বাংলার বিজয়ের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু

প্রফেসর ড. এ. কে. এম. জাকির হোসেন:আজ ১৬ ডিসেম্বর। মহান বিজয় দিবস। বাঙালী জাতির গর্বের দিন। পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশের আত্মপ্রকাশের দিন। ১৯৭১ সালের এ দিনে দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে বিজয়ী বাংলাদেশের মানুষ মাথা তুলে দাঁড়ায়। এ দিনে অর্জিত হয়েছিল একটি স্বাধীন ভুখন্ড, বাঙালি জাতি পেয়েছে নিজস্ব পতাকা ও জাতীয় সংগীত। বাঙালি জাতির এই বীরত্ব ও দেশাত্মবোধ বিশ্বে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করে।

বাঙালি জাতির শৌর্যবীর্য এবং বীরত্বে এক অবিস্মরণীয় দিন আজ। শোষণ-বঞ্চনার অবসান ঘটাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে স্বাধীনতার যে যুদ্ধ শুরু হয়েছিল, দীর্ঘ নয় মাস পর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে তার সফর পরিণতি পায়। অর্জিত হয় মহান মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়। বিশ্বমানচিত্রে জন্ম নেয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। মহান এ দিবসটিতে কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে শুভানুধ্যায়ী নকলকে জানাই বিজয়ের শুভেচ্ছা।

বিজয়ের আজকের এই দিনে আমি গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি স্বাধীনতার মহান স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, মহান স্বাধীনতার অবিসংবাদিত নেতা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-কে যাঁর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে পরিচালিত হয়েছিল বাঙালির মুক্তির সংগ্রাম। আমি কৃতজ্ঞতাভরে স্মরণ করছি জাতীয় চার নেতাসহ মহান মুক্তিযুদ্ধের ত্রিশ লাখ শহীদ ও দুইলাখ সম্ভ্রমহারা মা-বোনসহ সকল মুক্তিযোদ্ধাদের যারা অকাতরে দেশের জন্য বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিতে বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি। এই দিনটির জন্যই সারাবিশ্বে বাঙালি জাতি ও বাংলাদেশের মর্যাদা আজ সুপ্রতিষ্ঠিত।

বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি, জনগণের জীবন মান বৃদ্ধি, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ইস্যুতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুদৃঢ় ও বিচক্ষণ নেতৃত্বের কারণে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ এখন সুপরিচিত নাম। বিশেষ করে কৃষির প্রতি বঙ্গবন্ধু ও তাঁর সুযোগ্যকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদূরপ্রসারি দৃষ্টিভঙ্গি বাংলাদেশকে আমূল পরিবর্তন করেছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়ক বেয়ে এগিয়ে চলেছে। বাংলাদেশকে ২০৪১-এর মধ্যে উন্নত দেশের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠাদানের লক্ষ্যে অবিচল থেকে বর্তমান সরকার তার আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের বিদ্যালয়গুলোতে বিনা মূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ, প্রায় শতভাগ উপস্থিতি, শিক্ষার বিভিন্ন স্তরে জেন্ডার সমতা সহ ব্যাপক প্রণোদনা দান, শিক্ষার সর্বস্তরে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষার ওপর বিশেষ গুরুত্বদানের মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে আইটি শিক্ষাকে তৃণমূল পর্যায়ে বিস্তৃতকরণ, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উচ্চতর শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন ইত্যাকার কার্যক্রমের সুফল জাতি ইতোমধ্যেই পেতে শুরু করেছে। গবেষণা, প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও প্রয়োগ, বর্ধিত উৎপাদন ও দারিদ্র্য হ্রাস, বর্ধিত কর্মসংস্থান ও রেমিট্যান্স আর এরই সমান্তরালে একটানা উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জনে আমাদের দক্ষ জনশক্তি প্রধান ভূমিকা পালন করে চলেছে।

এক সাগর রক্ত আর লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের সোনার বাংলাদেশ। একটি নতুন দেশকে সোনার দেশ হিসেবে গড়ে তোলার দায়িত্ব সকলের। বিজয় দিবস স্বাধীনতাকামী বাঙালির পবিত্র চেতনার ধারক। সেই চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক মুক্তি ও সমৃদ্ধির পথে দেশ ও জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। মহান বিজয় দিবসে এটাই হোক আমাদের দৃঢ় অঙ্গীকার। 'জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু। বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।

লেখকঃভাইস-চ্যান্সেলর কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, কুড়িগ্রাম।