এগ্রিলাইফ ডেস্ক: ব্রয়লার পোল্ট্রি শিল্পের বড় একটি খাত। বাংলাদেশের মানুষের আমিষের চাহিদা পূরণে এটি ব্যাপকভাবে ভূমিকা রাখছে। ব্রয়লার মুরগির মাংস খাওয়া নিরাপদ কি না, এ নিয়ে আমাদের অনেকের মধ্যেই ভ্রান্ত ধারণা বা দ্বিধাদ্বন্দ্ব রয়েছে। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক প্রচারণায় দেখা যায়, ব্রয়লার মুরগির মাংসে অ্যান্টিবায়োটিক, হেভি মেটাল এবং অন্যান্য ক্ষতিকর পদার্থের উপস্থিতি রয়েছে, যা মানবস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এ ধরনের বিভ্রান্তিমূলক তথ্যের কারণে সাধারণ জনগণের মধ্যে অনেক সময় ব্রয়লার মুরগির মাংস সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা ছড়িয়ে পড়ে এবং ব্রয়লার মাংস খাওয়া কমিয়ে দেয়। ফলে ব্রয়লার শিল্পের ওপর একটি বড় ধরনের ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে।
এই পরিস্থিতিতে ব্রয়লার মুরগির মাংসে, হাড়ে, কম্পোজিটে (কলিজা, কিডনি এবং গিজার্ডের সমন্বয়) এবং মুরগির খাদ্যে কী পরিমাণ অ্যান্টিবায়োটিক ও ভারী ধাতু আছে, তা নির্ণয় করতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে ও উদ্যোগে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের অধীনে গবেষণা পরিচালনা করা হয়। এ গবেষণা দলের প্রধান ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল-এর পরিচালক (পুষ্টি ইউনিট) ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে ও উদ্যোগে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল গবেষণাটি গত বছরের (২০২২) জানুয়ারি থেকে জুন মাসে পরিচালিত হয়। এর ফলাফল সম্প্রতি গণমাধ্যমে জানানো হয়। গবেষণায় প্রমাণিত পুষ্টিগুণে ভরপুর ব্রয়লারের মাংস নিরাপদ, এটি খেতে ভোক্তাদের কোন সন্দেহ রাখার দরকার নেই। এর ফলে ব্রয়লার সম্পর্কে মানুষের নেতিবাচক ধারনা অনেকটাই কমে গেছে বলে মনে করেন এ পোল্ট্রি গবেষক।
আসন্ন পোল্ট্রি শো-তে এ ধরনের খবরাখবর দেশের সচেতন ভোক্তাদের মাঝে বেশি বেশি প্রচারের অনুরোধ জানান ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম।
দেশে ব্রয়লার মুরগি খুবই সম্ভাবনাময় একটি খাত। চাহিদা বৃদ্ধি করতে পারলে দেশে যে পরিমাণ খামার ও অবকাঠামো রয়েছে, তার পুরোপুরি ব্যবহারের মাধ্যমে উৎপাদন আরও বহুগুণে বৃদ্ধি করা সম্ভব। সে জন্য মানুষের কাছে মুরগির মাংস জনপ্রিয় করতে হবে। এটি করতে পারলে একদিকে আমিষের চাহিদা পূরণের মাধ্যমে সুস্থ, সবল ও মেধাবী জাতি গঠন সহজতর হবে বলে মনে করেন এ খাতের সুধীজনরা।