বানভাসি মানুষের সাহায্য-সহযোগিতা করা ইসলামের বিধান

ইসলামিক ডেস্ক:দেশের বিভিন্ন স্থানে বিশেষ করে বৃহত্তর সিলেট সহ কুড়িগ্রাম, নেত্রকোনা অঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির অবনতির কারণে অসহায় মানুষ এখন পানিবন্দী অবস্থায় জীবনযাপন করছে। এসময় টাকা-পয়সা, খাদ্য, বস্ত্র, পানি, ওষুধ যার যা কিছু আছে, তা নিয়েই স্বতঃস্ফূর্তভাবে বন্যাদুর্গতদের সাহায্যে এগিয়ে আসার এখনই সময়। সমাজের বিত্তবানদের বানভাসি মানুষের পাশে দাঁড়ানো ও সাহায্য-সহযোগিতা করা ইসলামের বিধান।

বন্যায় অনেক দরিদ্র পরিবারের বাড়িঘর, সহায়-সম্পদ ও জীবন-জীবিকার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বহু রাস্তাঘাট, দোকানপাট, বসতভিটা, জমি-জিরাত ও ফল-ফসল নিশ্চিহ্ন ও বিলীন হয়ে গেছে। এ অবস্থায় বন্যাকবলিত অঞ্চলের অসহায় বানভাসি মানুষ কতটা দুঃখ-কষ্টের মধ্যে পড়েছে, তা সহজেই অনুমেয়। বন্যাদুর্গত বিভিন্ন এলাকায় পানিবাহিত নানা ধরনের রোগব্যাধি ছড়িয়ে পড়েছে। প্রয়োজনীয় ওষুধপত্রের অভাবে তারা সুচিকিৎসা পাচ্ছে না।  বিপদের সময় বানভাসি মানুষের সেবায় এগিয়ে এসে প্রত্যেক সামর্থ্যবান ব্যক্তি তাদের পাশে দাঁড়ানো উচিত। বিপদগ্রস্ত লোকেরা সাহায্যের অর্থ, ত্রাণসামগ্রী, খাদ্য, বস্ত্র, ওষুধ, খাওয়ার স্যালাইন, বিশুদ্ধ পানি বা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রে খুবই উপকৃত হয়।

সমাজে যারা বিত্তবান, বর্তমান প্রাকৃতিক দুর্যোগপূর্ণ সময়ে তারা হাত গুটিয়ে বসে থাকতে পারে না। এ জন্য দেশের ধনাঢ্য ও সঙ্গতিসম্পন্ন লোকেরা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্র ব্যক্তিদের পরিবার-পরিজন ও আত্মীয়স্বজনকে ইসলামের নির্দেশনা অনুযায়ী মুক্তহস্তে দান-সাদকা করে সাহায্য-সহযোগিতার প্রয়াসে গতিসঞ্চার করতে পারেন। সাহায্যকারীর দান কখনো বৃথা যায় না, যদি না তা লোক দেখানো হয়ে থাকে।

যে ব্যক্তি শুধু প্রথাগত ইবাদত করেন, কিন্তু আল্লাহর রাস্তায় বিপদগ্রস্ত ও দুস্থ মানবতার কল্যাণের জন্য দান-খয়রাত, জাকাত-সাদকা ও সাহায্য-সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন না তিনি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের কাছে কখনোই প্রিয়ভাজন হতে পারবেন না। বৈধ সম্পদ থেকে দরিদ্র ব্যক্তিকে দানের সওয়াব সম্পর্কে নবী করিম সা: বলেছেন, ‘কেউ হালাল উপার্জন থেকে দান করলে আল্লাহ নিজে সেই দান গ্রহণ করেন, সেটি উত্তমরূপে সংরক্ষণ করেন। একসময় সেই দানের সওয়াব পাহাড়তুল্য হয়ে যায়’ (বুখারি ও মুসলিম)।

সুতরাং যে প্রান্তেই থাকুন, নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী বন্যার্তদের সাহায্য-সহযোগিতায় এগিয়ে আসুন। ইসলামের মর্মবাণী অনুসারে মানুষ মানুষের জন্য সাহায্যে এগিয়ে আসবেন, সদাচরণ করবেন- এটাই স্বাভাবিক। ঐক্যবদ্ধভাবে সবাই যদি এগিয়ে আসেন, তাহলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা বালা-মুসিবত যত বড়ই হোক না কেন, তার মোকাবেলা করা কঠিন হতে পারে না। নিশচ্য়ই মহান রাব্বুল আলামিন আপনার হালাল উপার্জন থেকে করা সেই দানের সওয়াব বহুগুণে বাড়িয়ে দিবেন।-আমিন