বিশ্ব দুগ্ধ দিবসে ২৫০০ শিশুকে দুধ পান করালো বাকৃবির ডেয়‌রি বিভাগ

বাকৃবি প্রতিনিধি:বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) ১৩তম বিশ্ব দুগ্ধ দিবস উদযাপিত হ‌য়ে‌ছে। দেশে ডেয়রি শিল্পের বিকাশ এবং দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্যের গুরুত্ব সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে এবা‌রের প্রতিপাদ‌্য ‘আসুন দুগ্ধশিল্প এবং দুধের প্রভাব উদযাপন করি’ নির্ধারণ করা হ‌য়ে‌ছে। দিবসটি উপলক্ষে সকালে ২ হাজার ৫শ স্কুল শিক্ষার্থীকে দুধ পান করানো হয়। এছাড়াও গত শ‌নিবার শিশু কিশোরদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও হোম কিচেন ডেয়রি রেসিপি প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

র‌বিবার (১ জুন) সকা‌লে পশুপালন অনুষদের সামনে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে দিবসের উদ্বোধন করেন বাকৃবির ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা ও ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড মো. শহীদুল হক। এরপর একটি বর্ণাঢ্য র‍্যালি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন মিলনায়তনে এসে শেষ হয়। প‌রে সেখানে দুগ্ধ দিবসের ওপর আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই দিবস‌টির আ‌য়োজন ক‌রে বাকৃ‌বির ডেয়‌রি বিজ্ঞান বিভাগ।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনের সময় বাকৃবির ডেয়রি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক. মোহাম্মদ আশিকুল ইসলাম জানান, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার মতে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির প্রতিদিন ২৫০ মিলি লিটার দুধ প্রয়োজন। সেখানে আমাদের প্রাপ্যতা মাত্র ২৩৫ মিলি লিটার।
প্রতি বছর দেশে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকার দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য আমদানি করতে হয়। দুধের উৎপাদন ঘাটতির পেছনে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো ভালো জাতের দুধেল গাভীর অভাব, গো-খাদ্যের স্বল্পতা ও উচ্চ মূল্য এবং দুধ বাজারজাতকরণের জটিলতা। এছাড়াও দুধ পা‌নের অনাগ্রহী। তাই দুধের উৎপাদন বাড়াতে হলে দুধ পানের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে এবং দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্যের উৎপাদন বাড়াতে হবে। এছাড়াও ডেইরি উন্নয়ন বোর্ডকে পুনর্গঠন ও শক্তিশালী করতে হবে।

বাংলাদেশ অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি এসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো আবুল হাশেম বলেন, গাভীর দুধে থাকা ল্যাকটোজ ও অন্যান্য নিউট্রিয়েন্ট যেমন ক্যালসিয়াম, ভিটামিন বি১২, প্রোটিন ও ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড মস্তিষ্কের বিকাশ ও স্মৃতিশক্তি রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বিশেষ করে ৬০ থেকে ৬৯ বছর বয়সীদের জন্য প্রতিদিন ২ থেকে ৩ গ্লাস দুধ পান স্মৃতিশক্তি হ্রাস এবং দ্রুত বার্ধক্য প্রতিরোধে সহায়ক। গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা নিয়মিত দুধ পান করেন, তাদের সার্বিক স্নায়ুতন্ত্রের কার্যকারিতা দীর্ঘস্থায়ী হয়।

প্রসঙ্গত, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) উদ্যোগে সর্বপ্রথম ২০০১ সালে বিশ্ব দুগ্ধ দিবস উদযাপন শুরু হয়। এর ধারাবাহিকতায় ২০১৩ সাল থেকে বাংলাদেশেও এই দিবসটি উদযাপন করা হচ্ছে।

বাকৃবির ডেয়রি বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. এ কে এম মামুমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পশুপালন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. রুহুল আমিন, নেসলে বাংলাদেশের রেগুলেটরি এন্ড সায়েন্টিফিট এফেয়ার্স প্রধান রেবেকা শারমিন। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবির ডেয়রি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক (অবসরপ্রাপ্ত) ড. এম এ সামাদ খান, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক (অবসরপ্রাপ্ত) ড. মো. নুরুল ইসলাম, বাংলাদেশ অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি এসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো আবুল হাশেম।