বিজনেস প্রতিনিধি:২৪ এপ্রিলের পর এলসিকৃত প্রাণিজ পুষ্টি উপকরণ পরীক্ষা ব্যতীরেকেই সকল বন্দর থেকে ছাড় করা যাবে। সোমবার ১৬ আগস্ট এনিমেল হেলথ কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (AHCAB)-এর সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ আফতাব আলমের নেতৃত্বে AHCAB-এর একটি শক্তিশালী প্রতিনিধি দল চট্টগ্রাম বন্দরের কাস্টমস্ কমিশনার কার্যালয়ে কমিশনার জনাব মোহাম্মদ ফায়জুর রহমান এর সাথে সাক্ষাৎ করার পর তিনি এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। এসময় বন্দরের যুগ্ম কাস্টমস্ কমিশনার জনাব মোঃ তারেক হাসান এবং সংশ্লিষ্ট উপ কাস্টমস্ কমিশনার উপস্থিত থেকে এ বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন। জনাব আফতাব আলম বিষয়টি এগ্রিলাইফকে নিশ্চিত করেছেন।
কমিশনার কার্যলয়ে সাক্ষাৎকালে যুগ্ম মহাসচিব জনাব মোঃ মোশাররফ হোসেন চৌধুরী, এক্সিকিউটিভ সদস্য জনাব সায়েম উল হক, জনাব সায়েদুল হক খান, ডা. খন্দকার মাহমুদ হোসেন এবং অফিস সচিব মোঃ কামরুল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে আফতাব আলম এগ্রিলাইফকে বলেন, গত মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) তারা চট্টগ্রাম কাস্টম কমিশনার জনাব মোহাম্মদ ফায়জুর রহমান বরাবর এ সংক্রান্ত একটি চিঠি প্রদান করেন। চিঠিতে তারা উল্লেখ করেন প্রাণিজ খাতের জন্য পশু পুষ্টি উপকরণ ও ভেটেরিনারি ও ওষুধ সামগ্রী দেশের জন্য একটি অত্যাবশ্যকীয় পণ্য। দেশীয় উৎসে এ সকল পণ্যের যোগান না থাকায় অধিকাংশ পণ্যই বিদেশ থেকে তাদেরকে আমদানি করতে হয়। ভোক্তাদের স্বল্পমূল্যে প্রাণিজ আমিষের জোগান নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে আমদানিকৃত পণ্য সামগ্রীর অনুকূলে সরকার শুল্ক রেয়াতের সুবিধা প্রদান করে আসছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক আমদানি নীতি আদেশ ২০১২-১৫ জারি করার পূর্ব পর্যন্ত প্রাণিজ খাতের উল্লেখিত পণ্য সামগ্রী আমদানি ক্ষেত্রে বন্দরে পৌঁছানোর পর কোন ধরনের টেস্ট এর প্রয়োজন হতো না।
আমদানি নীতি আদেশ ২০১২-২০১৫ মোতাবেক প্রথমবারের মতো এ সকল পণ্যের জন্য ঢালাওভাবে নাইট্রোফুরান ও এন্টিবায়োটিক টেস্টের কথা চালু করা শুরু হলে পণ্য ছাড়ে নানা রকম জটিলতা সৃষ্টি হয়। পণ্যগুলির আমদানি মূল্য বৃদ্ধি এবং খামারে পণ্যগুলি যথাসময়ে সরবরাহে বিঘ্ন ঘটায় প্রাণিজ আমিষ উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটে। এসব সমস্যাগুলি দূরীকরণে তাদের অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ হতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সহ অন্যান্য মন্ত্রণালয়ে পত্রালাপের পর এক আদেশে পশু পুষ্টি উপকরণ ও ভেটেরিনারি পণ্যের টেস্টের প্রথা রহিত করে এসআরও জারি করে। তবে পরবর্তীতে পুনরায় আমদানি নীতি আদেশ ২০১৫-২০১৮ এর মাধ্যমে ক্লোরামফেনিকল, নাইট্রোফুরান ও এন্টিবায়োটিক টেষ্টের প্রথাটি পু:রায় চালু করা হলে আবার বিপাকে পড়ে যায় আমদানিকারকরা । তাৎক্ষণিকভাবে এই টেস্টের প্রথা রহিত করার জন্য তারা আবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরে পুনরায় যোগাযোগ করেন। এর ফলে কয়েকটি আন্ত:মন্ত্রণালয় সভার মাধ্যমে প্রথাটি রহিত করার ব্যাপারে ঐক্যমত পোষণ করা হলেও কোন সংশোধনী জারি না হওয়ায় এর সুফল পাচ্ছিলেন না আমাদনিকারকরা।
তবে তাদের ক্রমাগত যোগাযোগের কারণে ২৪ এপ্রিল'২০২২ ইং তারিখে 'আমদানি নীতি আদেশ ২০২১-২০২৪' জারী হয়। এ নীতির অনুচ্ছেদ ২৪(২)(খ) মোতাবেক Meat and Bone meal, Fishmeal, Protein Concentrate আমদানির ক্ষেত্র ব্যতীত পশুখাদ্যে ব্যবহৃত অন্যান্য পশুপুষ্টি উপকরণ (ফিড প্রিমিক্স, ফিড এডিটিভস, ভিটামিন ও মিনারেল প্রিমিক্স) এবং ভ্যাকসিন ও ঔষধ সামগ্রী আমদানির ক্ষেত্রে ক্লোরামফেনিকল, নাইট্রোফুরান ও এন্টিবায়োটিক পরীক্ষা করার বাধ্যবাধকতা নাই" মর্মে নির্দেশনা জারী করে। এর ফলে ২৪ এপ্রিলের পর এলসিকৃত পশুপুষ্টি উপকরণ পরীক্ষা ব্যতীরেকেই ছাড়করণ করার ব্যাপারে নিশ্চিত করেন চট্টগ্রামে বন্দরের সম্মানিত উপ-কমিশনার, যুগ্ন কমিশনার এবং কমিশনার মহোদয়।
আফতাব আলম বলেন, আহকাব সভাপতি ডা. এম নজরুল ইসলাম এ ব্যাপারে সার্বিক নির্দেশনা প্রদান করেন এবং সকল নেতৃবৃন্দের ঐকান্তিক সহযোগিতায় এ কাজটি সম্ভব হয়েছে বলে মনে করেন তিনি। AHCAB সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ আফতাব আলম আহকাব-এর সকল সদস্যবৃন্দ, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, মৎস্য এবং প্রাণিসম্পদ মন্ত্রনালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এবং কমিশনার, চট্টগ্রাম সহ সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন জানিয়েছেন।