কে এস রহমান শফি, সিরাজগঞ্জ:ভার্মি কম্পোস্ট সার তৈরি ও বিক্রি করে সফলতা পেয়েছে মো. মোক্তার হোসেন। তার এই সফলতা এখন পুরো সিরাজগঞ্জজুড়ে। এই খামারবাড়ি দেখতে আসছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উর্ধতন কর্মকর্তারাও।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার সয়দাবাদ ইউনিয়নের কড্ডার মোড় পোড়াবাড়ী এলাকায় নিজস্ব বাড়িতে ৬ শতক জমিতে ৭টি বেড তৈরী করে ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদন করে আসছেন। সবজি চাষি, ড্রাগন চাষি, ছাদ বাগানের মালিক ও এনজিও প্রতিনিধিরা সার ও কেঁচো ক্রয় করে থাকেন।
জানা যায়, মো. মোক্তার হোসেন,যিনি ‘টুক্কু মোক্তার’ নামে বেশি পরিচিত। এক বছর পূর্বে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর হতে প্রশিক্ষণ নিয়ে ৩টি রিং দিয়ে প্রাথমিকভাবে ভার্মি কম্পোস্ট সার ও কেঁচো উৎপাদন শুরু করেন। পরবর্তীতে ‘আধুনিক প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে রাজশাহী বিভাগের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পে’র মাধ্যমে সার ও কেঁচো উৎপাদন করেন।
উপজেলা কৃষি অফিসার মো: রোস্তম আলী ও উপ সহকারী কৃষি অফিসার এস.এম. মেহেদী হাসান-এর সহযোগিতায় কিভাবে সহজ পদ্ধতিতে, কম ব্যয়ে, কম পরিশ্রমে সার ও কেঁচো উৎপাদন করতে পারেন সে বিষয়ে ইউটিউব ও গুগলে অনেক তথ্য পেয়ে যান। গোবরের উপরে চটের ছালা দিয়েই বেড তৈরী করেন। একটি বেড তৈরী করতে প্রায় ২ হাজার টাকা খরচ হয়। প্রাথমিক কাঁচামাল হিসেবে পাশের গরুর খামার থেকে থেকে কাঁচা গোবর ১৫’শ কেজি ও ৬ কেজি কেঁচো সংগ্রহ করেন। ৬০ দিন পর বেড থেকে এক হাজার কেজি কেঁচো সার ও ১৮ কেজি কেঁচো পান। প্রতি কেজি ভার্মি কম্পোস্ট বিক্রি করেন ১৫ টাকা। এছাড়া প্রতি কেজি কেঁচো বিক্রি হয় এক হাজার টাকায়।
তিনি জানান, প্রথম বেড থেকে লাভবান হয়ে পরবর্তীতে আরও ৭টি বেড তৈরী করেন। এখন পর্যন্ত বেড হয়েছে ২০টি। বর্তমানে ৭টি বেডের মধ্যে ৩টি বেডের সার ও কেঁচো বিক্রি করেছেন। ৪টি বেডের সার ও কেঁচো অল্প কিছু দিনের মধ্যে বিক্রির জন্য উপযোগী হবে। বর্তমান মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর রাসায়নিক সারের দাম বৃদ্ধি পাওয়াতে এই সার সিরাজগঞ্জসহ দেশে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে বলে জানান তিনি ।
এদিকে ভার্মি কম্পোস্ট সার ও কেঁচো উৎপাদনে সফলতা দেখে গত ২৬ অক্টোবর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বগুড়া অঞ্চল-এর অতিরিক্ত পরিচালক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জের উপ পরিচালক বাবলু কুমার সূত্রধর, জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার আ.জ.ম. আহসান সহীদ সরকার, বঙ্গবন্ধু কৃষি পদকপ্রাপ্ত সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মো: রোস্তম আলী, অতিরিক্ত কৃষি অফিসার এ্যামিলিয়া জান্নাত, উপ সহকারী কৃষি অফিসার এস.এম. মেহেদী হাসান সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। এভাবে সার তৈরি করলে একজন খামারি খুব সহজেই লাভবান হবেন বলে মন্তব্য করেন এবং সর্বোচ্চ সার ও কেঁচোর উৎপাদন হবে বলে প্রত্যাশা করেন।