আবুল বাশার মিরাজ, বাকৃবি প্রতিনিধি:কৃষি বিজ্ঞানী, কৃষি উদ্যোক্তা ও রফতানিকারকদের প্রথমবারের মতো বিশেষ মর্যাদা দিতে যাচ্ছে সরকার। কৃষিক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য সিআইপি মর্যাদায় ১৩ জন ব্যক্তিকে প্রথমবারের এআইপি (এগ্রিকালচারলি ইম্পরট্যান্ট পারসন) পদক বা স্বীকৃতি দিচ্ছে কৃষি মন্ত্রণালয়। এতে কৃষি উদ্ভাবন জাত/প্রযুক্তিতে এআইপি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) উপাচার্য এবং ডিপার্টমেন্ট অব জেনেটিক্স অ্যান্ড প্ল্যান্ট ব্রিডিংয়ের অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান। তিনি লবণাক্তসহিষ্ণু তিনটি সরিষার জাত এবং বাউধান-৩ উদ্ভাবনের জন্য এই সম্মাননা পাচ্ছেন। ২০২০ সালের জন্য তাকে এই পদক দেয়া হচ্ছে।
জানা গেছে, আগামীকাল বুধবার তাদের হাতে এই পদক তুলে দেবেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। গত রোববার এআইপি হিসেবে মনোনীত ১৩ জনের নামে গেজেট প্রকাশিত হয়েছে। তারা অন্যান্য ক্ষেত্রে সিআইপিদের মতো বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবেন। মনোনীতরা এআইপি কার্ডের সাথে মন্ত্রণালয় থেকে একটি প্রশংসাপত্র পাবেন। এআইপির মেয়াদ হবে এক বছর (চলতি বছরের জুলাই থেকে পরের বছরের জুন মাস পর্যন্ত)। এআইপিরা সচিবালয়ে প্রবেশের জন্য পাস পাবেন। বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠান ও সিটি/মিউনিসিপ্যাল করপোরেশনের নাগরিক সংবর্ধনায় আমন্ত্রণ পাবেন। বিমান, রেল, সড়ক ও জলপথে ভ্রমণে সরকার পরিচালিত গণপরিবহনে আসন সংরক্ষণে অগ্রাধিকার পাবেন। একজন এআইপি ব্যবসা বা দাফতরিক কাজে বিদেশে ভ্রমণের জন্য ভিসা পেতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট দূতাবাসকে উদ্দেশ করে লেটার অব ইন্ট্র্রোডাকশন ইস্যু করবে। একজন এআইপি তার স্ত্রী, পুত্র, কন্যা, মাতা, পিতা ও নিজের চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালের কেবিন সুবিধা প্রাপ্তিতে অগ্রাধিকার পাবেন এবং বিমানবন্দরে ভিআইপি লাউঞ্জ-২ ব্যবহারের সুবিধা পাবেন।
স্বীকৃতির বিষয়ে জানতে চাইলে বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান বলেন, কৃষি গবেষণার জন্য প্রাপ্ত এ স্বীকৃতিতে আমি উচ্ছ্বসিত ও আনন্দিত। এ অর্জন আসলে আমার একার না এটি বাকৃবি পরিবারের সবার। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা কৃষি ও কৃষি গবেষণার প্রতি বিশেষভাবে গুরুত্বরোপ করেছেন। কৃষি গবেষণার মাধ্যমে বাংলাদেশের কৃষিকে এগিয়ে নিতে যা করা দরকার সেটিই তিনি করে যাচ্ছেন। সাম্প্রতিক করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মত বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে উন্নত দেশগুলো যেখানে হিমশীম খাচ্ছে, সেখানে কৃষিজ উৎপাদন ঠিক রেখে বাংলাদেশ একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। কৃষির উৎপাদন ঠিক রয়েছে বলেই এখন পর্যন্ত আমাদের সামগ্রিক কোন ধরনের সমস্যা হয়নি, আর এটা হয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও কৃষিমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে।
উপাচার্য আরো বলেন, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আধুনিক কৃষি শিক্ষা ও গবেষণার মাধ্যমে যথোপযুক্ত প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও কৃষকদের মাঝে তা সম্প্রসারণ করে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে অগ্রগামী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। ফলে দেশ আজ ক্রমবর্ধিষ্ণু জনসংখ্যার জন্য খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা অর্জনে অসামান্য সাফল্য লাভ করতে পেরেছে। এইপি এর মত সম্মাননা আমাকে ও আমাদেরকে কৃষি গবেষণার অগ্রযাত্রায় আরো কাজ করতে সাহায্য করবে।