ফুলকপির কার্ড পঁচা রোগ ব্যবস্থাপনা

সমীরণ বিশ্বাসঃ ফুলকপি আমাদের দেশের শীতকালীন সবজির মধ্যে অন্যতম। পুষ্টি সমৃদ্ধ সবজি ফুলকপি চাষে সফলতা পেতে হলে অবশ্যই সঠিক সময়ে সঠিকভাবে রোগ বালাই দমন করতে হবে। কার্ড পঁচা রোগ ফুলকপির মারাত্নক ক্ষতি করে। জেনে নেওয়া যাক ফুলকপির কার্ড পচা রোগের কারণ ও প্রতিকার । এখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের উপযুক্ত সময়।

রোগের কারণ:
এ রোগ ফিউজেরিয়াম ইকোইজিটি ও অলটারনেরিয়া প্রজাতির ছএাক এবং আরউইনিয়া কেরোটোভোরা নামক ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে হয়। এ রোগের আক্রমণের কারণে ফুলকপির সম্পূর্ণ ফুল নষ্ট হয়ে যায় বা খাওয়ার অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এতে কৃষকের অনেক ক্ষতি হয়।

রোগের ক্ষতির ধরণ:
১. সাধারণত ছত্রাক আক্রান্ত ফুলকপির কার্ডে প্রথমে বাদামী রংয়ের গোলাকার দাগ দেখা যায় ।
২. পরে একাধিক দাগ মিলে বড় দাগ হয় এবং কার্ড পচে যায় ।
৩. ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ হলে কার্ড দ্রুত পচে যায়।
৪. আক্রান্ত কার্ড বা মাথা থেকে খুব কম পুষ্পমুঞ্জরী বের হয় এবং ইহা খাওয়ার অযোগ্য হয়ে যায়।

জৈব প্রতিকার:
১. এ রোগের আক্রমণ থেকে বাঁচতে প্রথমে সুস্থ গাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করতে হবে।
২. প্রতি কেজি বীজে ২.৫ গ্রাম প্রোভ্যাক্স বা কাবেন্ডাজিম দিয়ে বীজ শোধন করতে হবে
৩. ফুলকপি চাষের একই জমিতে বার বার কপিজাতীয় ফসল চাষ করা যাবে না।
৪. আক্রান্ত খেত থেকে বীজ সংগ্রহ করা যাবে না।
৫. লাল মাটি বা অম্লীয় মাটির ক্ষেত্রে শতাংশপ্রতি চার কেজি হারে ডলোচুন প্রতি তিন বছরে একবার প্রয়োগ করতে হবে।

রাসায়নিক প্রতিকার:
কার্বেন্ডাজিম গ্রুপের এগবেন ছত্রাক নাশক বা এজোক্সিস্ট্রবিন+ সিপ্রোকোনাজল গ্রুপের মনা ছত্রাক নাশক প্রতিটি আলাদা ভাবে ০.২ % হারে মিশে ১২-১৫ দিন পর পর স্প্রে করতে হবে। ওষুধ প্রয়োগের পাঁচদিন পর্যন্ত ফসল তোলা যাবে না। প্রয়োজনে উপজেলা কৃষি অফিসে কৃষিবিদদের পরামর্শ অনুযায়ী কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে।

লেখক: সমীরণ বিশ্বাস, কৃষি ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞ , ঢাকা।