সুব্রত কুমার পাল: রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার দেওপাড়া ইউনিয়নের এসিডির কৃষি জ্ঞান কেন্দ্র চত্বরে ১ জুন বিকাল ৩টায় বিশ্ব দুগ্ধ দিবসের প্রাক্কালে এক ব্যতিক্রমধর্মী কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ লাইভস্টক সোসাইটি এবং রোটারী ক্লাব অব রাজশাহী সেন্ট্রাল ও ব্র্যাক এর তত্ত্বাবধানে, অক্সফাম ইন বাংলাদেশ’র সহযোগিতায় এসোসিয়েশন ফর কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট (এসিডি)-এর "কালটিভেটিং চেঞ্জ" প্রকল্পের অংশ হিসেবে এই কর্মসূচি আয়োজন করা হয়।
এই কর্মসূচিতে শতাধিক নারী ও পুরুষের মাঝে বিনামূল্যে দুধ বিতরণ, প্রাণিসম্পদ পরিচর্যা এবং ওষুধ সরবরাহ করা হয়। স্থানীয় আদিবাসী নারী কৃষক ও খামারিদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি, পশুস্বাস্থ্য ও পুষ্টির গুরুত্ব তুলে ধরাই ছিল এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য। উপস্থিত অংশগ্রহণকারীরা জানান, এমন উদ্যোগ তাদের মাঝে নতুন উদ্দীপনা তৈরি করেছে এবং তারা প্রাণিসম্পদ রক্ষায় আরও সচেতন হয়ে উঠবেন।
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ লাইভস্টক সোসাইটির সভাপতি প্রফেসর ড. জালাল উদ্দিন সরদার, সাধারণ সম্পাদক ড. হেমায়েতুল ইসলাম আরিফ, গবাদি পশু ও দুগ্ধ উন্নয়ন খামারের উপপরিচালক ড. ইসমাইল হক, ব্র্যাক এআই এন্টারপ্রাইজের ভেটেরিনারী সার্জন ডা. আল হেলাল মন্ডল, এসিডি প্রকল্প সমন্বয়কারী সুব্রত কুমার পাল, পাওয়ার ফুল এগ্রোভেট এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও নারী উদ্যোক্তা সেলিনা বেগম, এসিডি প্রোগ্রাম অফিসার মো. ইনজাম উল হক, কমিউনিটি মোবিলাইজার সুচিত্রা হেমব্রম প্রমূখ।
বাংলাদেশ লাইভস্টক সোসাইটির সভাপতি প্রফেসর ড. জালাল উদ্দিন সরদার বলেন, "দুগ্ধ ও প্রাণিসম্পদের সঠিক পরিচর্যা শুধু পরিবারের পুষ্টি নিরাপত্তাই নয়, গ্রামীণ অর্থনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এই ধরনের কর্মসূচি খামারিদের জ্ঞান ও সচেতনতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।"
বিশেষ অতিথি গবাদি পশু ও দুগ্ধ উন্নয়ন খামারের উপপরিচালক ড. ইসমাইল হক বলেন, "সমাজের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়ানো আমাদের দায়িত্ব। আমরা সবসময় এই ধরনের জনকল্যাণমূলক কার্যক্রমে পাশে থাকতে চাই। সরকারও এ বিষয়ে কার্যকর ভ‚মিকা রাখছে।"
এসিডি জানায়, "কালটিভেটিং চেঞ্জ প্রকল্পের মাধ্যমে শুধু কৃষির উপরই জোর দিচ্ছি, এমনটা নয়, টেকসই জীবন ও জীবিকায়নে নারীদের ক্ষমতায়নকেও গুরুত্ব দিচ্ছি। এই কর্মসূচি তারই একটি অংশ।" স্থানীয় নারী খামারী অলিভিয়া বিশ্বাস বলেন, "আমি আগে বুঝতাম না কীভাবে গরুর যতœ নিতে হয়। আজকে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কথা শুনে অনেক কিছু শিখেছি। বিনামূল্যে ওষুধও পেলাম, যা খুব উপকারে আসবে।" আমরা সাধারণত পশুর অসুস্থতা হলে চিকিৎসকের কাছে যেতে পারি না। এই ধরনের ক্যাম্প আমাদের খুব উপকারে আসে। দুধ খেয়ে ভালোও লাগছে!"
প্রতি বছর ১ জুন বিশ্ব দুগ্ধ দিবস পালিত হয়, যার সূচনা ২০০১ সালে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (ঋঅঙ) হাত ধরে। বাংলাদেশে এই দিবস কেবল পুষ্টি সচেতনতা নয়, বরং গ্রামীণ অর্থনীতি, খাদ্য নিরাপত্তা ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের শারীরিক-মানসিক বিকাশের মৌলিক স্তম্ভ¢ হিসেবে কাজ করে। ২০২৫ সালের প্রতিপাদ্য "দুগ্ধের শক্তি উদযাপন" (Celebrating the Power of Dairy) বাংলাদেশের যুব সমাজের জন্য একটি রোডম্যাপ তুলে ধরে