এস এম রায়হানুল নবী, সিকৃবি প্রতিনিধি: "শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশে, সকল শিশু দুধ পাবে অনায়াসে" স্লোগান কে সামনে রেখে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিকৃবি) বিশ্ব দুগ্ধ দিবস পালিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেইরি সাইন্স বিভাগের আয়োজনে দিবসটি উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও দুধ পানের ব্যাবস্থা করা হয়।
মঙ্গলবার (৬ জুন) সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অনুষদ ভবন-১ এর সামনে থেকে সচেতনতামূলক শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। শোভাযাত্রা শেষে কেন্দ্রিয় মিলনায়তনে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ডেইরি সাইন্স বিভাগের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী ফাহমিদা জাহানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় দুধের পুষ্টিমান ও উপকারিতা নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন উক্ত বিভাগের অধ্যাপক ডা. আনজুমান আরা।
ডেইরি সাইন্স বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. ফেরদৌস মো. আলতাফ হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ জামাল উদ্দিন ভূঁঞা। এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অনুষদের ডিন ডা. মোঃ রাশেদ হাসনাত, সিলেটের জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মু. আলমগীর কবির, জেলা দুগ্ধ খামার সিলেটের উপ-পরিচালক ড. শহিদুল ইসলাম।
উপাচার্য ডা. মোঃ জামাল উদ্দিন ভূঁঞা বলেন, দুধ উৎপাদন এবং দুধের পুষ্টিমান ও ব্যবহার সম্পর্কে আমরা এখানে যারা আছি সকলেই জানি। দুধ একটি পরিপূর্ণ খাবার। আমাদের বয়স বেড়ে গেলে পর্যাপ্ত ক্যালসিয়ামের অভাবে অস্টিওপোরোসিসের মতো রোগ হয় অথচ এই ক্যালসিয়াম কিন্তু আমরা দুধ থেকে পাচ্ছি। তাছাড়া বাচ্চাদের ব্রেন ডেভেলপমেন্ট থেকে শুরু করে ইম্যুনিটি সবক্ষেত্রে এই দুধের উপকারিতা রয়েছে। কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী দুধের উৎপাদন হচ্ছে না। তাই আমাদেরকে দুধ উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে। দুধের উৎপাদন যাতে বেশি করা যায় সেজন্য জাত উন্নয়ন থেকে শুরু করে বিভিন্ন গবেষনা বৃদ্ধি করতে হবে।
জেলা দুগ্ধ খামার সিলেটের উপ-পরিচালক ড. শহিদুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের মানুষের চাহিদা অনুযায়ী দুধ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা আমরা এখনো অর্জন করতে পারিনি। এক্ষেত্রে প্রধান বাধা হলো উন্নত জাত ও প্রশিক্ষণের অভাব। কিন্তু প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর জাত সংকরায়ণের মাধ্যমে জাত উন্নয়ন করে দুধ উৎপাদন বাড়াতে কাজ করে যাচ্ছে। সংকরায়ণের মাধ্যমে যদি দেশের ৮০ শতাংশ গরুর জাত উন্নয়ন করতে যায় তাহলে ৪১ সালের মধ্যে আমরা শুধু স্বয়ংসম্পূর্ণ হবো না বরং চাহিদার দ্বিগুণ উৎপাদনে সক্ষম হবো।
ভেটেরিনারি অনুষদের ডিন ডা. মোঃ রাশেদ হাসনাত বলেন, আমরা যারা দুধ নিয়ে কাজ করছি, দুধ নিয়ে পড়াশোনা করছি, দুধ নিয়ে দিন রাত স্বপ্ন দেখছি অথচ তারাই নিয়মিত দুধ পান করি না। বয়সের একটি সময় তোমরা দুধ খেতে বাধ্য হবে কিন্তু এখন না খাওয়ার ক্ষতিটা পূরন হবে না। তাই আমি আশা করবো তোমরা নিজেদের প্রতি সচেতন হবে এবং ঠান্ডা পানীয় না খেয়ে নিয়মিত দুধ খাবে।
আলোচনা সভা শেষে উপস্থিত শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও স্থানীয় একটি স্কুলের ছাত্রদের মাঝে ইউএইচটি দুধ বিতরণ করা হয়।
উল্লেখ্য, খাদ্য হিসেবে দুধের গুরুত্ব তুলে ধরতে এবং দৈনন্দিন খাবারের তালিকায় দুগ্ধ ও দুগ্ধজাত পণ্য অন্তর্ভুক্তকরণে মানুষদের উৎসাহিত করতে ২০০১ সালে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) ১ জুনকে বিশ্ব দুগ্ধ দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। এর ধারাবাহিকতায় প্রতিবছরের পহেলা জুন বিশ্বব্যাপী দুগ্ধ দিবস হিসেবে পালিত হলেও সিকৃবিতে আজ দিবসটি পালিত হয়েছে।