে জ্বালানী হিসাবে ব্যবহৃত হয়। বাংলাদেশে এলপিজি চালিত পরিবহনের সংখ্যা খুবই কম। টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যের দিকে অগ্রযাত্রার অংশ হিসেবে আমাদের সবুজ জ্বালানির কথা ভাবা উচিত।” উল্লেখ্য, অটোগ্যাসে প্রোপেন এবং বিউটেনের মিশ্রণ রয়েছে যা পেট্রোলের তুলনায় প্রায় ১৫ শতাংশ কম কার্বন নিষ্কাশন করে, ফলে এটি সবুজ জ্বালানি হিসেবে পরিচিত।
এছাড়াও, অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন সুপার সেভার এনার্জির সিইও রাজ্জাক হোসেন রাজু। প্রেস এক্সপ্রেসের যুগ্ম-সম্পাদক নাসির উদ্দিন অধিবেশন পরিচালনা করেন। বৈঠকে সিনিয়র সাংবাদিক, জ্বালানি খাতের অংশীদার এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা যোগ দেন।