কৃষিবিদ মোঃ আব্দুল্লাহ-হিল-কাফি:বাংলাদেশের সংবিধানের ১৫, ১৭, ১৯ ধারা অনুযায়ী সরকার জনগণের অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান ও নিরাপত্তা বিধানে দায়বদ্ধ। খাদ্য নিরাপত্তা, নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্যের চাহিদা এবং জোগান টেকসই রাখতে বিশ্ববাসীর মনোজগতকে আলোড়িত করতে প্রতি বছর ১৬ অক্টোবর বিশ্বব্যাপী সাড়ম্বরে পালিত হয় বিশ্ব খাদ্য দিবস-২০২২।
বিশ্ব খাদ্য দিবস-২০২২-এ এবারের প্রতিপাদ্য "Leave no one behind. Better production, better nutrition, a better environment and a better life" অর্থাৎ “কাউকে পশ্চাতে রেখে নয়। ভালো উৎপাদনে উত্তম পুষ্টি, সুরক্ষিত পরিবেশ এবং উন্নত জীবন”। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে প্রতিপাদ্যটি খুবই যর্থাথ ও সময় উপযোগী। আর বর্তমান কৃষি বান্ধব সরকারের রূপকল্প ২০২১ ও ২০৪১ বাস্তবায়নের সাথে খুবই সংগতিপূর্ণ। কাউকে পেছনে ফেলে যে টেকসই উন্নয়ন হয়না তা বঙ্গবন্ধু তাঁর জীবন দশায় ধারণ করতেন। এবারের প্রতিপাদ্যের বাস্তব বহিঃপ্রকাশ বঙ্গবন্ধুর এই উক্তিটি।
বঙ্গবন্ধু ১৯৭৫ সালের ২৬ মার্চ ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে লাখো জনতার সামনে বলেছেন, এই সমাজের প্রতি চরম আঘাত করতে চাই. যে আঘাত করেছিলাম পাকিস্তানীদের। সে আঘাত করতে চাই এই ঘুণে ধরা সমাজ ব্যবস্থাকে। আমি আপনাদের সমর্থন চাই। আমি জানি, আপনাদের সমর্থন আছে। কিন্ত একটা কথা, এই যে নতুন সিস্টেমে যেতে চাচ্ছি আমি, গ্রামে গ্রামে বহুমুখী কো-অপারেটিভ করা হবে। ভুল করবেন না। আমি আপনাদের জমি নেব না। ভয় পাবেন না। যে জমি নিয়ে যাব তা নয়। পাঁচ বছরের প্ল্যান-এ বাংলাদেশের ৬৫ হাজার গ্রামে কো-অপারেটিভ হবে। প্রত্যেকটি গ্রামে গ্রামে এই কো-অপারেটিভ-এ জমির মালিকের জমি থাকবে। কিন্ত তার অংশ যে বেকার প্রত্যেকটি মানুষ যে মানুষ কাজ করতে পারে তাকে কো-অপারেটিভের সদস্য হতে হবে। এগুলো বহুমুখী কো অপারেটিভ হবে। পয়সা যাবে তাদের কাছে, ফার্টিলাইজার যাবে তাদের কাছে, টেস্ট রিলিফ যাবে তাদের কাছে, ওয়ার্কার্স প্রোগ্রাম যাবে তাদের কাছে। আস্তে আস্তে ইউনিয়ন কাউন্সিল টাউটদেরকে বিদায় দেয়া হবে। তা না হলে দেশকে বাঁচানো যাবে না। এই জন্যই ভিলেজ কো-অপারেটিভ হবে। আমি ঘোষণা করছি আজকে যে, পাঁচ বছরের প্লানে প্রত্যেকটি গ্রামে পাঁচ শত থেকে হাজার ফ্যামিলি পর্যন্ত নিয়ে কম্পালসারী কো-অপারেটিভ হবে।” এই বক্তব্য হতেই কৃষিতে সমবায়ের প্রয়োজনীয়তা সহজেই অনুধাবন করা যায়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের সংবিধানের ১৩(খ) অনুচ্ছেদে সম্পদের মালিকানার অন্যতম খাত হিসেবে সমবায়কে স্বীকৃতি প্রদান করেন।
বাংলাদেশ এবং বহিঃবিশ্রে কয়েকটি পরিসংখ্যান দেখে ধারণা করা যায়, খাদ্য নিরাপত্তা এখন কি অবস্থায় আছে। যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক চ্যারিটি সংস্থা দা হাঙ্গার প্রজেক্টের তথ্য অনুসারে, প্রায় ৬৯ কোটি মানুষ বিশ্বব্যাপী ভয়াবহ দারিদ্রতার সাথে বাস করছে, এর মধ্যে ৬০ শতাংশই নারী। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্য মতে, বিশ্বে এখন প্রায় ৮৫ কোটি মানুষ ক্ষুধায় কাতর। প্রতি বছর বিশ্বে প্রায় ৬০ কোটি মানুষ দূষিত খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়। যার থেকে মারা যায় ৪ লাখ ৪২ হাজার মানুষ। এ ছাড়া ৫ বছরের চেয়ে কম বয়সী শিশুদের ৪৩ শতাংশই অনিরাপদ খাবারজনিত রোগে আক্রান্ত হয়, যার থেকে প্রতি বছর মৃত্যুবরণ করে ১ লাখ ২৫ হাজার শিশু। বাংলাদেশেও অনিরাপদ খাদ্যের ঝুঁকি প্রবল। করোনা মহামারি এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের দামামায় বাংলাদেশে তেল, চাল, ডাল, চিনি, পেঁয়াজ, মাংস, দুধ, ডিমসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্যে সরবরাহ ঘাটতি এবং দামের উত্তাপে সেটি আঁচ করা যায়। ইউক্রেন যুদ্ধ বাংলাদেশকে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে প্রভাবিত করেছে। প্রথমত, গমের বাজার (ইউক্রেন হতে আমদানীতে তৃতীয় বাংলাদেশ, ২৩ লাখ টন), ২য় তেলের বাজার এবং ৩য় সারের বাজার। দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় ৩০ কোটি ৫৭ লাখ মানুষ এখনও খাদ্যাভাবের শিকার৷ এই ধরণের প্রতিকুল অবস্থার উন্নয়নে সমবায়ী কৃষি ক্লাবের ভূমিকা অপরিসীম।
১) দেশের বৃহৎ জনসংখ্যার প্রধান পেশা কৃষির কাংখিত সম্প্রসারণ সেবা প্রচলিত সম্প্রসারণ পদ্ধতি দ্বারা দেয়া কঠিন। তবে একটি নির্দ্দিষ্ট জায়গায় প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করা সহজ। এক্ষেত্রে কৃষক ক্লাব/ সংগঠন/ এআইসিসি সম্প্রসারণ সেবার ইউনিট হিসেবে কাজ করবে ফলে উক্ত এলাকায় উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে ফসলের উৎপাদন বাড়বে এবং খাদ্য নিরাপত্তা বেগবান হবে। এদেশের অধিকাংশ কৃষকই অশিক্ষিত বা অল্প শিক্ষিত। কৃষি তথ্য ও যোগাযোগ কেন্দ্র (এআইসিসি) সদস্যরা স্থানীয় ভাষায় তাদের সমস্যা যেমন তুলে ধরতে পারবে তেমনি তথ্য সহজে কৃষকদেরও বোঝাতে সক্ষম হবে। এর ফলে কৃষক সমাজের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পাবে যা খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনে সহায়ক। যেহেতু সদস্যরা এখান থেকে কম সুদে ঋণ নিতে পারে ফলে তারা তাদের সুবিধা মত ফসল ফলাতে পারবে এবং কৃষি উপকরণ সময় মত কিনতে পারবে। ফসল উৎপাদনের সাথে সরাসরি জড়িত কৃষকদের দক্ষতা বাড়ানোর লক্ষ্যে কৃষক কৃষক ক্লাব/ সংগঠন/ এআইসিসির প্রশিক্ষিত সদস্যরা প্রশিক্ষণ দিবে যাতে ফসলের উৎপাদন বাড়তে পারে। এর ফলে কৃষকের জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে ।
২) আমাদের দেশে কৃষি উৎপাদনের চেয়ে বর্তমানে বাজারজাতকরণে কিছুটা সমস্যা আছে। দেশে কৃষি বাজারজাতকরণে মধ্যস্বত্তভোগীদের প্রভাব আছে। কৃষক ক্লাব/ সংগঠন/এআইসিসির কারণে মধ্যস্বত্তভোগীদের প্রাদুর্ভাব কমাতে, সময়মত কৃষি উপকরণ (সার, বীজ, কীটনাশক ) প্রাপ্যতার তথ্য প্রদানে, পণ্য পরিবহন জ্ঞানের উন্নয়নে, কৃষি বাজার সম্পর্কে কৃষকের জ্ঞান উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে। ইতিমধ্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কৃষক বাজার স্কুল ও কালেকশন পয়েন্ট তৈরী করেছে। যেখান হতে কৃষকেরা উৎপাদিত ফসল বাজারজাতকরণে ভূমিকা রাখছে।
৩) সমলয় চাষাবাদ পদ্ধতি প্রসারে: বর্তমান সরকার কৃষিকে আধুনিক ও লাভজনক করতে টেকসই যান্ত্রিকীকরণের বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে; যার একটি হচ্ছে সমবায়ভিত্তিক সমলয় চাষাবাদ পদ্ধতি। যেখানে একটি মাঠে বা মাঠের একটি অংশের কৃষক সবাই মিলে একসঙ্গে একই জাতের ধান একই সময়ে যন্ত্রের মাধ্যমে রোপণ করবেন। এ পদ্ধতিতে বীজতলা থেকে চারা তোলা, চারা রোপণ ও ধান কাটা সব প্রক্রিয়া যন্ত্রের সাহায্যে সবসময় সম্পাদন করা হবে। এই পদ্ধতিতে সময় শ্রম ও খরচ কমিয়ে চাষীরা নানা জাতের ও সময়ের বীজ নির্বাচন করায় সবার বীজতলাও একসময় গজায় না। ফলে চারা রোপণের সময়ও হয় ভিন্ন, ধানও তাই একসময়ে পাকে না। ধান কাটার জন্য বিভিন্ন জমিতে আলাদা সময়ে কৃষি যন্ত্রগুলোর ব্যবহার তাই অর্থনৈতিকভাবে সাশ্রয়ী হয় না।
৪) ক্রপ বা শস্য জোনিং বাস্তবায়নে সমবায়ী কৃষি ক্লাব/ সংগঠন/এআইসিসি’র ভূমিকা অপরিসীম। কারণ এতে কৃষি উপকরণ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে সার, বীজ, কীটনাশক ডিলারদের দৌরাত্ম কমে। কারণ কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির সুযোগ কম এবং কৃষক কারিগরী জ্ঞানে এগিয়ে থাকার জন্য সহজে অন্য পণ্য ডিলাররা বিক্রয় করতে পারে না। পণ্য পরিবহণ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটবে। কারণ বিভিন্ন কৃষি পণ্যের পরিবহণ ব্যবস্থা বিভিন্ন ধরনের। শিল্পের বিকাশ ঘটে কারণ-কাঁচামাল পাওয়ার নিশ্চয়তা থাকবে। দালাল-ফড়িয়া কৃষি বাজারে কম হয় কারণ ক্রেতা আগে থেকেই নির্ধারিত থাকে। পণ্য গ্রেডিং পদ্ধতির উন্নয়ন হবে। পণ্যের বাজার নিশ্চিত করে বলে কৃষকের ফসল উৎপাদনের পর ঝুঁকি কমে যাবে। পণ্যের মান উন্নয়নে সহায়ক হবে।
৫) দেশে কণ্ট্রাক্ট ফার্মিং বা “এক গ্রাম এক ফসল”-এই ধরনের ব্যবস্থাগুলি এখনো ভালভাবে গড়ে ওঠেনি। কৃষক ক্লাব/ সংগঠন/ এআইসিসি সদস্যদের যদি উদ্বুদ্ধ করা যায় তবে কণ্ট্রাক্ট ফার্মিং গ্রহণ ও প্রচারনায় তাদের কাজে লাগানো যাবে। যা কৃষি ভিত্তিক শিল্প কারখানা গড়ে ওঠা এবং শিল্পের কাঁচামাল প্রাপ্যতা নিশ্চতকরণে সহায়ক। কৃষকদের সমবায় জ্ঞান না থাকা এবং কৃষি সমবায় ব্যবস্থা গড়ে না ওঠা কৃষি উন্নয়নের জন্য প্রতিবন্ধক। আইল এর কারনে কৃষকের জমি বিভিন্ন জায়গায় ছড়ানো ছিটানো থাকে। তাই ইচ্ছা থাকলেও মূলধনের অভাবে উন্নত কৃষি প্রযুক্তি বা উপকরণ কোনটিই কাজে লাগাতে পারে না। একটি পুরাতন তথ্যে দেখা যায় বাংলাদেশে সকল আইল যোগ করলে তা বৃহত্তর বগুড়া জেলার চেয়ে বড় হয়। বর্তমানে জমির আইল আরোও বেড়েছে তা নিশ্চিত। যদি কৃষক ক্লাব/ সংগঠন/ এআইসিসিকে উন্নত কৃষি কলাকৌশল কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে ধরা যায় তবে সমবায় ভিত্তিক কৃষি কার্যক্রমকে উৎসাহিত করা সহজ হবে ফলে কৃষি উৎপাদন বাড়বে এবং গ্রামীণ জীবনমান উন্নয়ন হবে।
৬) বসতবাড়ীর পরিমান বাংলাদেশে প্রায় ১,৮৪,৯০০০ একর। এত বড় কৃষি ইউনিটকে কার্যকারী করতে হলে দরকার উন্নত কৃষি জ্ঞান আর তা সম্প্রসারণের জন্য আমরা কৃষক ক্লাব/ সংগঠন/ এআইসিসিকে কাজে লাগাতে পারি। এছাড়া বিভিন্ন পতিত জায়গায় সমবায় ভিত্তিক চাষাবাদ করে উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়ক হতে পারে। আন্তঃ কৃষক সংগঠন/এআইসিসিতে যোগাযোগ করার যেহেতু ব্যবস্থা থাকে সেহেতু বিভিন্ন তথ্য আদান প্রদান এর মাধ্যমে সম্ভব। এর ফলে এক জায়গার ভাল প্রযুক্তি অন্য জায়গায় বিস্তার ঘটবে এর ফলে কৃষি উৎপাদন বাড়বে।
৭) খাদ্য নিরাপত্তা অর্জন করতে হলে বৈশ্বিক উষ্ণতাকে অবশ্যই মোকাবেলা করতে হবে আর এজন্য উষ্ণ আবহাওয়া সহিষ্ণু যেমনঃ গম, ভুট্টা, বাজরা, তিল, জোয়ার, এসব ফসলের আবাদ করতে হবে। তথ্য প্রযুক্তি ও জ্ঞানের দিক থেকে কৃষক ক্লাব/ সংগঠন/ এআইসিসি সদস্যরা এগিয়ে থাকায় উন্নত জাত বিস্তারে সহায়ক হবে। এছাড়া শস্য বহুমূখীকরণ কার্যক্রমে মন্থরতা দূর করতে সহায়ক হবে। খাদ্য নিরাপত্তা অর্জন করতে হলে পতিত জায়গার যথাযথ ব্যাবহার করতে হবে। এজন্য সমবায় ভিত্তিতে নদীর ধার দিয়ে বেড়ী বাঁধের উপর বড় আকারের গাছ লাগাতে এই ক্লাবগুলো ভূমিকা রাখতে পারে।
৮) কৃষি তথ্য সার্ভিস কর্র্তৃক নির্মিত যুগোপযোগী কৃষি তথ্য ভিত্তিক বিনোদনমূলক ডকুড্রামা প্রচারণায় কার্যকারী ভূমিকা রাখতে পারবে। এর ফলে সরকারী কৃষি বিষয়ক তথ্য দ্রুত সম্প্রসারণ ঘটবে। উন্নত ইলেট্রনিক্স সামগ্রী ও প্রযুক্তি থাকার জন্য কৃষি তথ্য ও যোগাযোগ কেন্দ্র হতে যোগ্য ও মেধাবি কৃষক তৈরী হয়ে তাঁরা সম্প্রসারণ কাজে ভূমিকা রেখে নিরাপদ, পরিবেশবান্ধব এবং টেকসই কৃষি ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে পারে। কৃষি বিষয়ক তথ্য সরকারি ও বেসরকারি টিভি চ্যানেল এবং রেডিওতে প্রচার হয় কিন্তু কৃষক তাঁর বিভিন্ন সমস্যার জন্য তা সময় মতো দেখতে বা তথ্য ভালভাবে বুঝতে পারেনা। এগুলি নিজ এলাকার ভাষায় বোধগম্য করে কৃষক ক্লাব/সংগঠন/এআইসিসি প্রচার করে কৃষি উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে।
৯) খাদ্য নিরাপত্তা অর্জন করতে হলে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের কোন বিকল্প নাই। শুধু ধানের ওপর নির্ভরশীল থাকলে কখনও খাদ্যনিরাপত্তা অর্জন হবে না। এ জন্য খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনে আলু, ভুট্টা, গম ইত্যাদি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে প্রচারণা চালিয়ে উদ্বুদ্ধ করতে কৃষক সংগঠন/ক্লাব/কৃষি তথ্য ও যোগাযোগ কেন্দ্র ভূমিকা রাখতে পারে।
১০) এছাড়া কমিউনিটি বীজতলা, বনায়ন, সমন্বিত সার ও কীটনাশক প্রয়োগ- এসব ক্ষেত্রেও কৃষক ক্লাব/সংগঠন/এআইসিসি গুলি অগ্রনী ভূমিকা পালন করতে পারে।
কৃষিনীতি ২০১৮-এর ১৬.৪ উপ-অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতকরণে সমবায়ভিত্তিক বিপণনের’ সহযোগিতা ও উৎসাহ প্রদানের কথা বলা হয়েছে। এই ধরণের কার্যক্রমের আরোও প্রতিফলনের মাধ্যমে কৃষি সেক্টর আরোও এগিয়ে যাবে। বর্তমানে বাংলাদেশ বিশ্বে ধান উৎপাদনে ৩য়, সবজি চাষে তৃতীয়, মিঠা পানিতে মাছ উৎপাদনে এবং ছাগল উৎপাদনে ৪র্থ সহ বিভিন্ন সুখকর পরিসংখ্যান সহ বিশ্বে কৃষিতে বাংলাদেশ রোল মডেল। তাই সামগ্রিক কৃষি উন্নয়নের জন্য কৃষি ক্লাবের ভূমিকা অনেক। এই ধরনের ক্লাব সরাসরি গ্রামীণ উন্নয়নের সাথে সাথে খাদ্য নিরাপত্তা এবং শহরমূখীতা রোধ করতে সক্ষম। তবে বর্তমান কৃষি বান্ধব সরকারের যুগোপযোগী নীতিমালা ও কর্মপরিকল্পনা আছে তা দেশের সূষম উন্নয়ন এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে সকলের কাংখিত উন্নয়নে অবদান রাখবে, তা নিঃসন্দেহে বলা যায়।
লেখক: আঞ্চলিক কৃষি তথ্য অফিসার, কৃষি তথ্য সার্ভিস, রাজশাহী।