ইসলামিক ডেস্ক: আজ শুক্রবার মে মাসের ৫ তারিখ পহেলা মে ছিল মহান মে দিবস। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সবাই নানারকম বাণী দিয়েছেন শ্রমিকদের মর্যাদার কথা বলেছেন; শ্রমিকদের অধিকার রক্ষার কথা বলেছেন। অথচ বর্তমান সমাজে যারা শ্রমজীবী মানুষ তাদের প্রতি আমরা কতই না অত্যাচার করি। অনেকে সঠিক সময় বেতন দেয় না; কাজ করে নিয়ে সময়মতো টাকা পরিশোধ করেন না; গৃহকর্মীকে নির্যাতন করেন; অনেক সময় অকথ্য ভাষায় গালাগাল ইত্যাদি ইত্যাদি। পত্রিকার পাতা খুললেই প্রতিদিন এ ধরনের চিত্র চলে আসে।
অথচ মানবতার ধর্ম ইসলাম সবসময় শ্রমজীবী মানুষের প্রতি দয়ার কথা বলে গেছে এবং বলছে। শ্রমজীবী মানুষের প্রতি দয়া প্রদর্শন করলে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আপনার দুনিয়া-আখিরাতের ভাগ্য সুপ্রসন্ন করে দেবেন। আপনার প্রতি আল্লাহর দয়ার ভাণ্ডার খুলে দেবেন। মানসিক প্রশান্তির সাথে সাথে আপনার সামাজিক মর্যাদাও বৃদ্ধি পাবে। দুর্বল অসহায়দের কৃতজ্ঞতা আপনার জীবনকে ফুলে ফলে সাজিয়ে দেবে।
আমাদের মনে রাখতে হবে শ্রম দিয়ে যার জীবিকা নির্বাহ করে নস মানুষটিও আমাদের মতো রক্ত-মাংস দিয়ে তৈরী। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘হে মানব জাতি! তোমাদের রবকে ভয় করো। তিনি তোমাদের সৃষ্টি করেছেন একটি প্রাণ থেকে। আর সেই একই প্রাণ থেকে সৃষ্টি করেছেন তার জোড়া। তারপর তাদের দু’জনার থেকে সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে দিয়েছেন বহু পুরুষ ও নারী। সেই আল্লাহকে ভয় করো যার দোহাই দিয়ে তোমরা পরস্পরের কাছ থেকে নিজেদের হক আদায় করে থাকো এবং আত্মীয় ও নিকট সম্পর্ক বিনষ্ট করা থেকে বিরত থাকো। নিশ্চিত জেনে রাখো, আল্লাহ তোমাদের ওপর কড়া নজর রেখেছেন।’ (আন নিসা : ১)
ধনসম্পদ, বংশমর্যাদা ও প্রভাব-প্রতিপত্তির ভিত্তিতে একজন অন্যজনের ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দাবি করতে পারে না। তবে আল-কুরআন একমাত্র তাকেই অধিক মর্যাদা দান করেছে যিনি আল্লাহকে বেশি ভয় করেন। ঐতিহাসিক বিদায় হজের ভাষণে রাসূল সা: বলেন : ‘অনারবদের ওপর আরবদের, আরবদের ওপর অনারবদের কোনো শ্রেষ্ঠত্ব নেই। তেমনি সাদার ওপর কালো কিংবা কালোর ওপর সাদার কোনো শ্রেষ্ঠত্ব নেই। তোমরা সবাই আদমের সন্তান আর আদমকে সৃষ্টি করা হয়েছে মাটি থেকে। মর্যাদার ভিত্তি হচ্ছে শুধু তাকওয়া।
পব্রি কোরআনে মহান রাব্বুল আলামিন বলেছেন ‘তোমরা আল্লাহর ইবাদাত কর, তার সাথে কাউকে শরিক করোনা এবং পিতা-মাতার সাথে ভালো ব্যবহার করো, আরো সদ্ব্যবহার কর আত্মীয়-স্বজনদের সাথে, এতিমদের সাথে, দরিদ্রদের সাথে, আত্মীয় প্রতিবেশীদের সাথে, অনাত্মীয় প্রতিবেশীদের সাথে, সফরসঙ্গীর সাথে, পথিকের সাথে এবং দাস-দাসীর সাথে। আল্লাহ দাম্ভিক ও গর্বিত লোককে পছন্দ করেন না।’ (নিসা : ৩৬)
সুতরাং আসুন সবাই ইসলামের সুমহান বানীর প্রতি শ্রদ্ধা রেখে অধীনস্থ দুর্বল শ্রেণী, চাকর-চাকরানীদের সাথে দুর্ব্যবহার ও নিষ্ঠুর আচরণ আর করবেন না। এদের সাথে নিষ্ঠুর আচরণ করা কবিরা গুনাহের অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে এদের প্রতি সদয় হওয়ার সুমতি দিন। আমিন।