নাহিদ বিন রফিক (বরিশাল): বরিশালের মুলাদী উপজেলার চরপৈক্ষায় এক সম্ভাবনাময় ফসলিগ্রাম। ওখানকার কৃষকরা এখন বিভিন্ন ফসল উৎপাদনে ব্যস্ত। মাঠ পেরুলেই সয়াবিন, ভুট্টা, তরমুজ, টমেটো, আখ, সূর্যমুখী, পেঁয়াজ, লাউ, বাঁধাকপি, লালশাক, ধনিয়াসহ আরো নানান ফসলের হাতছানি। এ যেন সবুজে সমারোহ। যদিও গত বছর পর্যন্ত বেশ উৎকন্ঠায় দিন গুণতে হয়েছিল তাদের। নদী ভাঙ্গনে শেষ পর্যন্ত শস্য ঘরে তোলা সম্ভব হবে কি-না? কয়েক বছরের চলমান অবৈধ বালু উত্তোলনে এই আশঙ্কার কারণ। ইতোমধ্যে নদী গহবরে বিলীন হয়ে গেছে বেশ কিছু ফসলি জমি। এমন পরিস্থিতিতে এলাকাবাসী উপজেলা প্রশাসন এবং কৃষি অফিসের স্মরণাপন্ন হন। পরবর্তীতে প্রশাসনের গৃহীত মোবাইলকোর্ট অভিযানের মাধ্যমে বালু তোলা বন্ধ করে দেয়া হয়। তাইতো আধার কেটে কৃষকের চোখেমুখে এখন স্বস্তির ঢল নেমেছে।
সম্প্রতি এক উঠান বৈঠকে সুবিধাভোগী চাষি মো. খলিলুর রহমান জানান, তিনি প্রথমবারের মতো তরমুজ আবাদ করেছেন। এই মাঠে আগে এর চাষ হয়নি। তিনি আরো জানান, কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় এবার ৫ জন কৃষককে প্রশিক্ষণসহ তরমুজের প্রদর্শনী দেয়া হয়েছে। রফিকুল ইসলাম নামের অপর এক কৃষক জানান, কৃষি অফিস হতে বিনামূল্যে পাওয়া বীজ-সার আর প্রযুক্তিগত পরামর্শে কৃষিতে তারা বেশ সফলতা পেয়েছেন। পাশাপাশি হয়েছে আর্থিক ও সামাজিক মানউন্নয়ন ।
উপজেলা কৃষি অফিসার মো. মনিরুল ইসলাম জানান, চলতি রবি মৌসুমে এই চর এলাকায় বিভিন্ন প্রদর্শনীর মাধ্যমে প্রায় ১২ হেক্টর জমি চাষের আওতায় আনা হয়েছে। এছাড়া আরো ৩৫ জন কৃষক পেয়েছেন কৃষি প্রণোদনা। চাষের সুবিধার্থে তেলফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের আওতায় দেয়া হয় একটি পাওয়ার টিলার অপারেটেড সিডার। এবার উৎপাদিত ফসল ঘরে তুলতে পারলে কৃষকরা যথেষ্ট লাভবান হবেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নিজাম উদ্দিন জানান, নদী হতে বালু তোলা বন্ধ করাই ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা তা সক্ষম হয়েছি। এখন নদীপাড়ের কৃষিকাজে কোনো বাঁধা নেই। চাষির শ্রম আর বিফলে যাবে না। গোলায় শস্যে ভরে ওঠবে। মুখে ফুটবে কৃষকের হাসি।