কাজী কামাল হোসেন, নওগাঁ:নওগাঁর সাপাহারে নির্ধারিতের চেয়ে অতিরিক্ত মূল্যে বিক্রি হচ্ছে সার। অভিযোগ উঠেছে, সরকারি নির্দেশনাকে তোয়াক্কা না করে বিএডিসি-বিসিআইসির ডিলাররা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অতিরিক্ত দামে সার বিক্রি করছেন। উপজেলার খুদারামবাটি মহিলিপুর গ্রামের সাইদুল ইসলামের ছেলে সোবহান আলী এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগের অনুলিপি তিনি নওগাঁ জেলা প্রশাসক, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এবং উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বরাবর দাখিল করেছেন।
সোবহান আলী বলেন, ‘সুফলা ট্রেডার্সের মালিক শ্রী মৃনাল সাহা কাছ থেকে এ বছর ধান চাষের জন্য প্রতি বস্তা ডিএপি ১৪০০ টাকায় কিনেছি। এছাড়া এক বস্তা টিএসপি কিনেছি ১৭০০ টাকায়। সার ক্রয়ের রশিদ চাইলেও দেয়া হয়নি। আবার রশিদ দিলেও নির্ধারিত মূল্য উল্লেখ থাকে, অতিরিক্ত টাকা লেখা হয় না।’
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, ৮০০ টাকা মূল্যের ডাই অ্যামোনিয়াম ফসফেট (ডিএপি) ৯০০-১৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ১১০০ টাকার ট্রিপল সুপার ফসফেট বা টিএসপি বিক্রি হচ্ছে ১২০০-১৭০০ টাকায়। এতে কৃষককে বস্তা প্রতি অতিরিক্ত গুনতে হচ্ছে ১০০-৫০০ টাকা।
সাপাহারের একাধিক কৃষক জানান, বিএডিসি ও বিসিআইসির অনুমোদিত উপজেলার প্রতিটি সার দোকানে মূল্য তালিকা থাকার পরও নির্ধারিত দামে মিলছে না সার। আবার অতিরিক্তি দামে সার ক্রয়ের পর রশিদ চাইলেও দেয়া হয় না। রশিদ চাইলে সার দিতে অপারগতা জানান ডিলাররা।
তাদের দাবী, সরকার সারের দাম কমালেও কৃষকের উপকার হচ্ছে না। কেনার সময় ডিলাররা দাম অনেক বেশি নিচ্ছে। ১৪০০ টাকার নিচে ডিএপি ও ১৭০০ টাকার নিচে টিএসপি সার পাওয়া যায় না। বস্তা প্রতি ৫০০-৬০০ টাকা বেশি নিচ্ছে।
তারা আরোও বলেন, সাপাহারের সাগর ট্রেডার্স, খেয়া ট্রেডাস ও গোলাম রাব্বানী ট্রেডার্স হতে ২১বস্তা ইউরিয়া, ১০বস্তা ডিএপি ও ২৮বস্তা এমওপিসহ মোট ৫৯ বস্তা রাসায়নিক সার সাপাহার হতে পার্শ্ববর্তী পত্নীতলা উপজেলায় নিয়ে যাওয়ার সময় গত শনিবার স্থানীয় লোকজন আটক করে উপজেলা পরিষদ হলরুমে জমা দিয়েছে।
এ বিষয়ে সাপাহার প্রেসক্লাবের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম মানিক বলেন, কৃষকের কাছে অতিরিক্ত দামে সার বিক্রির বিষয়টি প্রশাসনের গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নেয়া উচিত। উপজেলায়, সার বীজ বিতরণ ও মূল্যায়ন কমিটি কেন এ কারসাজি দমন করতে পারছে না, তা বুঝে আসছে না।
কেনো অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছেন এমন প্রশ্নের বিষয়ে সুফলা ট্রেডার্সের মালিক শ্রী মৃনাল সাহা কোন উত্তর দিতে পারেননি। তিনি বলেন, দোকানে বাবুল হোসেন নামে একজন ম্যানেজার থাকে তার কাছ থেকে শুনে আপনাকে জানাতে পারবো। পরে তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি।
সাপাহার উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মুনিরুজ্জামান বলেন, দাম বেশি নেয়ার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলেও কোনো প্রমান পাওয়া যাচ্ছে না। প্রমান পেলে ডিলারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলছেন, অতিরিক্তি দামে সার বিক্রির বিষয়টি তদন্ত চলমান রয়েছে প্রমান পেলে ডিলারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।