সমসাময়িক ডেস্ক: জনকেন্দ্রিক রাজনৈতিক নেতা অবশ্যই দেশপ্রেমিক হবেন ও জনগনের সমস্যা এবং মুখের ভাষা বুঝতে পারবেন। আর গণতন্ত্রের মূল মর্মবানী হলো পারস্পরিক সহমর্মিতা, পরমতসহিঞ্চুতা, সহনশীলতা ও অসহিংষতা হলেও বিরোধী ও মতের প্রতি সম্মান প্রদর্শন। রাজনৈতিক দলগুলো নেতা/কর্মীদের মাঝে সত্যিকারের গণতান্ত্রিক চর্চা ও অনুসীলনের মাধ্যমে শান্তিপুর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করে দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখা রাজনৈতিক দলের নেতা/কর্মীর দায়িত্ব হলেও বিত্তবৈভব, প্রাচুর্য ও নিজেদের স্বার্থরক্ষা এখন অনেক বড় হয়ে গেছে।
আর এসব কারনে সাধারন মানুষের স্বার্থ ও তাদের দুঃখ দুর্দশার কথা এখন আর রাজনৈতিক দলের আলোচ্যসুচিতে আসে না। আর এর পেছনে নিয়ামক ভূমিকা রেখেছেন তথাকথিত কিছু সুবিধাভোগী রাজনৈতিক কর্মী। ফলে সমাজের একেবারে নিন্মস্তরের স্কুল কমিটি, মসজিদ কমিটি, বাজার বা ব্যবসায়ী সমিতি, পাড়া মহল্লার ক্লাব, সামাজিক সংগঠনের নির্বাচনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের সংস্কৃতির বিলুপ্তির পথে। কমিটি গঠিত হয় ওপর মহলের নির্দেশনায়। ফলশ্রুতিতে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহন ও মতামতের প্রতিফলন এখন দেখা যায় না।
সোমবার (২১ আগষ্ট) চট্টগ্রামে নগরীর কারিতাস প্রশিক্ষন কেন্দ্র মিলনায়তনে পালস বাংলাদেশ সোসাইটি ও আইএসডিই বাংলাদেশ এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত "নাগরিক" প্রকল্পের আওতায় স্কিল ডেভেলপমেন্ট ট্রেনিং অন ডেমোক্রেটিক প্র্যাকটিস শীর্ষক প্রশিক্ষন কর্মশালায় বিভিন্ন বক্তাগন উপরোক্ত মন্তব্য করেন।
ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ও আইএসডিই বাংলাদেশ'র নির্বাহী পরিচালক এস এম নাজের হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় সহায়ক ছিলেন পালস বাংলাদেশের পরিচালক আবুল বাশার। আলোচনায় অংশনেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর জেসমিনা খানম, ন্যাপ কেন্দ্রিয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিটুল দাস গুপ্ত, মহানগর মহিলা আওয়ামীলীগ নেত্রী ঝর্ণা বড়ুয়া, উত্তর জেলা মহিলা দলের সহ-সভাপতি জন্নাতুল ফেরদৌস, রাজনৈতিক কর্মী আলমগীর বাদসা, লায়ন ইব্রাহিম, মোহাম্মদ জানে আলম, মুক্তিযোদ্ধা আবম হুমায়ুন কবির, হারুন গফুর ভুইয়া, চৌধুরী কেএনএম রিয়াদ, মোতাহেরুল আলম কিরন, নাসিমা আলম, সাংবাদিক কেফায়েত উল্যাহ, সুমন বড়ুয়া, শহীদুল ইসলাম চৌধুরী, প্রকৌশলী লায়ন হাফিজুর রহমান, গোলাম কিরিয়া, শম্পা কে নাহার ও প্রশিকার বিভাগীয় সমন্বয়কারী আবদুস সাত্তার প্রমুখ।
কর্মশালায় বলা হয় রাজনীতিতে শুদ্ধ গণতান্ত্রিক চর্চা ও অনুশীলন ফিরে আনতে জনকেন্দ্রিক ও দেশ প্রেমিক নেতৃত্বের পাশাপাশি জনগনের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল না হলে সত্যিকার অর্থে সুশাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। কেন্দ্র থেকে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়ার কারনে স্থানীয় পর্যায়ে ত্যাগী নেতৃত্ব জন্ম নিচ্ছে না। যার কারনে রাজনীতিতে সহাবস্থান যেরকম নিশ্চিত হচ্ছে না। তেমনি রাজনৈতিক সিদ্ধান্তগুলি রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ন্ত্রণে থাকছে না। ফলে একটি প্রতিক্রিয়াশীল ও স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠির হাতে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত চলে যাচ্ছে। যার চুড়ান্ত পরিনাম হলো বর্তমানে ব্যবসায়ীদের রাজনীতি ও ক্ষমতায় বিপুল আধিপত্য।