ড. মো. সিদ্দিকুর রহমান: স্বাধীনতা আন্দোলনের অনেক স্লোগানের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি স্লোগান ছিল- “বাংলার প্রতি ঘর, ভরে দিতে চাই মোরা অন্নে।”এই স্লোগান তখন কৃষক-শ্রমিক-মেহনতি মানুষকে দেশপ্রেমে উদ্দীপ্ত করেছিল। বহু কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা অর্জনের পর যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে বঙ্গবন্ধু তাই সর্বপ্রথমে সবুজ বিপ্লবের ডাক দিয়েছিলেন। ১৯৭৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে বলেছিলেন, “কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছি সবুজ বিপ্লবের কথা বলতে।” একই ভাষণে কৃষিবিদদের সরকারি চাকরিতে প্রথম শ্রেণির মর্যাদা ঘোষণা করে তিনি বলেছিলেন, “দুনিয়া ভরে চেষ্টা করেও আমি চাউল কিনতে পারছি না। চাউল পাওয়া যায় না। যদি চাউল খেতে হয় আপনাদের চাউল পয়দা করে খেতে হবে।” বঙ্গবন্ধুর সেদিনের ঘোষণাকে এ দেশের কৃষিবিদ, কৃষিবিজ্ঞানী ও কৃষকরা অনুপ্রেরণা হিসেবে নিয়েছিলেন বলেই অতীতের খাদ্য ঘাটতির দেশ আজ খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশে পরিণত হয়েছে। দেশে এখন ভাতের অভাব নেই। শুধু তাই নয়, নিজেদের প্রয়োজন মিটিয়ে এখন আমরা কিছু চাল বিদেশেও রপ্তানি করতে পারছি। এটি আমাদের জাতীয় জীবনের একটি অসামান্য অর্জন।
কৃষিক্ষেত্রে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুদূরপ্রসারী সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের কৃষিতে এক দীর্ঘমেয়াদি ও যুগান্তকারী পরিবর্তনের সূচনা করে। অন্যান্য টেকনিক্যাল গ্রাজুয়েট যেখানে সরকারি চাকরিতে প্রথম শ্রেণির মর্যাদায় যোগদান করতেন, সেখানে কৃষি গ্রাজুয়েটদের সরকারি চাকরিতে দ্বিতীয় শ্রেণির মর্যাদায় যোগদান করতে হতো। একই দেশে টেকনিক্যাল গ্রাজুয়েটদের মধ্যে বিদ্যমান বৈষম্য কর্মক্ষেত্রে এক জটিল ও বহুমাত্রিক টানাপোড়েন সৃষ্টি করেছিল। কৃষিশিক্ষা, কৃষি গবেষণা, কৃষি সম্প্রসারণসহ কৃষির সর্বক্ষেত্রে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছিল । পাকিস্তান সরকার আমাদের কৃষির উন্নতি হোক, সে বিষয়ে ভীষণ রকম উন্নাসিক ছিল। সে কারণে বিভিন্ন প্রকার টেকনিক্যাল গ্রাজুয়েটদের মধ্যে বিদ্যমান বৈষম্য নিরসনে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। তা ছাড়া কৃষিকে তারা তেমন গুরুত্বই দেয়নি।
বঙ্গবন্ধু বুঝতে পেরেছিলেন, মেধাবী শিক্ষার্থীদের যদি কৃষিশিক্ষায় আগ্রহী করে তোলা না যায়, তাহলে কৃষিতে কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জন করা কখনও সম্ভব নয়। অতঃপর সবদিক বিবেচনা করেই বঙ্গবন্ধু শিক্ষার্থীদের কৃষিশিক্ষায় আকৃষ্ট করার জন্য বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (বাকসু) কর্তৃক বিশ্ববিদ্যালয় সমাবর্তন মঞ্চে (বর্তমান বঙ্গবন্ধু স্মৃতি চত্ত্বর) আয়োজিত সংবর্ধনা সভায় ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়াদের মতো কৃষিবিদদের চাকরিক্ষেত্রে প্রথম শ্রেণির পদমর্যাদা ঘোষনা দেন। তাঁর ওই ঐতিহাসিক ঘোষণার পথ ধরে আজ কৃষিবিদরা সরকারি চাকরিক্ষেত্রে প্রথম শ্রেণির গেজেটেড পদমর্যাদায় অধিষ্ঠিত।
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করার যা ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত থাকবে। তিনি বাংলাদেশকে ‘সোনার বাংলা” হিসাবে দেশের কৃষক ও কৃষকদের উন্নয়নশীল হিসাবে দেখতে চেয়েছিলেন । ১৯৭৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি তিনি ময়মনসিংহের ‘বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে এক বক্তব্যে দেশের পল্লী অঞ্চলের বিকাশকে গুরুত্ব দিয়েছিলেন। কারণ, তিঁনি বুঝতে পেরেছিলেন যে গ্রামগুলি দেশের উন্নয়নের কেন্দ্রস্থল। গ্রামগুলি যখন অর্থনৈতিকভাবে উন্নত হবে এবং সমৃদ্ধ হবে, তখন পুরো দেশ এগিয়ে যাবে। তাঁর অদম্য ইচ্ছা ছিল যে কোনো উপায়ে কৃষকের স্বার্থরক্ষা করা। কেননা কৃষকই এ দেশের আসল নায়ক যারা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে আমাদের সবার অন্ন জোগায়। কৃষকের চলমান, চাহিদা যথোপযুক্তভাবে নিশ্চিত করতে পারলে কৃষক অনেক আগ্রহে স্বতঃস্ফূর্ততায় কৃষিতে নিজেকে বিনিয়োগ করতে পারবে, উন্নয়নের জোয়ার বইবে। কৃষকের উন্নয়ন হলে দেশের উন্নয়ন সময়ের ব্যাপার। বঙ্গবন্ধু ভাবতেন এত দিন আমরা শোষণে নিষ্পেষণে আমাদের মেধা প্রতিভাকে কাজে লাগাতে পারিনি, এখন সময় এসেছে নিজেদের দেশে নিজেদের জ্ঞান মেধা দক্ষতাকে পুরোপুরি কাজে লাগিয়ে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো। আমরা তখন গর্বের সঙ্গে বলতে পারব এই তো আমার স্বনির্ভর সোনার বাংলাদেশ।
বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, “কৃষির সার্বিক উন্নয়ন করতে আমাদের প্রথমে একটি সমীক্ষা প্রয়োজন যা জরিপ ছাড়া কোনও পরিকল্পনা সফল হবে না। এই কারণে, কাজ শুরু করার আগে আমাদের অবশ্যই একটি সঠিক সমীক্ষা করা উচিত । আমাদের জরিপের ভিত্তিতে পরিকল্পনা করা উচিত। আর্থ-সামাজিক সমস্যার কারণে জমির বিভাজন দিন দিন বাড়ছে। আমরা যদি সমন্বিত কৃষি খামার স্থাপন করতে না পারি তবে কৃষির উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে। আমরা আমাদের প্রত্যাশিত কৃষি উৎপাদন নিশ্চিত করতে পারব না। আমাদের খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে আমাদের একীভূত কৃষিক্ষেত্রকে গুরুত্ব প্রদান করতে হবে। কৃষকদের সর্বশেষ চাষের পদ্ধতি সম্পর্কে শিক্ষিত করার জন্য আমাদের অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই তাদের অভিজ্ঞতা কৃষকদের সাথে ভাগ করে নিতে হবে। তারপরে, আমরা আমাদের লক্ষ্য সাফল্য অর্জন করতে পারি। কো-অপারেটিভ সোসাইটির মাধ্যমে আগাতে পারলে আমাদের কৃষির উৎপাদন এবং সার্বিক উন্নয়ন দুটিই মাত্রা পাবে। অধিক শস্য উৎপাদনের জন্য আমাদের সবার সমন্বিত কৃষি ব্যবস্থার প্রতি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। মাঠের ফসল, গবাদিপশু, মাছ, পরিবেশ সব কিছুর মধ্যে সুষ্ঠু সমন্বয় করতে হবে। তা না হলে আমরা যুক্তিযুক্তভাবে এগোতে পারব না । মানুষকে অধিক মাত্রায় শিক্ষিত করে তুলতে হবে। বিশেষ করে কৃষিশিক্ষা কৃষি অভিজ্ঞতা আর জ্ঞানে সংশ্লিষ্ট সবাইকে শিক্ষিত করতে হবে। তখন এমনিতেই আমাদের উন্নয়ন বেগবান হবে” । আরেকটি কথা বলেছেন বঙ্গবন্ধু; “গ্রামের কৃষক অনেক অভিজ্ঞ অনেক দক্ষ। তাদের সাথে শেয়ার করে সমন্বয় করে আধুনিক কৃষিতে এগোতে হবে। তবেই আমরা আমাদের কাঙ্খিত সফলতা পাবো অনায়াসে " ।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, “শুধু কাগজে-কলমে আর বই পড়েই কৃষিকাজ হয় না। ছোট ভাইয়েরা তোমরা মনে কিছু করবে না। বই পড়ে তোমরা যা শিখ, গ্রামে যারা অর্থাৎ বুড়া কৃষকরা নিজের অভিজ্ঞতায় কম শেখে না। যদি তাদের জিজ্ঞেস করো এই জমিতে কী লাগবে, কতটুকু সার লাগবে, সে নির্ভুল বলে দিতে পারবে। তোমরা ৫ বছর বই পড়ে যা শিখবে না, তার কাছে দেখ উত্তর সঙ্গে সঙ্গে পেয়ে যাবে। বইয়ের সঙ্গে সঙ্গে একটু প্র্যাকটিকেল করতে হবে"।
মানুষের ওপর জোর করে কিছুই চাপিয়ে দেয়া যাবে না এটি খুব ভালো করে জানতেন বঙ্গবন্ধু। তাই তো তিনি বলেছেন করে দেখাতে হবে, এতে কৃষক নিজে নিজে শিখে নিজের আঙিনায় বাস্তবায়ন করবে। এক গ্রামের ২০ জনকে একসাথে ক্ষেতখামারে হাতে কলমে কাজ দেখালে পাশের অন্য কৃষক দেখে দেখে নিজের জমিতে বাস্তবায়ন করলে উৎপাদন বেড়ে যাবে। তখন সারা বাংলার অন্যরা এগিয়ে আসবে সম্পৃক্ত হবে উন্নয়নের মূলধারায়। কেননা আমাদের কৃষক দেখে বিশ্বাস করতে অভ্যস্ত। তিনি কৃষিবিদদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, “আপনারা যারা কৃষি শিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছেন আপনাদের গ্রামে গিয়ে কৃষকের সাথে মিশে যেতে হবে, মনোযোগ দিতে হবে তাদের চাহিদা আর কর্মের ওপর, তবেই তারা সাহসী হবে, আগ্রহী হবে, উন্নতি করবে। ফলবে সোনার ফসল ক্ষেত ভরে। আপনারা এখন শহরমুখো হওয়ার কথা ভুলে যান। গ্রাম উন্নত হলে দেশ উন্নত হবে, তখন আপনারা আপনা-আপনি উন্নত হয়ে যাবেন। গ্রামভিত্তিক বাংলার উন্নতি মানে দেশের উন্নতি, আর আপনাদের উন্নতি তখন সময়ের ব্যাপার। শহরের ভদ্রলোকদের দিকে তাকিয়ে আপনাদের চিন্তা বা আফসোস করার কোনো কারণ নেই। কেননা গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নের দিকে আমাদের সবার ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। কৃষক বাঁচাতে হবে, উৎপাদন বাড়াতে হবে, তা না হলে বাংলাদেশ বাঁচতে পারবে না" ।
অনেকের আগ্রহ থাকতে পারে কৃষি উন্নয়নে বঙ্গবন্ধুর অর্থ বরাদ্দ কেমন ছিল? বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন... "খাদ্য বলতে শুধু ধান, চাল, আটা, ময়দা আর ভুট্টাকে বুঝায় না বরং মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, শাকসবজি এসবকেও বুঝায়। সুতরাং কৃষির উন্নতি করতে হলে এসব খাদ্যশস্যের উৎপাদন উন্নতি করতে হবে”। ১৯৭২-৭৩ সালে ৫০০ কোটি টাকা উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ ছিল এর মধ্যে ১০১ কোটি টাকা শুধু কৃষি উন্নয়নের জন্য রাখা হয়েছিল । এতে তখন থেকেই কৃষির প্রতি, কৃষি সম্প্রসারণের প্রতি, কৃষি উন্নয়নের প্রতি তাঁর আন্তরিকতা প্রকাশ পায়। বঙ্গবন্ধু ভাবতেন সবার আগে দরকার খাদ্যের। খাদ্যের নিশ্চয়তা না দিতে পারলে সব উন্নয়ন কার্যক্রম বিফলে যাবে। সুতরাং নিজেদের প্রয়োজনীয় খাদ্য নিজেরা উৎপাদন করতে হবে। কিন্তু তিনি এও বলতেন, “সবুজ বিপ্লবের কথা শুধু মুখে বললেই চলবে না। এর সাথে যেসব সমস্যা আছে সেগুলোকে যাচাই-বাছাই করে সমাধানের পথ খুঁজে বের করতে হবে। তবেই সবুজ বিপ্লব সফল হবে"।
তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে, দেশের কৃষকরা উন্নত হলে দেশের উন্নয়ন হবে। কৃষক যাতে আরও ফসল জন্মাতে পারে সে জন্য তিনি মানসম্পন্ন বীজ, সার, কীটনাশক ও সেচ দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। প্রাতিষ্ঠানিক কৃষি উন্নয়ন তথা কৃষি এবং কৃষকের কথা ভেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের জনগণের ক্ষুধা ও দারিদ্র্য মুক্তির লক্ষ্যে কৃষি উন্নয়নের বৈপ্লবিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। কৃষির দূরদর্শিতাকে অসামান্য পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে। এ কারণেই তিনি কৃষিভিত্তিক প্রতিষ্ঠান স্থাপন, পুনঃসংস্করণ, উন্নয়ন এবং ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন, উদ্যান উন্নয়ন বোর্ড, তুলা উন্নয়ন বোর্ড, বীজ প্রত্যয়ন সংস্থা, বাংলাদেশ আখ গবেষণা ইনস্টিটিউট, মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনসহ অনেক নতুন প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করেন ।
কৃষি বিষয়ক বিদ্যমান বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলোর কাঠামো ও কার্যক্রমের আমূল পরিবর্তন ও সংস্কারের মাধ্যমে এবং প্রযুক্তি চর্চায় মেধা আকর্ষণের যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। জাতির জনক বলেছিলেন, “খাদ্যের জন্য অন্যের ওপর নির্ভর করলে চলবে না। আমাদের প্রয়োজনীয় খাদ্য আমাদেরই উৎপাদন করতে হবে। আমরা কেন অন্যের কাছে খাদ্য ভিক্ষা চাইব। আমাদের উর্বর জমি, আমাদের অবারিত প্রাকৃতিক সম্পদ, আমাদের পরিশ্রমী মানুষ, আমাদের গবেষণা সম্প্রসারণ কাজে সমন্বয় করে আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করব। এটা শুধু সময়ের ব্যাপার" ।
কৃষি উপকরণে বঙ্গবন্ধুর চিন্তাচেতনা যা ছিল আজ এত বছর পরেও আশ্চর্য হতে হয়। কৃষিশিক্ষা, মানসম্মত বীজ উৎপাদন এবং বিতরণ, সুষ্ঠু সার ও সেচ ব্যবস্থাপনা, কৃষিতে ভর্তুকি, বালাই ব্যবস্থাপনা, সমন্বিত ফসল ব্যবস্থাপনা, খামারভিত্তিক ফসল ব্যবস্থাপনা, সমবায়ভিত্তিক চাষাবাদ, ভেঙে যাওয়া অর্থনীতি পুনর্গঠন, মিল্কভিটা পুনর্গঠন, সার, সেচ, বীজ বিষয়ক কার্যক্রম এসবের ওপর সর্বাত্মক জোর দিয়েছেন। কেননা তিনি জানতেন এগুলো যথাযথভাবে না করতে পারলে আমরা অনেক পিছিয়ে যাবো। বিশেষ করে রাসায়নিক সারের বিষয়ে তিনি বলেছেন, “আমাদের যে সার কারখানাগুলো আছে এগুলোকে নিশ্চিত উৎপাদনমুখী করতে হবে বেশি করে । প্রয়োজনে আরও নতুন নতুন সারের কারখানা প্রতিষ্ঠা করতে হবে কৃষি বিপ্লব বাস্তবায়নের জন্য । সুতরাং আমরাও একান্তভাবে বিশ্বাস করি আমাদের উন্নয়নের কর্মসূচি পরিকল্পনা গ্রহণ করার আগে সুষ্ঠু সমন্বিত বাস্তব অবস্থাভিত্তিক কর্মসূচি হাতে নিতে হবে। সর্বোচ্চ শ্রম, মেধা, বিনিয়োগ করে এগিয়ে গেলে আমরা নিশ্চিত সফল হবোই”। বঙ্গবন্ধুর মতোই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বারবার দেশের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলছেন, এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে। যে যেভাবেই পারেন, প্রতিটি ইঞ্চি জায়গার সদ্ব্যবহার করবেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশ। তার পরেও বসে থাকলে চলবে না।
আমাদের সামনে এসডিজি ২০৩০, ভিশন ২০৪১ এবং ডেল্টা প্লান-২১০০ যা বাস্তবায়নের মাধ্যমে উন্নত রাষ্ট্রের স্বপ্ন। আমার গ্রাম আমার শহর- এ স্লোগান নিয়ে বর্তমান শেখ হাসিনা সরকার গ্রাম ও শহরের ব্যবধান কমানোর জন্য কাজ করছেন। এসডিজিও, ডেল্টা প্লানসহ সব কার্যক্রম সমন্বিত বাস্তবায়নের মাধ্যমেই বাংলাদেশ হয়ে উঠবে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সত্যিকারের সোনার বাংলা, যেমনটি বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন।
লেখক: প্রফেসর, মেডিসিন বিভাগ, বাংলাদেশ কৃৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ।