রাজধানী প্রতিনিধি:রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, বিশ্ববাজারে পণ্যমূল্য বৃদ্ধি ও ডলার সংকটে আমদানির ঋণপত্র (এলসি) খোলা প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে দেশের অনেক ব্যাংক। ব্যাংকগুলোর অনীহার কারণে ধারাবাহিকভাবে কমছে এলসি খোলার হার। ফলে প্রাণীজ ও কৃষিজ পণ্য আমদানী করতে পারছেন না দেশের আমদানিকারকরা। এতে পণ্য সংকটের পাশাপাশি ডিম, দুধ, মাছ মাংসের দাম আরও বাড়ার আশঙ্কা করছেন তারা।
সমস্যা সমাধানে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রাণীজ ও কৃষিজ পণ্য আমদানীর ক্ষেত্রে এল/সি খোলার দাবি জানিয়েছে এ্যানিমেল হেল্থ কোম্পানীজ এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আহকাব)। সোমবার (৭ নভেম্বর) বাংলাদেশের ব্যাংকের গভর্ণরের কাছে এসংক্রান্ত একটি চিঠি পাঠিয়েছে সংগঠনটি। AHCAB প্রেসিডেন্ট ডাঃ এম নজরুল ইসলাম ও সেক্রেটারী জেনারেল মোহাম্মদ আফতাব আলম স্বাক্ষরিত চিঠিতে বাংলাদেশের প্রাণীজ খাতের পণ্য সামগ্রী আমদানীর ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এল/সি খোলার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট তফসিলি ব্যাংক সমূহকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করার জন্য বিনীতভাবে অনুরোধ জানিয়েছেন।
চিঠিতে বলা হয়, AHCAB গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত একটি জাতীয় সংগঠন যা এদেশে হাঁস-মুরগী, গবাদি পশু, মৎস্যসহ গৃহপালিত পশু-পাখির প্রয়োজনীয় পুষ্টি/প্রিমিক্স/ভ্যাকসিন/ঔষধ প্রস্তুত/কৃষিজাত পণ্য আমদানী ও বাজারজাত করে আসছে। এর সদস্যগণ কর্তৃক আমদানীকৃত সমুদয় পণ্যসামগ্রী মৎস্য ও প্রাণীখাদ্য উৎপাদনের উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়। প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ্য যে, মৎস্য ও প্রাণিজ খাদ্যের সিংহভাগ কাঁচামাল বিদেশ থেকে আমদানী করতে হয়।
এসোসিয়েশনের সদস্যগণের আমদানীকৃত পণ্য সামগ্রী দেশের মৎস্য, পোল্ট্রি ও গবাদীপশু খামারে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এসব খামারে কোটি কোটি যুবক ও গ্রামীন নারীদের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে যা দেশের গ্রামীন অর্থনীতিতে অনন্য অবদান রেখে চলেছে। এসকল খামার কোন কারণে বন্ধ হয়ে গেলে দেশে বেকার সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করবে। দানাদার খাদ্যশস্য সামগ্রী দেশে উৎপাদন করা হলেও প্রায়শঃ এসব পণ্য বিদেশ থেকে আমদানী করতে হয়। কিন্তু প্রাণীজ প্রোটিনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং তা বিদেশেও রপ্তানি করা হয়ে থাকে ।
নেতৃবৃন্দ চিঠিতে আরো উল্লেখ করেন, মানুষের দৈহিক সুরক্ষায় প্রাণীজ প্রোটিন একটি অত্যাবশ্যকীয় পণ্য বিধায় এ খাতটি কৃষির একটি বিশেষ খাত হিসেবে বিবেচিত। সামগ্রীক অবস্থা বিবেচনায় সরকার কর্তৃক অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ব্যতীত অন্যান্য সকল আমদানী নিরুৎসাহিত করেছে। বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনায় বিভিন্ন তফসিলি ব্যাংক সমূহ প্রাণীজ খাতের পণ্য সামগ্রী আমদানীর জন্য এল/সি খোলার ক্ষেত্রে অনীহা প্রদর্শণ করছেন যা কোন অবস্থাতেই কাম্য নয়। আপামর জনগনকে প্রোটিনের চাহিদার জোগান নিশ্চিতকল্পে স্বল্প মূল্যে ডিম, দুধ, মাছ, মাংশের সরবরাহ ঠিক রাখার লক্ষ্যে দেশের প্রাণীজ খাতের চলমান উৎপাদন প্রক্রিয়া কোন অবস্থাতেই বাধাগ্রস্থ করার সুযোগ নেই। আমদানী প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্থ হলে খুব শীঘ্রই মাছ, মাংশ, ডিম,দুধের সরবরাহ সংকট সৃষ্টি হবে এবং পণ্যমূল্য বহুলাংশে বেড়ে যাবে যা দেশ, জাতি ও আপামর জনগণের জন্য দুর্বিসহ অবস্থার সৃষ্টি হবে বলে তারা চিঠিতে উল্লেখ করেন।