শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি বাড়ানোর পক্ষে আমি নই: বাকৃবি উপাচার্য

আবুল বাশার মিরাজ, বাকৃবি প্রতিনিধি:বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান বলেছেন, 'আমি কখনোই শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি বাড়ানোর পক্ষে নয়। আমার শিক্ষার্থীরা কৃষকদের নিয়ে কাজ করে, তারা টাকা কোথায় পাবে? আমরা কম খরচে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করি। এ কারণেই গরীব মেধাবীরা বাকৃবিতে পড়াশোনার সুযোগ পাচ্ছে। আর গ্রাজুয়েট হয়ে এই মেধাবী শিক্ষার্থীরাই কৃষকদের জন্যে কাজ করবে, কৃষকের অধিকার কথা বলবে।

' বিশ্ব মানবাধিকার দিবস ২০২২ পালন উপলক্ষে রবিবার (১৮ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মানব-মর্যাদা, স্বাধীনতা আর ন্যায়পরায়ণতা, দাঁড়াব সকলেই অধিকারের সুরক্ষায়’ স্লোগানকে সামনে রেখে ১ম বারের মতো নানান আয়োজনে বাকৃবিতে এই দিবসটি পালিত হলো। ইউনাইটেড ন্যাশনস বাংলাদেশ এবং বাকৃবির যৌথভাবে অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে।

জানা গেছে, দিবসটি উপলক্ষে সকাল ১০টায় একটি র‌্যালি বের করা হয়। র‌্যালিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের হ্যালিপ্যাড থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন রাস্তা প্রদক্ষিণ করে সৈয়দ নজরুল ইসলাম সম্মেলন কক্ষের সামনে এসে শেষ হয়। র‌্যালি শেষে একটি আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।এতে বাকৃবির ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. খান মো. সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউনাইটেড ন্যাশনস বাংলাদেশের সমন্বয়ক মো. জাহিদ হোসাইন এবং বাকৃবি প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মুহির উদ্দীন।

এসময় শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন বাকৃবির সহযোগী ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. আজহারুল ইসলাম। এছাড়াও বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।

এসময় মো. জাহিদ হোসাইন তার বক্তব্যে বলেন, মানবাধিকার বলতে সবাই বুঝে যে এটি আইনের ছাত্রদের বিষয়। আমাদের এই ধারণা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। মানবাধিকার সম্পর্কে সবারই ধারণা থাকা উচিত। তাহলে আমরা সবার অধিকার নিজেরাই নিশ্চিত করতে পারবো। কেউ বঞ্চিত হবে না। কারণ আমরা যদি জানি যে কোনটা আমার অধিকার, তাহলে আমরা সেটি ভোগ করতে পারবো এবং অন্যের অধিকার যাতে নষ্ট না হয় সেটিও  মেনে চলতে পারবো। আমরা যদি মানবাধিকার নিয়ে কাজ না করি তাহলে আবার আমরা অন্ধকারে চলে যাবো। সভ্যতাকে বিকাশিত করতে আমাদের মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা অত্যন্ত জরুরী।

তিনি আরও বলেন, মানব পরিবারের সকল সদস্যের জন্য সার্বজনীন, সহজাত, অহস্তান্তরযোগ্য এবং অলঙ্ঘনীয় অধিকারই হলো মানবাধিকার। মানবাধিকার প্রতিটি মানুষের এক ধরনের অধিকার যেটা তার জন্মগত ও অবিচ্ছেদ্য। মানুষমাত্রই এ অধিকার ভোগ করবে এবং চর্চা করবে। তবে এ চর্চা অন্যের ক্ষতিসাধন ও প্রশান্তি বিনষ্টের কারণ হতে পারবে না। মানবাধিকার দিবস জাতিসংঘের নির্দেশনায় বিশ্বের সকল দেশে প্রতি বছর ১০ ডিসেম্বর পালিত হয়। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ কর্তৃক ১০ ডিসেম্বর, ১৯৪৮ সাল থেকে দিবসটি উদযাপন করা হয়। এছাড়াও, 'সার্বজনীন মানব অধিকার সংক্রান্ত ঘোষণাকে' বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এ তারিখকে নির্ধারণ করা হয়। সার্বজনীন মানব অধিকার ঘোষণা ছিল ২য় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী নবরূপে সৃষ্ট জাতিসংঘের অন্যতম বৃহৎ অর্জন।