এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম: গত ০১ মার্চ রোজ বুধবার, ২০২৩ ইং আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্র যশোরে "Feed the future insect resistant eggplant partnership" শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় বিটি বেগুনের উপর কৃষক মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়। মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. কাওছার উদ্দিন আহাম্মদ এর সভাপতিত্বে উক্ত মাঠ দিবসে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল এর নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার।
এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. জাহাঙ্গির হোসেন, সাবেক পরিচালক, বারি ও বৈজ্ঞানিক বিষয়ক প্রধান, বিটি বেগুন প্রকল্প, ড. মেরিসেলিস এসিভেডো (Dr. Maricelis Acevedo), প্রকল্প পরিচালক, বিটি বেগুন প্রকল্প, ড. ভিজয় পারাঞ্জি (Vijay Paranjee), সহযোগী পরিচালক, বিটি বেগুন প্রকল্প।
অত্র অঞ্চলের প্রায় ১০০ (একশত) জন কৃষক উক্ত মাঠ দিবসে উপস্থিত ছিলেন এবং তাদের বিটি বেগুন চাষের উপর যাবতীয় করনীয়, সমস্যা, চাষাবাদ পদ্ধতি, পোকামাকড়ের দমন ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা ও মতামত নেয়া হয়।
প্রকল্প পরিচালক বলেন কীটনাশকের ব্যবহার কমানো এবং নিরাপদ সবজী উৎপাদন ও সরবরাহ করার জন্য বিটি বেগুনের চাষ করতে হবে। বিটি বেগুন হলো বিটি জিন সংযোজনের মাধ্যমে উদ্ভাবিত বেগুনের উন্নত জাত যা বেগুনের কান্ড ও ফল ছিদ্রকারী পোকা দমন করে। বর্তমান বিশ্বে অধিক ফসল উৎপাদন করার অনেক ফসলেই জৈব প্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে, সেজন্য গবেষণা হচ্ছে, প্রযুক্তি সম্প্রসারণ হচ্ছে এবং সেগুলো থেকে ফল পাওয়া শুরু হয়েছে। বক্তারা বলেন কীটনাশকের যথেচ্ছ ব্যবহারের ফলে কৃষক এবং ভোক্তা সবাই পরোক্ষভাবে কীটনাশক খাচ্ছে যা বিভিন্ন রোগব্যধি হচ্ছে। উল্লেখ্য যে, অধিক ফলন পাওয়ার জন্য কৃষকরা বেগুন ক্ষেতে প্রতিদিনই কীটনাশক প্রয়োগ করে যা তাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর, পাশাপাশি যারা খাচ্ছে তাদেরও ক্ষতি হচ্ছে। অন্যদিকে বিটি বেগুন চাষ করলে বেগুনের যে প্রধান পোকা কান্ড ও ফল ছিদ্রকারী পোকা না লাগার কারণে কীটনাশক দিতে হয় না, শুধু অন্যান্য পোকার জন্য কম পরিমাণ কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয়।
প্রধান অতিথি বলেন, আমরা খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্নতা অর্জন করেছি এবং পাশাপাশি পুষ্টি চাহিদা পূরণ করার জন্য নিরাপদ ও পুষ্টিসমৃদ্ধ সবজী উৎপাদনের উপর গুরুত্ব দিয়েছি। বাংলাদেশকে এক সময় তলাবিহীন ঝুড়ি বলা হতো, সে অবস্থা থেকে বর্তমান সরকার খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্নতা অর্জন করেছে এবং দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নিত করেছে।
মত বিনিময় সভায় কৃষকদের কোথায় বিটি বেগুনের বীজ পাওয়া যাবে এবং আগামী বছরের করনীয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। ড.হোসেন কৃষকদেরকে বলেন যে, এই প্রকল্প থেকে বিনামূল্যে বিটি বেগুনের চারা এবং বীজ দেয়া হবে এবং তা আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্র, যশোরের অফিস থেকে সংগ্রহ করতে হবে। এছাড়াও বীজ প্রাপ্তির জন্য বিএডিসি’র বীজ ডিলারদের সাথে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট এই পর্যন্ত ৪টি বিটি বেগুনের জাত (বারি বিটি বেগুন-১, বারি বিটি বেগুন-২, বারি বিটি বেগুন-৩, বারি বিটি বেগুন-৪) অবমুক্ত করেছে এবং যশোর অঞ্চলের জন্য বারি বিটি বেগুন-৪ খুবই উপযোগী।