মরিচের পাতা কোঁকড়ানো রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার

মো. আব্দুর রউফ: মরিচ একটি প্রধান মশলা জাতীয় ফসল। কাঁচা মরিচ সবজি ও সালাদ হিসাবে এবং বিভিন্ন ধরনের ভাজি ও তরকারীতে ব্যবহৃত হয়। শুকনা মরিচ গুড়ো করে তরকারী, বিভিন্ন ধরনের উপাদেয় ও মুখরোচক খাদ্য তৈরীতে ব্যবহৃত হয়।

মরিচ গাছের পাতা কুঁকড়িয়ে যাওয়ার কারন অতি সাধারণ। মরিচের উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার মূল কারণ হলো মরিচের পাতা কোঁকড়ানো রোগ। এটি কোন ছত্রাক বা ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণের হয়ে থাকে না। মূলত পোকা-মাকড়ের আক্রমণের কারণে মরিচের পাতা কোঁকড়ানো রোগে হয়ে থাকে। সাধারণত কয়েক ধরণের মাকড় মরিচ গাছে আক্রমণ করে। লাল মাকড়, এফিড বা জাব পোকা এবং সাদা মাছি। গাছ লাগানোর প্রায় ৭-১০ দিন পরেই এই পোকা-মাকড়ের আক্রমণ চোখে পরে। সাধারণত কয়েক ধরণের মাকড়ের আক্রমণে মরিচ গাছে মরিচের পাতা কোঁকড়ানো রোগ হয়। যেমনঃ থ্রিপস পোকা, লাল মাকড়, এফিড বা জাব পোকা এবং সাদা মাছি।

রোগের লক্ষনঃ
১. আক্রান্ত গাছের পাতা কোঁকড়িয়ে নিচের দিকে বাঁকা হবে এবং স্বাভাবিক পাতার তুলনায় পুরু হয়।
২. পাতা গুলো ছোট গুচ্ছাকৃতির হয়।
৩. ডগার কুঁশি কোঁকড়িয়ে গাছের বৃদ্ধি রোধ হয়ে যাবে ফলে গাছ খর্বাকৃতি হয়ে পড়ে।
৪. গাছে অতিরিক্ত ডালপালা জন্মায় ও ঝোপের মত হয়।
৫. ফল ধারন ক্ষমতা কমে যায় এবং ফল আকারে ছোট ও কুকড়ানো হয়।

রোগের প্রতিকারঃ
১. রোগাক্রান্ত গাছ ও আশেপাশের পোষক উদ্ভিদ তুলে ধ্বংস করতে হবে।
২. রোগাক্রান্ত চারা কোন অবস্থাতেই লাগানো যাবে না এবং যদি সম্ভব হয় চারা অবস্থায় বীজ তলা মশারীর নেট দ্বারা ঢেকে রাখতে হবে।
৪. সুস্থ গাছ থেকে পরবর্তী মৌসুমের জন্য বীজ সংগ্রহ করতে হবে।
৫. চারা অবস্থা থেকে কীটনাশক সাকসেস ২.৫% এস সি অথবা এমবেকটিন ১.৮ ইসি প্রতি লিটার পানিতে ১ মিলি ভালো করে মিশিয়ে বাহক পোকা দমনের জন্য স্প্রে করতে হবে।

প্রথমবার স্প্রে করার ৩-৫ দিন পর পুনরায় স্প্রে করতে হবে। পাতার নিচের পিঠ সহ পুরো গাছে স্প্রে করতে হবে। যাতে পাতা ও গাছ ভিজে যায়। তবে মাইট আক্রমণের পূর্বেই ইকোম্যাক (বায়ো মাইটিসাইড) ১৫ দিন পর পর স্প্রে করলে ভালো হয়।

লেখক: বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, উদ্যানতত্ত্ব বিভাগ
বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা)
ময়মনসিংহ