মো.জুলফিকার আলী: বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি), সিলেট কর্তৃক আয়োজিত রাজস্বখাতের মাধ্যমে স্থাপিত "পলি হাউজের মাধ্যমে বিভিন্ন সেচ প্রযুক্তি স্থাপন ও প্রয়োগ" কাজের উদ্বোধন ও কৃষকদের সাথে মতবিনিময় সভা গোলাপগঞ্জ উপজেলার বাঘা ইউনিয়নে তুরুকবাগ স্থানে ১১ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠান শুরুতে সুধীজনদের শুভেচ্ছা জানিয়ে স্বাগত বক্তব্য রাখেন-মো. হাবিবুর রহমান, সহকারী প্রকৌশলী-তিনি জানান- উদ্বোধনকৃত এই পলি হাউজটিতে ৪টি পদ্ধতিতে সেচ দেওয়া যাবে- ডিপ, স্প্রিংকলার, ফরো ও ফগ। এখানে যে কোন সময়ে রোগবালাইমুক্ত উচ্চমূল্যে সবজি চাষসহ বীজ উৎপাদন করা যাবে। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে ভারী বৃষ্টিপাত, তাপমাত্র, কীটপ্রতঙ্গ, ভাইরাসজনিত রোগের মত প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবোলা করে উচ্চমূল্যের বীজ ও শাকসবজি, ফল ইত্যাদি উৎপাদন করা সম্ভব। এ পদ্ধতিতে পলিথিনের আচ্ছাদন থাকায় সুর্যে্যর ক্ষতিকর রশ্মি ভিতরে প্রবেশে বাঁধা পায় এবং খরা অতি বৃষ্টি, প্রাকৃতিক দূর্যোগেও ফসল অক্ষত থাকে।
উক্ত অনুষ্ঠানে মো মজিবুর রহমান,জেলা প্রশাসক, সিলেট এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-মো.মোশাররফ হোসেন,বিভাগীয় কমিশনার, সিলেট। তিনি উদ্বোধন ও কৃষকদের সাথে মতবিনিময়কালে বক্তব্যে বলেন, সিলেট অঞ্চলে পলি হাউজ স্থাপনের মাধ্যমে অসময়ে সবজীর বীজ ও চারা করা উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে এবং অসময়ে বীজ ও চারা পেয়ে স্থানীয় কৃষকেরাও উপকৃত হবেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক বৈশ্বিক খাদ্য সংকট মোকাবিলায় প্রতি ইঞ্চি জমি চাষের আওতায় এনে সিলেট অঞ্চলের কৃষির উৎপাদন বৃদ্ধি দ্বিগুন করতে হবে। নিরাপদ ফসল উৎপাদন ও পুষ্টির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এ জন্যে প্রশাসন ও কৃষি বিভাগসহ একযোগে কৃষকের ভাগ্য উন্নয়নে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।
মো. হাবিবুর রহমান, সহকারী প্রকৌশলী, বিএডিসি (সেচ) সিলেট এর সঞ্চলনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্যে রাখেন ছিলেন-কৃষিবিদ মো. মোশাররফ হোসেন খান, অতিরিক্ত পরিচালক, ডিএই, সিলেট অঞ্চল, সিলেট। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষিবিদ মোহাম্মদ খয়ের উদ্দিন মোল্লা, ডিএই, সিলেট; ড.ইব্রহিম খলিল,যুগ্ম পরিচালক (সার) বিএডিসি সিলেট; কৃষিবিদ সুপ্রিয় পাল, যুগ্ম পরিচালক (সার) বিএডিসি সিলেট; প্রকৌ: প্রনজিত কুমার দেব, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, বিএডিসি (সেচ), সিলেট; প্রকৌশলী আবু আহমেদ মাহমুদুল হাসান, নির্বাহী প্রকৌশলী, (সেচ) বিএডিসি, সিলেট; মৌসুমী মান্নান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার,গোলাপগঞ্জ; বাঘা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস ছালম।
এছাড়াও কৃষিবিদ মো. মাশরেফুল আলম, উপজেলা কৃষি অফিসার, গোলাপগঞ্জ এবং সংশ্লিষ্ট উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা; মো.নাজমূল হাসান, উপসহাকরী প্রকৌশলী,(বিরানীবাজার ও গোলাপগঞ্জ) বিএডিসি, সিলেটের কর্মকর্তা/কর্মচারীবৃন্দ ও স্থানীয় চে গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, পলি হাউজ ভূক্ত কৃষক ও এলাকার কৃষক-কৃষণীসহ প্রায় ১০০ জন উপস্থিত ছিলেন।
সিলেটের কৃষি নিয়ে একটি কথা প্রচলিত রয়েছে “সিলেটের কৃষি ভাবনা দিবানিশি” এই ভাবনার বড় অংশ জুড়ে রয়েছে সেচ ব্যবস্থা। তাই বৈশ্বিক মহামারী কাটিয়ে বর্তমান সরকার কৃষিতে বরাদ্দ অব্যাহত রেখেছে। এরই ধারবাহিকতায় এ বছর সিলেট অঞ্চলে ১১ কোটি টাকা রাজস্ব বরাদ্দ করা হয়েছে। রাজস্ব বরাদ্দের আওতায় নতুন করে ১৭ টি সেচযন্ত্র স্থাপন, ১৮৫০০ মি: পাইপ লাইন নির্মান, ১২ কি:মি খাল পুনঃখনন, ৪ টি স্কীমে স্প্রিংকলার সেচ পদ্ধতি প্রয়োগ, ০১ টি পলিহাউজ নির্মান, ৪ টি সুইসগেট পূর্নবাসন করা হয়েছে। এর মাধমে প্রায় ১০০০ হেক্টের জমি নতুন করে সেচের আওতায় এসেছে।