আগামী ১১-১৩ ফেব্রুয়ারী "বাংলাদেশ সীড কংগ্রেস ২০২৩

রাজধানী প্রতিনিধি:বাংলাদেশ সীড এসোসিয়েশন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় আগামী ১১-১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে তিন দিনব্যাপী “বাংলাদেশ সীড কংগ্রেস ২০২৩” আয়োজন করতে যাচ্ছে। আগামী ১১ ফেব্রুয়ারী সকাল ১০:০০ ঘটিকায় মাননীয় কৃষিমন্ত্রী ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক এম.পি, প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মেলার শুভ উদ্বোধন করবেন।

আজ বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারী) সেগুনবাগিচাস্থ ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে এ উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ সীড কংগ্রেস ২০২৩ এর উপর প্রেস ব্রিফিং প্রদান করেন জনাব আনোয়ার ফারুক কংগ্রেসের প্রধান সমন্বয়ক ও সাবেক সচিব, কৃষি মন্ত্রণালয়। সংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন জনাব আনোয়ার ফারুক, ড. মোঃ আলী আফজাল, সিনিয়র সহ-সভাপতি, বিএসএ, এ. এইচ. এম হুমায়ুন কবীর, সাধারণ সম্পাদক, বিএসএ। সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করে বিএসএর সভাপতি ও কংগ্রেসের জাতীয় কমিটির প্রধান জনাব এম আনিস উদ্ দৌলা।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বাংলাদেশ সীড কংগ্রেস ২০২৩ এ প্রায় এক হাজার দেশি-বিদেশি বিজ্ঞানী, সম্প্রসারণ কর্মী, বীজ ডিলার, বীজ ব্যবসায়ী, বীজ শিল্প প্রতিষ্ঠান, কৃষিবিদ, ব্যাংকার, শিক্ষক ও কৃষক প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করবে বলে আশা করছেন আয়োজকরা। যার মধ্যে ৫০জন বিদেশি প্রতিনিধিও থাকবেন। মেলায় ১৩টি প্যাভিলিয়ন ও ৬০টি স্টল থাকবে। যার মধ্যে ১০টি বিদেশি স্টল থাকবে এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন সকল প্রতিষ্ঠান স্টল সহ মেলায় অংশগ্রহণ করবে।

আয়োজকরা বলেন, আমাদের কৃষিতে অর্জিত হয়েছে অনেক সাফল্য। ক্ষুধা ও দারিদ্র নির্ভর বাংলাদেশ আজ খাদ্য উৎপাদন স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করে কিছু কিছু ফসলের ক্ষেত্রে উদ্বৃত্ব হয়েছে। আমাদের কৃষির সাফল্য আজ বিশ্ব স্বীকৃত। প্রতিকূল পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত, জনসংখ্যাবৃদ্ধি স্বত্ত্বেও কৃষিতে আমাদের প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক।

বক্তারা বলেন, আমাদের কৃষির সাফল্যের মূলেই আধুনিক প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও ব্যবহার। সরকারের কৃষিবান্ধব নীতিমালা ও কৃষিকে সর্বাধিক অগ্রাধিকার প্রদান, মানসম্পন্ন বীজের ব্যবহার বৃদ্ধি। এদেশে মানসম্পন্ন বীজের ব্যবহার ৬০ এর দশক সরকারি প্রতিষ্ঠান বিএডিসি শুরু করে। পরবর্তীতে স্বাধীনতাত্তোর ৭০ এর দশকে সরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি কিছু কিছু উৎসাহী ব্যবসায়ী ক্ষুদ্র পরিসরে বীজ ব্যবসা শুরু করেন। ৮০ ও ৯০ এর দশকে বীজ ব্যবসায় বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পেতে থাকে। আমাদের সরকার প্রণীত বীজনীতি, বীজ আইন ও বীজ বিধিমালা প্রণয়নের মাধ্যমে বেসরকারি খাত বীজ ব্যবসায় এগিয়ে আসতে থাকে। বেসরকারি বীজ ব্যবসায়ীরা এ সময় বিদেশ হতে উন্নতমানের হাইব্রিড সবজি বীজ আমদানি করে বাজারজাত করতে থাকে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ১৯৯৯ সালে বর্তমান সরকার হাইব্রিড ধান বীজ অবমুক্তির মধ্য দিয়ে এদেশে বীজ ব্যবসায় বেসরকারি খাতের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে। ২০০০ সাল থেকেই বেসরকারি বীজ ব্যবসার কলেবর উল্লেখযোগ্য হারে বাড়তে থাকে, দেশে মানসম্পন্ন বীজের ব্যবহারও বাড়তে থাকে।  ২০০৯ সালে দেশের মোট বীজের চাহিদার ২০% ছিল মানসম্পন্ন বীজ, বর্তমানে এ হার ৩৩% উন্নীত হয়েছে। তবে আলু, সবজি, ভুট্টা, ধান, পাট বীজ ইত্যাদি ফসলের ক্ষেত্রে এ হার ৫৯.২%। দেশে এখন মোট বীজের প্রয়োজন ১২,৫৪,৮৩৬ মেট্রিক টন যার মধ্যে শুধুমাত্র আলু বীজের প্রয়োজনই হয় ৭৮,৬৮৮৫ মেট্রিক টন। আলু বীজের ক্ষেত্রে মানসম্পন্ন বীজের ব্যবহার ১৬.৩৮%।



আয়োজকরা জানান, আমাদের বেসরকারি খাত বীজ শিল্পে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। দেশের মোট বীজ সরবরাহের ৫৩% বীজ সরবরাহ করে বেসরকারি খাত। ধান বীজের ৪৪%, হাইব্রিড ধানের ৯৭%, ভুট্টার ৯৯%, সবজি বীজের ৮৬%, আলু বীজের ৭৪%, পাট বীজের ৮৩% বীজ সরবরাহ করছে বেসরকারি খাত।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, আমাদের বীজ আজ শিল্পে উন্নীত হয়েছে। সুসংহত সুসংগঠিত একটি খাত। এখানে সরকারি ও বেসরকারি খাত একসাথে কাজ করে যাচ্ছে। বেসকারি খাত সরকারের সম্পূরক হিসেবে কাজ করছে। বাংলাদেশ সীড এসোসিয়েশন বেসরকারি বীজ প্রতিষ্ঠানের একক সংগঠন। এই এসোসিয়েশন বর্তমানে ৭ হাজারের অধিক সদস্য নিয়ে কাজ করছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন মোঃ আজিজুল হক, প্রচার সম্পাদক, বাংলাদেশ সীড এসোসিয়েশন; মোঃ আনোয়ার হোসেন, কার্যনির্বাহী সদস্য, বাংলাদেশ সীড এসোসিয়েশন ফৌজিয়া ইয়াসমিন, কার্যনির্বাহী সদস্য, বাংলাদেশ সীড এসোসিয়েশন; ফখরুল ইসলাম, নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ সীড এসোসিয়েশন; কৃষিবিদ আহমেদ আলী চৌধুরী ইকবাল, পরিচালক (প্রশিক্ষণ), বাংলাদেশ সীড এসোসিয়েশন; ড. এস বি নাসিম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, উইনঅলহাই টেক সীড কোম্পানী লিঃ প্রমুখ।

মেলা প্রতিদিন সকাল ১০:০০ থেকে সন্ধ্যা ৬:০০টা পর্যন্ত দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।