কৃষিবিদ দীন মোহাম্মদ দীনু,:বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় (বাউবি) এর স্কুল অব এগ্রিকালচার এন্ড রুরাল ডেভেলপমেন্ট পরিচালিত চার বছর মেয়াদী ব্যাচেলর অব সায়েন্স ইন এগ্রিকালচার (বিএসসিএজি) জুলাই-ডিসেম্বর ২০২২ সেমিস্টারে শিক্ষার্থী ভর্তির লক্ষ্যে সম্প্রতি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করায় প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার ছাইফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রতিবাদলিপিতে জানানো হয়, কৃষি সম্পর্কে উন্নত প্রযুক্তি-জ্ঞানের অভাব ও সনাতন কৃষি ব্যবস্থার ফলে এদেশে এখনো কাঙ্খিত উৎপাদন পাওয়া যাচ্ছে না। তারপরও গত ছয় দশকে জনসংখ্যা তিনগুণ হওয়ার পরও বাড়তি জনসংখ্যার চাহিদা মিটিয়ে কৃষিতে এই যে স্বনির্ভরতা বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষ গ্রাজুয়েটবৃন্দসহ আজকের কৃষিবিদগণই এ সাফল্যের দাবিদার। মানোন্নত কৃষি শিক্ষা বাস্তবায়ন এবং চাহিদা-ভিত্তিক ও ব্যবহার উপযোগী স্থিতিশীল কৃষি-প্রযুক্তি উদ্ভাবন প্রচেষ্টায় অধিকতর গতিসঞ্চার করে কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জনের জন্য কৃষি খাতকে যথেষ্ট গুরুত্ব প্রদান করতে হবে। সুশিক্ষিত, দক্ষ, নীতিবোধ সম্পন্ন ও দেশ প্রেমে উদ্ধুদ্ধ কৃষিবিদ তৈরির লক্ষ্যে কাজ করছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক বিএসসিএজি এর মত কারিগরি ডিগ্রি অপর্যাপ্ত খামার ও ল্যাব বিহীন ভাবে এবং দক্ষ শিক্ষকহীন অবস্থায় কোর্স কারিক্যুলার মানদন্ড বিবেচনায় না নিয়ে চালু করার প্রেক্ষিতে আমরা হতাশ হয়েছি। এর ফলে এই পেশার মর্যাদা ও সুনাম ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে।
প্রতিবাদ লিপিতে জানানো হয়, কৃষি নির্ভর বাংলাদেশে আধুনিক কৃষি বিজ্ঞান ও কৃষি প্রযুক্তি বিষয়ক উচ্চ শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। স্নাতক কৃষি একটি কারিগরি বিষয়। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ষোলটি বিষয়ে তাত্ত্বিক শিক্ষার পাশাপাশি কৃষিতে স্নাতক ডিগ্রির জন্য খামার ও ল্যাবরেটরীতে ব্যাবহারিক ক্লাস অত্যাবশ্যক। আন্তর্জাতিক কোর্সকারিকুলাম এর সাথে সমন্বয় করে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ এর তত্ত্বীয় ও ব্যাবহারিক কোর্স কারিক্যুলাম প্রণয়ন করে অত্যন্ত সুনামের সাথে বিএসসিএজি ডিগ্রী প্রদান করে আসছে। পাশাপাশি দেশে বিদ্যামান বিভিন্ন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে প্রতিবছর কৃষিতে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করে শিক্ষার্থী বের হচ্ছে। এছাড়াও নতুন করে স্থাপিত একাধিক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতোমধ্যে শিক্ষা কার্যক্রম চালু হয়েছে।
এহেন পরিস্থিতিতে বর্তমানে দেশে কৃষি গ্রাজুয়েটের কোন সংকট নেই। আশঙ্কা করছি কোন ধরনের যাচাই-বাছাই ছাড়া বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক বিএসসিএজি ডিগ্রি চালু হলে দেশব্যাপী কৃষি শিক্ষার মান ও কৃষিবিদদের মর্যাদা ক্ষুন্ন হবে এবং কৃষির মত কারিগরি বিষয়ে অদক্ষ জনশক্তি তৈরী হবে, এর ফলে কৃষির অগ্রযাত্রাও ব্যাহত হবে।