শেকৃবি প্রতিনিধি: মানুষকে “মানুষ” হিসেবে গড়ে তুলেছে কৃষি। যখন মানুষ কৃষির সাথে সংযুক্ত হয়েছে, ফসল চাষাবাদ, পশুপালন ও মৎস্য চাষ শুরু করেছে তখনই মানুষ স্থায়ীভাবে বসবাসের চিন্তা করেছে। কৃষি মানুষকে স্থায়ী ও থীতু হয়ে বসবাস করতে শিখিয়েছে। কৃষির মধ্য দিয়েই আমরা মানুষ হয়েছি। কৃষিকে বাদ দিয়ে কোন কিছু করার সুযোগ নেই। আজকের যে সভ্যতা তার ভিত্তিও এ কৃষি।
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদে লেভেল-১, সেমিস্টার-১ এর নবীন শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন-২০২২ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোঃ শহীদুর রশীদ ভূইঁয়া এসব কথা বলেন। আজ ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ (মঙ্গলবার) সকাল ১০ ঘটিকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল টিএসসি কমপ্লেক্স অডিটোরিয়ামে উক্ত ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান অতিথি বলেন, আগেকার দিনে জমিতে লম্বা ধান হতো, ঝড় হলেই তা মাটিতে শুয়ে পড়তো। স্বাধীনতার পূর্বে এ দেশের মানুষ কখনও দুই বেলা পেট ভরে খেতে পারেনি। তখন পুষ্টির কথা চিন্তাই করতো না। এখন আমরা খাদ্যের চাহিদা মিটিয়ে পুষ্টির চাহিদাও মেটাচ্ছি। এ অভাবনীয় সাফল্যের কারিগর এদেশের কৃষিবিদ ও কৃষকগণ।
ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোঃ শহীদুর রশীদ ভূইঁয়া নবীন শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানিয়ে বলেন, কৃষি পৃথিবীর একটি আদিমতম ও মহিমান্বিত পেশা। তোমরা একটি সুন্দর বাছাই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছো। পরিশ্রম আর আত্মনিবেদন এর মাধ্যমে যে কোন পেশাতে ভালো করা সম্ভব। তুমি আজকে যে পেশায় এসেছো সেটি অত্যন্ত আনন্দময়, সম্মানের ও ভালো লাগার পেশা।
তিনি আরো বলেন, এদেশের যত আবিষ্কার বা উদ্ভাবন তা কৃষিবিদদের চেয়ে অন্য কেউ বেশি করেনি। শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় উপমহাদেশের প্রাচীনতম কৃষি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এ দেশ যখন স্বাধীন হয় তখন কৃষির সকল ক্ষেত্রে নেতৃত্বে ছিল শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাজুয়েটগণ। ফলে স্বাধীনতার পর এদেশের কৃষির যে উম্ফলন তার ভিত্তি রচিত করেছে এ প্রতিষ্ঠানের গ্রাজুয়েটগণ। তাঁদেরই উত্তরাধিকার হলো তোমরা। তোমাদের হাতেই আগামী দিনের কৃষির পতাকা তুলে দিতে চাই। ২০৪১ সালে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে নিজেদেরকে এখন থেকেই প্রস্তুত করতে হবে। আমাদের লক্ষ্য কিন্তু একটাই তোমাদের সুযোগ্য গ্রাজুয়েট হিসেবে গড়ে তোলা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক ড. মোঃ ফরহাদ হোসেনের সভাপতিত্বে এবং রেজিস্ট্রার শেখ রেজাউল করিমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোঃ শহীদুর রশীদ ভূইঁয়া, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মোঃ নজরুল ইসলাম ও কৃষি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. পরিমল কান্তি বিশ্বাস।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন পোস্ট গ্রাজুয়েট স্টাডিজের ডিন অধ্যাপক ড. অলোক কুমার পাল, এনিম্যাল সায়েন্স এন্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. লাম-ইয়া আসাদ, এগ্রিবিজনেস ম্যানেজমেন্ট অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোঃ আব্দুল লতিফ, ফিশারিজ, একোয়াকালচার এন্ড মেরিন সায়েন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এ এম সাহাবুদ্দিন, গবেষণা পরিচালক অধ্যাপক ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক, আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোঃ মোফাজ্জল হোসেন, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোঃ হারুন-উর-রশিদ, বিভিন্ন বিভাগের পরিচালক, বিভাগীয় চেয়ারম্যান, হল প্রভোস্ট, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী, ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দসহ নবীন শিক্ষার্থীবৃন্দ।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন শেকৃবি'র ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মোঃ নজরুল ইসলাম, কৃষি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. পরিমল কান্তি বিশ্বাস, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোঃ হারুন-উর-রশিদ, প্রভোস্ট কাউন্সিলের আহবায়ক অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ, শেকৃবি ছাত্রলীগের সভাপতি এস এম মাসুদুর রহমান মিঠু, সাধারণ সম্পাদক মোঃ মিজানুর রহমান, নবীন শিক্ষার্থী এস এম রায়হানুল ইসলাম পলক ও হালিমাতুস সাদিয়া।
ওরিয়েন্টেশন শেষে নবীন শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ করে সকল বিভাগ, গবেষণাগার, গ্রন্থাগার, খামার, গবেষণা মাঠ ঘুরিয়ে দেখানো হয়। আগামীকাল বুধবার (০১ মার্চ ২০২৩) থেকে প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু হবে।