সমীরণ বিশ্বাস: সুপ্রিয় কৃষিজীবী ভাইবোন, গ্রীষ্মের তাপদাহে মানুষ, প্রকৃতি অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে ঠিক সে সময় নববর্ষার শীতল স্পর্শে ধরণীকে শান্ত, শীতল ও শুদ্ধ করতে বর্ষা আসে আমাদের মাঝে। খাল-বিল, নদী-নালা, পুকুর, ডোবা ভরে ওঠে নতুন জোয়ারে। গাছপালা ধুয়ে মুছে সবুজ প্রকৃতি মন ভালো করে দেয় প্রতিটি বাঙালির। সাথে আমাদের কৃষি কাজে নিয়ে আসে ব্যাপক কঠিন ব্যস্ততা।
প্রিয় কৃষিজীবী ভাইবোন আসুন আমরা সংক্ষিপ্ত আকারে জেনে নেই এ বর্ষায় কৃষির করণীয় আবশ্যকীয় কাজগুলো।
• দ্রুত পরিপক্ক সবজি সংগ্রহ করে ফেলুন।
• জমি থেকে অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশন করুন। জলাবদ্ধতা পরিহারের জন্য সবজির জমির চারিপাশে নিষ্কাশন নালা তৈরি করুন।
• আমন ধানের জমির নিষ্কাশন নালা পরিষ্কার রাখুন যেন জমতে পানি জমে থাকতে না পারে।
• আমন ধানের জমির আইল উঁচু করে দিন।
• সেচ, সার ও বালাইনাশক প্রদান থেকে বিরত থাকুন।
• কলা ও দণ্ডায়মান সবজির জন্য খুঁটির ব্যবস্থা করুন।
• আখের ঝাড় বেঁধে দিন।
• গবাদি পশু ও হাঁস মুরগির থাকার জায়গা পরিষ্কার ও শুকানো রাখুন।
• পুকুরের চারিপাশ উঁচু করে দিন সম্ভব হলে চার পাশে জাল বা বাঁশের চাঁটাই দিয়ে ঘিরে দিন যেন অতিরিক্ত পানিতে মাছ ভেসে না যায়।
• বোরো ধানসহ অন্যান্য বীজ উঁচু ও সঠিক পাত্রে সংরক্ষণ করতে হবে, যাতে বৃষ্টি বা আদ্রতায় নষ্ট না হয়।
• বন্যার আশঙ্কা হলে আগাম রোপণ করা আউশ ধান শতকরা ৮০ ভাগ পাকলেই কেটে মাড়াই-ঝাড়াই করে শুকিয়ে যথাযথ ভাবে সংরক্ষণ করতে হবে।
• আমন ধানের বীজতলা তৈরির জন্য উঁচু জমি না পেলে ভাসমান পদ্ধতিতে বীজতলা তৈরি করে চারা উৎপাদন করা যেতে পারে।
• খরা ও লবণাক্ত এলাকায় জমির এক কোণে মিনি পুকুর খনন করে বৃষ্টির পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা করতে পারেন যেন পরবর্তীতে সম্পূরক সেচ নিশ্চিত করা যায়।
• পরিণত হওয়ার পর বৃষ্টিতে নষ্ট হওয়ার আগে ভুট্টার মোচা সংগ্রহ করে ঘরের বারান্দায় রেখে রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
• এ সময়ে উৎপাদিত শাকসবজির মধ্যে ডাঁটা, গিমাকলমি, পুঁইশাক, চিচিঙ্গা, ধুন্দুল,শসা, ঢেঁড়স এবং বেগুনের গোড়ার আগাছা পরিষ্কার করে, প্রয়োজন হলে মাটি তুলে দিতে হবে।
লেখক: কৃষি ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞ , ঢাকা।