এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম: কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে ঈদ জামাতে লাখো মানুষ নামাজ আদায় করেছেন। এটি ছিল এ ময়দানে ১৯৬তম ঈদ জামাত। শোলাকিয়া ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদের ভাষ্যমতে, এবারের ঈদ জামাতে পাঁচ লক্ষাধিক মানুষ এখানে নামাজ আদায় করেছেন।
চার স্তরের কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সকাল ১০টায় শুরু হওয়া নামাজে ইমামতি করেন মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ। রেওয়াজ অনুযায়ী জামাত শুরুর আগে তিনবার বন্দুকের গুলি ফুটিয়ে নামাজের প্রস্তুতি নেওয়ার সঙ্কেত দেওয়া হয়। খুতবা পাঠ শেষে বাংলাদেশসহ মুসলিম উম্মাহর কল্যাণ কামনা করে দোয়া করা হয়।
ঈদ জামাতে দূর-দূরান্তের মানুষের যাতায়াতের জন্য ‘শোলাকিয়া স্পেশাল’ নামে দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করে রেল কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে একটি ট্রেন ছেড়ে আসে ময়মনসিংহ থেকে ও অপরটি আসে ভৈরব থেকে।
এদিকে, ২০১৬ সালে শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার কথা মাথায় রেখে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। নামাজের সময় পাঁচ প্লাটুন বিজিবি, বিপুলসংখ্যক পুলিশ, র্যাব, আনসার সদস্যের সমন্বয়ে নিরাপত্তা বলয়ের পাশাপাশি মাঠে সাদা পোশাকে নজরদারি করে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন। এ ছাড়া মাঠসহ প্রবেশ পথগুলোতে ছিল সিসি ক্যামেরা ও ওয়াচ টাওয়ার। আকাশে উড়েছে পুলিশের ড্রোন ক্যামেরা।
উল্লেখ্য, মসনদ-ই-আলা ঈশা খাঁর ষষ্ঠ বংশধর দেওয়ান হযরত খান বাহাদুর কিশোরগঞ্জে জমিদারী প্রতিষ্ঠার পর ইংরেজি ১৮২৮ সনে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পূর্বপ্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে প্রায় ৭ একর জমির উপর এ ঈদগাহ প্রতিষ্ঠা করেন। সে বছর ওই ময়দানে অনুষ্ঠিত প্রথম জামাতে সোয়া লাখ মানুষ অংশ নেওয়ায় মাঠের নাম হয় ‘সোয়া লাখি মাঠ’। সেখান থেকে উচ্চারণের বিবর্তনে নাম ধারণ করেছে আজকের ‘শোলাকিয়া’। প্রায় সাত একর আয়তনের মাঠটিতে নামাজ আদায়কারীদের জন্য ২৬৫টি সারি আছে।