এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম:জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী ও এ এইচ এম কামরুজ্জামান বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে দিয়েছিলেন সুদূরপ্রসারী নেতৃত্ব। অথচ বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর ঘাতক চক্রের নেতৃত্ব অস্বীকার করায় ১৯৭৫ সালের ৩রা নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারা অভ্যন্তরে নির্বিচারে গুলির পর বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে তাঁদেরকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। সরকারের হেফাজতে এরকম নিষ্ঠুর হত্যাকান্ড পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।
আজ বৃহস্পতিবার ৩রা নভেম্বর ইতিহাসের এক কালো অধ্যায়ের দিনে জাতীয় চার নেতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা এবং তাঁদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় নীল দল। বাকৃবি নীল দল-এর আহবায়ক প্রফেসর ড. সৈয়দ মোহাম্মদ এহসানুর রহমান ও সদস্য সচিব প্রফেসর ড. মোঃ ফারুক ইমাম দলের পক্ষ থেকে এ শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন
নেতৃবৃন্দ বলেন, আওয়ামী লীগের প্রতি বিদ্বেষের প্রথম বহিঃপ্রকাশ ঘটে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মধ্যে দিয়ে। ঘাতকরা ধারণা করেছিল, একটি দলকে নিশ্চিহ্ন করতে হলে প্রথমে তার শীর্ষস্থানীয় নেতৃত্বকে শেষ করতে হবে। যার শুরুটা হয়েছিল জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মধ্য দিয়ে। খুনী মোস্তাক চক্রের মন্ত্রীসভায় যোগ দেওয়া অন্যান্য আওয়ামী লীগের সদস্যের মতো জাতীয় চার নেতাকেও মোস্তাক নানা টোপ দিয়ে তার মন্ত্রীসভায় অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু দলের প্রতি ইস্পাত কঠিন অঙ্গীকার থাকায় কোন প্রভোলনই বঙ্গবন্ধুর রক্ত ও দলের সঙ্গে তাঁদের বিশ্বাসঘাতকতা করতে উদ্বুদ্ধ করতে পারেনি। জাতীয় চার নেতার প্রতি জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা।
১৯৮১ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা নির্বাসন থেকে দেশে ফিরে দলের হাল ধরলে আওয়ামী লীগ আবার পুনরুজ্জীবিত হয়। কিন্তু যারা বাংলাদেশ সৃষ্টির পর থেকে আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করে তাদের আধিপত্য নিরঙ্কুশ করতে বদ্ধপরিকর ছিল, তারা আওয়ামী লীগের নেতাদের, বিশেষ করে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে বারবার প্রাণনাশের চেষ্টা করেছে। যার মধ্যে বড় ধরনের চেষ্টা ছিল ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় তাঁর উপর পাকিস্তানের তৈরী আর্চেজ গ্রেনেডের হামলা। ঐ হামলায় জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে গেলেও মৃত্যু হয় বেগম আইভী রহমানসহ ২৪ টি তাজা প্রাণের, যার বিচার এখনো কার্যকর হয়নি। ২০০১ সালে ছন্দ পতনের পর ২০০৯ সালে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার নির্দেশিত পথে সরকার গঠন করেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু নিজ দলে ছোট-বড় মোশতাকের অনুপ্রবেশ তাঁর পথচলাকে কণ্টকাকীর্ণ করে তুলেছে।
জাতীয় চার নেতার হত্যাকান্ডের বিচারের পাশাপাশি নতুন মোশতাকরূপী অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করে অপসারণ করা এখন সময়ের দাবি। এই দিনে প্রার্থনা করি জননেত্রী শেখ হাসিনা যেন দ্রুত এই বিচারের রায় কার্যকর করতে পারেন বলে আশা করে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় নীল দল।