জলে স্থলে প্রাকৃতিক বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়ে মানুষের কৃতকর্মের ফলেই

ইসলামিক ডেস্ক:প্রকৃতির বৈরিতা মানুষের অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতির অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।  হাওর অঞ্চলে প্রকৃতির বৈরিতার কারণে ব্যাপক শস্যহানি ঘটে।। আবার পার্বত্য অঞ্চলে পাহাড় ধসে মানুষ মারা যায়। স্বল্প পরিমাণে বৃষ্টি হলেই ঢাকা শহরে হাঁটু সমান পানি জমে যায়। আর চট্টগ্রাম নগরীতে বৃষ্টি মানেই নদীর সৃষ্টি হওয়া। কিন্তু প্রকৃতি যখন বৈরি হয়ে ওঠে তখন মানুষের কিছুই করার থাকে না। আসলে জলে স্থলে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়ে, মানুষের কৃতকর্মের ফলেই।

যেমন ধরেন পাহাড়ি এলাকায় যেভাবে পাহাড় কেটে বসতি স্থাপন করা হয় তাতে প্রকৃতির বৈরি হওয়াটাই স্বাভাবিক। কাজেই প্রকৃতির নির্মমতা আপন গতিতে প্রতিশোধ নেয়। আগে আমাদের দেশে এতো বজ্রপাতের ঘটনা ঘটতো না বা ঘটলেও এক সাথে এতো প্রানহানির দৃষ্টান্ত নেই বললেই চলে। মূলত: নির্বিচারে গাছ কাটা, বৃক্ষরোপনে অনিহা, অপরিকল্পিত নগর ও শিল্পায়ন এসবের কারনেই দিনিদিন ঘটছে পরিবেশ বিপর্যয়। এ ধরনের কার্যকরাপ কিন্তু আমরাই করছি কাজেই আমরা কেইই এ দায় এড়াতো পারি না।

সম্প্রতি দেশের সিত্রাংয়ের তাণ্ডবে বিপর্যস্ত উপকূলীয় অঞ্চল। প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। সিত্রাংয়ের প্রভাবে গোটা দেশের জনজীবনই স্থবির হয়ে পড়েছিল। এই যে ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাসের প্রলয়ঙ্করি তাণ্ডব, বারবার বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের আঘাত- এগুলো কেন হয়? এগুলো থেকে পরিত্রাণেরই বা কী উপায়? এ বিষয়ে মানবজাতির সফলতার মৌলিক ঠিকানা ইসলামে রয়েছে কার্যকরী অনন্য নির্দেশনা।

সাড়ে চৌদ্দ শ’ বছর আগে মানবসভ্যতার পথপ্রদর্শক পবিত্র কুরআনে মহান রাব্বুল আলামিন ইরশাদ করেছেন ‘জলে স্থলে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে, মানুষের কৃতকর্মের ফলেই। (আল্লাহর পক্ষ থেকে বিপর্যয় এসেছে) তিনি তাদের কৃতকর্মের শাস্তির খানিকটা স্বাদ (দুনিয়াতেই) আস্বাদন করিয়ে দেন। হয়তো তারা আল্লাহর অবাধ্যতা থেকে ফিরে আসে’ (সূরা রুম-৪১)।

এ্ আয়াত দ্বার এটাই প্রমানিত হয় যে পৃথিবীজুড়ে ছড়িয়ে পড়া প্রাকৃতিক দুর্যোগ তথা সামগ্রিক বিপর্যয়ের মৌলিক কারণ- আল্লাহর অবাধ্যতা। আর বিপর্যয় থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় আল্লাহর অবাধ্যতার অন্ধকার থেকে তাঁর আনুগত্যের আলোকময় পথে ফিরে আসা।

এভাবে কুরআন মাজিদের বিভিন্ন আয়াতে বিপর্যয়ের মৌলিক কারণ হিসেবে পাপাচার, সীমালঙ্ঘন তথা আল্লাহর অবাধ্যতাকে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং পরিত্রাণের উপায় হিসেবে আল্লাহর দিকে ফিরে আসার আলোকময় নির্দেশনাই প্রদান করা হয়েছে।

তাই আসুন আমরা পাপাচারের অন্ধকার থেকে আল্লাহর আনুগত্যের আলোকময় জগতে ফিরে যাই। বিশেষত প্রাকৃতিক দুর্যোগকালে তাওবা-ইস্তিগফার করে সর্বান্তকরণে আল্লাহ অভিমুখী হই। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সব ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা করুন।-আমীন