দুগ্ধজাত খামারে ব্রুসেলোসিস সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে বাকৃবিতে কর্মশালা

আবুল বাশার মিরাজ, বাকৃবি প্রতিনিধি:বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) ‘বাংলাদেশের দুগ্ধজাত খামারে ব্রুসেলোসিস সংক্রমণের গতিশীলতা এবং ঝুঁকির কারণ’ শীর্ষক  কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (০৩ জানুয়ারি) দুপুর ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভেটেরিনারি অনুষদের মেডিসিন বিভাগের সম্মেলন কক্ষে এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।

কর্মশালায় জানা যায়, সম্প্রতি প্রাণিসম্পদ ও দুগ্ধ উন্নয়ন প্রকল্পের (এলডিডিপি) অধীনে বাকৃবিতে প্রাপ্ত ১৫ টি উপ-প্রকল্পের মধ্যে অন্যতম এটি। প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরের অর্থায়নে এলডিডিপি প্রকল্পটি পরিচালিত হচ্ছে।

কর্মশালায় মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মো. আমিনুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভেটেরিনারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল আউয়াল। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আলী আকবর ভূঁইয়া এবং অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেসিট্যান্ট স্পেশালিস্ট অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান। গবেষণা উপ-প্রকল্পটির প্রধান গবেষক হিসেবে নিযুক্ত রয়েছেন বাকৃবির মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সিদ্দিকুর রহমান এবং সহযোগী গবেষক হিসেবে রয়েছেন অধ্যাপক ড. এ কে এম আনিসুর রহমান।

কর্মশালায় গবেষণা উপ-প্রকল্পটির পরিকল্পনা ও কার্যক্রম নিয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রধান গবেষক ও বাকৃবির মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সিদ্দিকুর রহমান।

প্রধান গবেষক অধ্যাপক ড. মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন,  ব্রুসেলোসিস গবাদি পশুর ব্যাকটেরিয়া জনিত একটি মারাত্মক জুনোটিক সংক্রামক রোগ। সাধারণত গরু, ছাগল, মহিষ, ভেড়া, কুকুর এই রোগে আক্রান্ত হয়। রোগটিতে আক্রান্ত গাভীর  গর্ভাবস্থায় শেষের দিকে গর্ভপাত হয়। এছাড়া গবাদি পশুতে দুধ উৎপাদন হ্রাস, জরায়ু প্রদাহ, বাচ্চার মৃত্যু , দুর্বল বাচ্চার জন্মদান ও প্রজননে অক্ষমতা প্রভৃতি উপসর্গ প্রকাশের মাধ্যমে আমাদের দেশের ডেইরি শিল্পে কোটি কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি সাধন করে থাকে। আক্রান্ত পশুর বর্জ্য, মাংস ও দুধের মাধ্যমে এ রোগ মানুষে সংক্রমিত হয় এবং বন্ধ্যাত্ব, অকাল গর্ভপাত, ওরকাইটিস, অস্থিসন্ধির প্রদাহসহ বিভিন্ন রোগ সৃষ্টি করে।
 
গবেষক আরো জানান, এই প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের বড় বড় খামারে দুগ্ধজাত গবাদি পশুতে ব্রুসেলোসিস রোগের ঝুঁকির কারণ চিহ্নিত করে সংক্রমণ গতিশীলতা নিরূপণ করা সম্ভব হবে। এছাড়া ব্রুসেলোসিস রোগের কারণগুলো এড়ানোর মাধ্যমে মানবদেহে এই রোগের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। এই রোগের সম্ভাব্য সকল ঝুঁকিপূর্ণ খামার ও অঞ্চল চিহ্নিত করা যাবে বলে আশা ব্যক্ত করেন গবেষক।