প্রবাসী গবেষণা ডেস্ক সেন্ট্রাল আলবার্টা, কানাডা: বাংলাদেশে সামুদ্রিক খাদ্য সন্ধান, মৎস্য আহরণ, উন্নয়ণ এবং অর্থনীতিতে এর অবদান শীর্ষক এক ভার্চুয়াল আলোচনা ২০ নভেম্বর (রোববার) সকাল ৯টায় (বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় ) অনুষ্ঠিত হয়।
বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট ও চলমান খাদ্য পরিস্থিতির উপর আলোকপাত করে বিশিষ্ট গবেষক, লেখক, সাংবাদিক ও শিক্ষাবিদগনের অংশ গ্রহণে বাংলাদেশ নর্থ আমেরিকান জার্নালিস্টস নেটওয়ার্ক বাংলাদেশে সামুদ্রিক খাদ্য সন্ধান, মৎস্য আহরণ, উন্নয়ণ এবং অর্থনীতিতে এর অবদান বিষয়ক এ আলোচনার আয়োজন করে. এতে সভাপতিত্ব করেন কানাডা প্রবাসী লেখক , গবেষক ও সাংবাদিক বীর মুক্তিযোদ্বা দেলোয়ার জাহিদ।
গবেষক দেলোয়ার জাহিদের লেখা মূল প্রবন্ধটি অনুষ্ঠানে পাঠ করেন দৈনিক ভোরের সূর্যোদয় পত্রিকার সম্পাদক মোঃ ফিরোজ মিয়া। মুখ্য আলোচক হিসেবে অংশ গ্রহণ করেন বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ণ একাডেমী (বার্ড) এর সাবেক পরিচালক, ব্যবস্থাপনা, মানবসম্পদ উন্নয়ণ, সংস্থাসমূহের আচরণ, প্রশিক্ষণ এবং গবেষণা পদ্ধতি বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ও লেখক অধ্যাপক ড. এস. জে আনোয়ার জাহিদ।
মূল প্রবন্ধে সমুদ্র অর্থনীতির উপর নির্ভরশীল সমপর্যায়ের দেশগুলোর অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে সমুদ্র ভিত্তিক একটি অর্থনীতি গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবির্তন আনার উপর জোরারোপ করে টেকসই উন্নয়নে সমুদ্র সম্পদকে ব্যবহারের পরিকল্পনা ও সুদূর প্রসারী কৌশল গ্রহণের আহ্বান জানান লেখক।
মুখ্য আলোচক ড. আনোয়ার বলেন, সমূদ্র অর্থনীতি কে শক্তিশালী ও সমৃদ্ধ করে গড়ে তুলতে অবকাঠামো তৈরি, প্রশিক্ষিত লোকবল নিয়োগ, প্রযুক্তিগত উন্নয়ণ, দক্ষতা বৃদ্ধি, রপ্তানিখাতের উন্নয়ণ, মৎস্য আহরণ, মৎস্যজাত খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ফুড ফেস্টিভ্যালের আয়োজন করা প্রয়োজন।
মুখ্য আলোচক বাংলাদেশ ও নর্থ আমেরিকার খাদ্য সংস্কৃতির তুলনামূলক আলোচনা করে তাতে বহু-খাদ্য- সংস্কৃতির প্রভাবকে বিশ্লেষণ করেন । এবিষয়ে সামুদ্রিক খাদ্যের তুলনামূলক ব্যবহারের বিষয় তুলে ধরে খাদ্য হিসেবে তা গ্রহণের উপর ও জোরারোপ করেন। বাংলাদেশের সামুদ্রিক মৎস্য আইন ২০২০ কে উন্নত দেশগুলোর সাথে সামজ্ঞস্য রেখে বিশ্ব অর্থনীতিতে অংশ গ্রহণের উপযোগী করে গড়ে তোলার উপর জোর দেন. এবং দেশের গণমাধ্যমকে সমুদ্র অর্থনীতির সম্ভাবনা গুলোকে তুলে ধরার আহ্বান জানান।
মৎস্যখাত ও পর্যটন শিল্পকে জাতীয় আয়ের উদীয়মান উৎস হিসেবে পরিণত করা, সামুদ্রিক ও উপকূলীয় পর্যটন বৃদ্ধির জন্য পর্যাপ্ত অবকাঠামো গড়ে তোলার উপর গুরুত্বারোপ করে এনময় বক্তব্য রাখেন এ এস এম শামসুল হাবিব, যুগ্ম সম্পাদক, কোষাধ্যক্ষ মো: সাজ্জাদ হোসেন.এসরার জাহিদ খসরু, নারী উদ্যোক্তা সাবরিন আক্তার ও কানাডা থেকে সাইফুর হাসান প্রমুখ।
আলোচকগণ অভিমত দেন যে সাসটেইনেবল ব্লু ইকোনমি (এসবিই) সংক্রান্ত নীতিনির্ধারণের বিষয়ে বাংলাদেশের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য নীতিনির্ধারকদের >প্রাথমিক পর্যায়ে ব্লু ইকোনমি প্রোগ্রামের জন্য ৫ বছরের একটি স্কিম চালু, >প্রযুক্তিগত সহায়তার জন্য আইসিটি মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় এবং অর্থ মন্ত্রণালয় এর সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ, > সাসটেইনেবল ব্লু ইকোনমির জন্য পরিবেশগত অবক্ষয় এবং সমুদ্রের পানির দূষণ কমাতে কিছু কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়ার উপর ও জোর দেয়া হয়।
সভাপতি দেলোয়ার জাহিদ বলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সরকার সামুদ্রিক বিশ্বকে অন্বেষণ করতে ২০১৩ সালে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এ পদক্ষেপের ফলে বিশ্ববিদ্যালয়টি বিভিন্ন ক্ষেত্রে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর উভয় কোর্স পরিচালনা করা শুরু করেছে। যার মধ্যে রয়েছে জাহাজের নিরাপদ অপারেশন, হ্যান্ডলিং এবং ম্যানেজমেন্ট, বন্দর ও শিপিং অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, মেরিটাইম টেকনোলজি, নেভাল আর্কিটেকচার, ওশানোগ্রাফি, মেরিন সায়েন্স, হাইড্রোগ্রাফি, ওশান ইঞ্জিনিয়ারিং, অফশোর ইঞ্জিনিয়ারিং, কোস্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং, মেরিটাইম ল, মেরিটাইম সিকিউরিটি অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ, বিজনেস স্টাডিজ, ইনফরমেশন অ্যান্ড কম্পিউটার টেকনোলজি, এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স ইত্যাদি বিষয় যাতে পড়াশুনা করে দেশ ও বিদেশে বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে।
সভাপতি খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন প্রবণতাকে উৎসাহিত করতে গণমাধ্যমকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে আলোচনা সমাপ্ত করেন।