আবুল বাশার মিরাজ, বিশেষ প্রতিনিধি: বাংলাদেশের পোল্ট্রি শিল্পে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে যাচ্ছে "১৩তম আন্তর্জাতিক পোল্ট্রি শো ও সেমিনার-২০২৫", যা আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। আগামী ২০, ২১ এবং ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ তারিখে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার (BBCFEC), পূর্বাচল, ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে পোল্ট্রি শিল্পের এই মেগা ইভেন্ট। এছাড়া, ১৮ এবং ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রেডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেনে আয়োজন করা হবে একটি আন্তর্জাতিক পোল্ট্রি সেমিনার।
এই আয়োজনকে যৌথভাবে পরিচালনা করছে ওয়ার্ল্ডস পোল্ট্রি সায়েন্স এসোসিয়েশন-বাংলাদেশ শাখা (ওয়াপসা-বিবি) এবং বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি)। এই সেমিনার এবং শো'তে দেশের ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিশেষজ্ঞরা পোল্ট্রি শিল্পের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ এবং সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করবেন।
জানা গেছে, এবার এক ছাদের নিচে মেলায় ৮০০ টি বেশি দেশি-বিদেশী স্টল থাকবে। আর আগের তুলনায় স্টলের আকার বাড়ছে। প্রতিটি স্টলের আয়তন ১০X১০ স্কয়ার ফুট। আর দর্শনার্থীদের আনা নেওয়ার জন্য থাকবে বিআরটিসির শাটল বাস।।
এবছরের শো এবং সেমিনারের প্রস্তুতিমূলক কাজ ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে আজ ৩ অক্টোবর ২০২৪, রুপায়ন শপিং স্কয়ারে ওয়াপসা-বিবির সেক্রেটারিয়েটে কৃষি ও পোল্ট্রি বিষয়ক সাংবাদিকদের নিয়ে একটি মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। এই সভায় সাংবাদিকদের প্রস্তাবনা এবং মতামত গ্রহণ করা হবে, যা আগামী বছরের আয়োজনকে আরও সফল করতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন ওয়ার্ল্ডস পোল্ট্রি সায়েন্স এসোসিয়েশন-বাংলাদেশ শাখার (ওয়াপসা-বিবি) সভাপতি মশিউর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ডা. বিপ্লব কুমার প্রামাণিক। এছাড়াও সাংবাদিত সম্মেলনে ইভেন্ট বাস্তবায়ন কমিটির মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট কমিটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ তৌহিদ হোসেন, ভেন্যু ম্যানেজমেন্ট কমিটির আহ্বায়ক জনাব মো: সিরাজুল হক, সদস্য সচিব ফয়জুর রহমান সহ আরো অনেকে ।
মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট কমিটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ তৌহিদ হোসেন বলেন, “আমাদের এই আয়োজন পোল্ট্রি শিল্পের অগ্রগতিতে বড় ধরনের ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। আগের শো গুলোও ব্যাপক সাফল্য পেয়েছিল। এবারের আয়োজনে আরও নতুন প্রযুক্তি, গবেষণা ও বাণিজ্যিক সুযোগ নিয়ে আসার চেষ্টা করা হবে।”
তিনি আরও জানান, “দেশি-বিদেশি কোম্পানিগুলোর অংশগ্রহণ এবং বিশেষজ্ঞদের উপস্থিতি এই মেগা শো'কে আন্তর্জাতিক মানের করে তুলবে। শুধু পোল্ট্রি ব্যবসায়ী নয়, যেকোনো কৃষি উদ্যোগ, প্রযোজনা এবং গবেষণার সাথে যুক্ত ব্যক্তিরাও এতে বিশেষ লাভবান হবেন।”
মতবিনিময় সভায় ওয়ার্ল্ডস পোল্ট্রি সায়েন্স এসোসিয়েশন-বাংলাদেশ শাখার (ওয়াপসা-বিবি) সভাপতি মশিউর রহমান বলেন, বাংলাদেশের জনগণের পোল্ট্রি পণ্যের চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে। তিনি জানান, বর্তমানে একজন বাংলাদেশি প্রতিবছর গড়ে ১০ কেজি মুরগির মাংস এবং ১৩৫টি ডিম খাচ্ছেন। পোল্ট্রির মাংস পুষ্টিগুণে ভরপুর এবং প্রোটিনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস।
তবে টেকসই পোল্ট্রি শিল্প গড়ে তুলতে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে বলে উল্লেখ করেন মশিউর রহমান। বিশেষ করে পোল্ট্রি বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এখনো যথাযথভাবে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে না। তিনি বলেন, বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে পোল্ট্রি বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং পরিবেশ, জলবায়ু ও আবহাওয়ার ভারসাম্য রক্ষা করে মুরগি পালন করা অত্যন্ত জরুরি।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, আসন্ন পোল্ট্রি সেমিনারে বিজ্ঞানীরা উন্নত প্রযুক্তি ও পদ্ধতি উপস্থাপন করবেন, যা বাংলাদেশের পোল্ট্রি শিল্পকে আরও এগিয়ে নিতে সহায়ক হবে। মশিউর রহমান আরও বলেন, "এই মেলা নতুন আকর্ষণ নিয়ে আসছে এবং আমরা আশাবাদী যে এটি বিশ্বের অন্যতম সেরা পোল্ট্রি মেলায় পরিণত হবে।"