এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম: বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সফল গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে দেশের মানুষ যখন চরম সংকটে তখন অসাধু ও মুানাফালোভী ব্যবসায়ীরা যেন নানা অজুহাতে মানুষের কাছ থেকে অতিমুনাফা ও নিত্যপণ্য নিয়ে কারসাজি না করেন সে বিষয়ে ব্যবসায়ীদের কাছে বিশেষ অনুরোধ করেছেন দেশের ক্রেতা-ভোক্তাদের জাতীয় প্রতিনিধিত্বকারী প্রতিষ্ঠান কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম ও ক্যাব যুব গ্রুপের নেতৃবৃন্দ।
আজ ০৮ আগষ্ট ২০২৪ইং নগরীর ভোগ্যপণ্যের অন্যতম বৃহৎ বাজার বহদ্দারহাট সিটি করপোরেশন কাঁচা বাজারে দেশের সংকট ও ক্রান্তিকালীন সময়ে নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখতে ও সিন্ডিকেট কারসাজি বন্ধের দাবিতে বাজার ভিত্তিক প্রচারণা কর্মসূচিতে উপরোক্ত আহবান জানান।
ক্যাব যুব গ্রুপ চট্টগ্রাম মহনগরের সভাপতি আবু হানিফ নোমানের সঞ্চালনায় এ বাজার ভিত্তিক প্রচারণা কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম মহানগরের যুগ্ন সম্পাদক মোহাম্মদ সেলিম জাহাঙ্গীর, ক্যাব চান্দগাও থানা সভাপতি মোহাম্মদ জানে আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুর রহমান, ক্যাব যুব গ্রুপের রাসেল উদ্দীন, তানিয়া সুলতানা, এমদাদুল ইসলাম, মুহাম্মদ ওমর ফারুব, মোহাম্মদ করিমুল ইসলাম, নাফিসা নবী, ইসমত জাহান, আহনাফ সুলাইমান, আবু সাঈদ মোঃ নোমান, নাসির উদ্দীন, রিদওয়ানুল হক হ্দয় প্রমুখ।
প্রচারণা কর্মসূচিতে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, নানা অজুহাতে ব্যবসায়ীরা নিত্যপণ্য ও জীবনরক্ষাকারী ওষুধের দাম বাড়িয়ে সাধারন মানুষের জীবন যাত্রাকে অস্থির করে রেখেছেন। আর সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত লোকজন অসাধু ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নানা সুবিধা নিয়ে নিরব থেকেছেন এবং অনেক জায়গায় ব্যবসায়ীদের সুরে কথা বলেছেন। আবার পদে পদে ব্যবসায়ীরাও চাঁদাবাজি, আমদানিকারক ও করপোরেট ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বেশি দামে ক্রয়সহ ব্যবসার খরচ বেশি বলে প্রচার করে মানুষের পকেট কেটেছেন। আবার অনেক জায়গায় ভোক্তা অধিদপ্তরের বাজার তদারকিতে তাদেরকে বাঁধা প্রদান করেছেন। ফলে নিত্যপণ্য ও ওষুধের বাজারে ভোক্তারা বিগত ১৫ বছর অনেকটাই জিম্মি ছিলেন। আর এ সুযোগে বিগত সরকারের কিছু সুবিধাভোগী ব্যবসায়ীরা সবকিছু নিয়ন্ত্রণ ও সিন্ডিকেট করে পুরো দেশের মানুষের পকেট কেটে দেশে বিদেশে পাঁচার করেছেন। আবার অনেকে ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান, মিডিয়া ও অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল করে নিজেদের সা¤্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছেন। যার কারনে ছাত্র-জনতার কোটা বিরোধী আন্দোলনের সময় ব্যবসায়ীরা বিগত সরকারকে অকুন্ঠ সমর্থন পূনঃব্যক্ত করেছিলেন যাতে তাদের এই অবৈধ মুনাফায় যেন কোন ছেদ না পড়েন।
ক্যাব নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করে বলেন, আইন প্রয়োগে শিথিলতা ও স্থানীয় প্রশাসনের আশ্রয়-প্রশ্রয়ের কারনে কোরবানীর ঈদের পর থেকে চাল, আলু, কাঁচা মরিচ, পেয়াঁজসহ শাক-সবজিসহ নিত্যপণ্যের মূল্য সাধারণের ক্রয়-ক্ষমতাকে বৃদ্ধাঙ্গগুলি দেখিয়ে যাচ্ছেন। আর যারা এগুলো দেখার দায়িত্ব তাঁরা দেখেনি বা কোন অভিযোগ পাই নাই এভাবে নানা অজুহাতে বিষয়টিকে পাশকাটানোর কারনে ব্যবসায়ীরা বেপরোয়া হয়ে ভোক্তাদের পকেট কাটছে। আবার আইন প্রয়োগে চেহারা ও রাজনৈতিক পরিচয় দেখে ব্যবস্থা নেবার কারনে আইনের স্বাভাবিক গতি বারবার ব্যহত হয়েছে। যার কারনে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী স্থানীয় প্রশাসনকে বারবার বাজার তদারকি জোরদারে নির্দেশনা দিলেও সেগুলো কাগজে কলমেই থেকে গেছে।
বক্তাগন আরও বলেন, গুটি কয়েক করপোরেট গ্রুপের কাছে পুরো নিত্যপণ্যের বাজার ছেড়ে দিয়েছিলো বিগত সরকার। ছাত্র-জনতার এ আন্দোলনকে সফল করতে হলে এসমস্ত করপোরেট গ্রুপগুলো বিগত সরকারের আমলে কি পরিমান অর্থ লুপাট করেছেন তার অনুসন্ধান ও তাদের অবৈধ সম্পদের পরিসংখ্যান জাতির কাছে উপস্থাপন করে ঐ সম্পদ রাস্ট্র মেরামতে বিনিয়োগ করা দরকার। মানুষরূপী এসমস্ত মূল্য সন্ত্রাসীরা সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে পৃষ্টাষোকতায় রাস্ট্রীয় ক্ষমতায় অংশীদারিত্ব বাড়িয়েছেন। তারা রাজনৈতিক দল, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ মাদ্রাসায় অনুদান দিয়ে বাহবা খুড়াঁয় খুড়িয়ে সাদা মনের মানুষ বলে প্রচার করেছেন। অথচ তাদের আয়ের উৎস কি কেউ জানার চেষ্টা করেনি। একারনে তারা একবার জনগনের পকেট কাটার জন্য খাদ্যপণ্যসহ বিভিন্ন ব্যবসায় লগ্নি করেন। আবার দলীয় এমপি, নেতা হবার জন্য আরেকবার লগ্নি করেন। তাদেরকে আশ্রয় পশ্রয় না দিলে কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা এভাবে জাতির জন্য বিষফোড়া হয়ে হতে পারতো না।