এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম:আজ ১৮ আগস্ট কৃষি শিক্ষা ও গবেষণার আঁতুড়ঘর বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ৬১ পেরিয়ে ৬২ বছরে পা দিচ্ছে। কৃষি শিক্ষা, গবেষণা ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ১৯৬১ সালের এই দিনে দক্ষিণ এশিয়ার কৃষি শিক্ষার অন্যতম প্রাচীন ও বৃহৎ বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রথমেই ভেটেরিনারি ও কৃষি অনুষদকে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির পথচলা শুরু হয়। অতঃপর একে একে পশুপালন অনুষদ, কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান অনুষদ, কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদ এবং সবশেষে মাৎস্য বিজ্ঞান অনুষদ চালুর মধ্যে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি পূর্ণাঙ্গতা লাভ করে।
ময়মনসিংহ শহর থেকে চার কিলোমিটার দক্ষিণে পুরোনো ব্রহ্মপুত্র নদের পশ্চিম তীরে এক হাজার ২০০ একর জায়গায় অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়টিতে মোট ছয়টি অনুষদে ৪৩টি বিভাগ থেকে এযাবৎ ৩০,৭৬৪ জন স্নাতক, ২২,৯৭৪ জন এমএসসি/এমএস এবং ৮২২ জন পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করে দেশ-বিদেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অত্যন্ত সুনাম ও দক্ষতার সাথে কাজ করে চলেছেন। বর্তমানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৭,১৩২ জন। গত ৬ দশকে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা ও গবেষণার মাধ্যমে হাজারো কৃতি গ্রাজুয়েটের আন্তরিকতায় শত শত প্রযুক্তি সরকারের বিভিন্ন সম্প্রসারণ সংস্থার মাধ্যমে কৃষকের মাঝে ছড়িয়ে দিয়েছে। তারই ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশ আজ খাদ্য ঘাটতির দেশ থেকে খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশে পরিণত হয়েছে।
১৯৭৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ঘোষণা, কৃষিবিদদের প্রথম শ্রেণির পদমর্যাদা প্রদান করার মাধ্যমে মেধাবী শিক্ষার্থীরা কৃষি শিক্ষায় আগ্রহী হয়ে ওঠেন। আজ তাই আমরা পাট, চাল, মাছ, সবজি, ফলসহ নানাবিধ কৃষিপণ্য রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছি -অবদান রাখতে পারছি দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় একাধিকবার শিক্ষা সংক্রান্ত র্যাঙ্কিং এ দেশের মধ্যে শীর্ষ অবস্থান করে নিয়েছে। সম্প্রতি সাংহাই র্যাঙ্কিং এ Veterinary Science গ্রুপে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১-৩০০ এর মধ্যে অবস্থান আমাদেরকে গর্বিত করেছে। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম জার্মপ্লাজম সেন্টার, দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম ফিশ মিউজিয়ামসহ নানা স্থাপনা আমাদেরকে গর্ব করার উপলক্ষ এনে দিয়েছে। বর্তমান উপাচার্যসহ অনেক শিক্ষক/গবেষক দেশ-বিদেশ থেকে নানাবিধ সম্মান ও পুরস্কারে ভূষিত হওয়ায় আমরা উদ্বেলিত যা নিঃসন্দেহে অন্যদের অনুপ্রাণিত করবে।
বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে নানাবিধ অনিয়মের জয়ধ্বনি শুনতে পাই যা সচেতন শিক্ষক হিসেবে আমাদেরকে নিদারুনভাবে আহত করে। আমরা আমাদের মাতৃসম এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অনিয়মের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মান-মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সকলের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় নীল দল-এর আহবায়ক প্রফেসর ড. সৈয়দ মোহাম্মদ এহসানুর রহমান ও সদস্য সচিব প্রফেসর ড. মোঃ ফারুক ইমাম।