এম মনির উদ্দিন, পিএইচডি: দেশের কৃষি উৎপাদন ইতিমধ্যে জলবায়ু সম্পর্কিত প্রাকৃতিক দুর্যোগ বিশেষ করে বন্যা, খরা, ঘুর্নিঝড়, তাপমাত্রা বৃদ্ধি, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, তাপপ্রবাহ, শৈত্যপ্রবাহ, শিলাবৃষ্টি, অতিবৃষ্টি, বজ্রপাত ইত্যাদির প্রভাবে ব্যাহত হচ্ছে সেইসাথে ঝুঁকির মধ্য দিয়ে চলছে। বিগত দশকগুলোর তুলনায় জলবায়ুর পরিবর্তন এবং এর প্রভাবে কৃষির ফলন কমে গেছে। দেশের খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা বৃদ্ধির পেছনে যে সকল চ্যালেঞ্জ রয়েছে তার মধ্যে ১) জলবায়ুর পরিবর্তনজনিত কারনে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় খাদ্যশস্যের উৎপাদন কমে যাওয়া ২) ধান চাষের আওতায় আবাদি জমির পরিমান কমে যাওয়া ৩) সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়া ৪) অর্থনীতিতে বিরাজমান উচ্চ-আয়ের বৈষম্য অন্যতম।
দেশের কৃষি উৎপাদনের গতিকে আরো বেগবান করা প্রয়োজন ১৭ কোটি মানুষের খাদ্যের যোগান অব্যাহত রাখার জন্য। বাংলাদেশের কৃষির সবচেয়ে বড় এবং গুরুত্বপুর্ন মৌসুম রবি যা আমাদের অতি সন্নিকটে। দেশের উৎপাদিত ফসলের অধিকাংশ বিশেষ করে প্রধান খাদ্য ধানের বড় অংশের উৎপাদন (প্রায় ২২ মিলিয়ন টন) আসে রবি মৌসুম থেকে। আর এ জন্য সামনের রবি মৌসুমের কৃষি উৎপাদন যাতে অব্যাহতভাবে চলমান থাকে তার দিকে নজর দেয়া দেশের যে কোন পরিস্থিতিতেই গুরুত্বপুর্ন। কারন, সময় এবং নদীর ¯্রােত কারো জন্য অপেক্ষা করেনা। প্রবাদটি কৃষি প্রধান বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ন। সময়ের বীজ সময়মত মাটিতে না দিতে পারলে ফসল হবেনা। সময়মত, পরিকল্পনা গ্রহন না করলে উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটা স্বাভাবিক। তাই আগামী বোরো মৌসুমের উৎপাদনকে সফল করার জন্য যে বিষয়গুলি এখনই বিবেচনায় আনা দরকারঃ
১. রাসয়নিক সারের যথাযথ মজুদ এবং সরবরাহ নিশ্চিত করা
কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে দেশে মোট সারের চাহিদা ছিলো ৬.৮৪ মিলিয়ন টন যার মধ্যে রয়েছে ইউরিয়া, টিএসপি, ডিএপি, এমওপি, জিপসামসহ ১১টি সার। ব্যবহৃত ৬.৮৪ মিলিয়ন টন রাসয়নিক সারের ৮০ শতাংশই আমদানী করা হয়। দেশে বছরে মাত্র ১ মিলিয়ন টন ইউরিয়া এবং ০.১ মিলিয়ন টন টিএসপি উৎপাদিত হয়। দেশে বার্ষিক ইউরিয়া সারের চাহিদা ৩.৪ মিলিয়ন টন যার ৮০ শতাংশ অর্থ্যাৎ ২.৭২ মিলিয়ন টন শুধুমাত্র বোরো চাষে ব্যবহার হয়। অন্যান্য সারের অধিকাংশই বোরো মৌসুমে ব্যবহার করা হয়। দেশের প্রয়োজনীয় রাসয়নিক সারের মধ্যে ইউরিয়া আমদানী করা হয় সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব এবং কাতার থেকে। টিএসপি আনা হয় মরক্কো ও তিউনিসিয়া থেকে। এমওপি সার আমদানী করা হয় রাশিয়া ও বেলারুশ থেকে।
যেহেতু, দেশের প্রয়োজনীয় রাসয়নিক সারের অধিকাংশই বাহির থেকে আমদানী করা হয়। সেজন্য, আগামী বোরো মৌসুমকে কেন্দ্র করে দেশে রাসয়নিক সারের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে কিনা তার তথ্য আপডেট থাকা দরকার এবং প্রয়োজন হলে এখনই সারের আমদানীর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া জরুরী যাতে কোনক্রমেই বোরোতে সারের অপর্যাপ্ততা না থাকে।
২. বোরো ধানের মানসম্পন্ন বীজের পর্যাপ্ততা এবং দেশের নির্বাচিত ডিলারদের মাধ্যমে সুষ্ঠভাবে কৃষক পর্যায়ে সরবরাহ করার ব্যবস্থা করাঃ
জলবায়ুর পরিবর্তনের কারনে বাতাসের আদ্রতা বেড়ে যাওয়া, পোকামাকড় ও রোগবালাই এর আক্রমন ইত্যাদি কারনে কৃষক পর্যায়ে মানসম্মত বীজ সংরক্ষন করা অনেকটাই সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে। এর কারনে কৃষক পর্যায়ে সরকারী (বিএডিসি) এবং বেসরকারী (প্রাইভেট কোম্পানী) প্রতিষ্ঠানের বীজের চাহিদা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বোরো চাষের এলাকার টার্গেট অনুযায়ী সামনের বোরো মৌসুমের জন্য প্রয়োজনীয় বীজের চাহিদা এবং তার যোগান কৃষক পর্যায়ে নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা এখনই করা প্রয়োজন। সেইসাথে বিএডিসি’র মাধ্যমে পরবর্তী বোরো মৌসুমের জন্য বীজের চাহিদা বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে উদ্ভাবিত জলবায়ু বান্ধব, পুষ্টিসমৃদ্ধ ও উচ্চ ফলনশীল ধানের জাতের বীজ বর্ধন ও বিতরন কর্মসুচী নেয়ার জন্য বিশেষ কর্মসুচী গ্রহন করা প্রয়োজন।
৩. সুষ্ঠ সেচকার্য ব্যবস্থাপনার জন্য নিরবিচ্ছন্ন বিদ্যুৎ ও জ্বালানী সরবরাহ করাঃ
বোরো মৌুসুমে দেশে সেচকার্যে প্রায় ১৬ লাখ শ্যালো টিউব ওয়েল এবং আনুমানিক ৩৮ হাজার গভীর নলকুপ ব্যবহার হয়। বোরো ধানের শীষ বা দানা গঠন পর্যায়ে (মার্চ-এপ্রিল) দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভু-গর্ভস্থ পানির স্তর নীচে নেমে যায় যার প্রভাবে সেচকার্য ব্যাহত হয় এবং ধানের ফলনে প্রভাব ফেলে। উপরন্ত, বিদ্যুৎ ও জ্বালানী সমস্যার কারনে অনেক সময় সেচকার্য ব্যাহত হয়। দেশের বর্ধিত জনসংখ্যার জন্য কম পরিমান জমি থেকে অধিক ফসল ফলানোর সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য হচ্ছে বোরো মৌসুম। তাই, সকল প্রয়োজনীয় উপকরন সহজলভ্য করার পাশাপাশি সেচের জন্য নিরবিচ্ছন্ন বিদ্যুৎ ও জ্বালানী সরবরাহ নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
৪. কৃষক পর্যায়ে ভুর্তকি এবং প্রনোদনার মাধ্যমে কৃষি উপকরণ নিশ্চিত করাঃ
রাসয়নিক সারসহ সকল কৃষিপণ্যের মুল্য অত্যধিক বেড়ে যাওয়ার কারনে দেশের প্রান্তিক কৃষকেরা জমিতে প্রয়োজনীয় সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগ করতে পারেনা। ফলে, ধানের গবেষণা মাঠে যে ফলন দেখা যায় কৃষকের মাঠে সেই ফলন পাওয়া যায়না। ফলনের এই পার্থক্যকে কমিয়ে আনতে হলে সুষম পরিমানে জমিতে সকল প্রয়োজনীয় সার প্রয়োগ করা দরকার যা আমাদের প্রান্তিক কৃষকের জন্য খুবই কষ্টসাধ্য। কাজেই, দেশের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্যের যোগান নিশ্চিতকল্পে কৃষক পর্যায়ে বিশেষ করে বোরো চাষে ভুর্তকি ও প্রনোদনার মাধ্যমে কৃষি উপকরণ সরবরাহ করা প্রয়োজন।
৫. শ্যালো বা গভীর নলকুপের স্কীম ভিত্তিক সমলয় ধান চাষ চালু করাঃ
প্রতিটি শ্যালো টিউব ওয়েল এবং গভীর নলকুপ ভিত্তিক স্কীমের আওতায় একই জাতের উচ্চ ফলনশীল ধানের চাষ পদ্ধতি চালু করা যাতে সেচের পানির সঠিক ব্যবস্থাপনা করা যায়, রোগবালাই বা পোকামাকড় এর আক্রমন হলে সহজে এবং কম খরচে নিয়ন্ত্রন করা যায়, ধানের ফলন বাড়াতে সহায়ক হয় এবং চারা রোপন ও ধান কাটার জন্য মেশিনারীজ ব্যবহার করে কৃষকের উৎপাদন খরচ কমানো যায়।
৬. গুটি ইউরিয়া এবং এডবিøউডি প্রযুক্তির ব্যবহার সম্প্রসারণ করাঃ
গুটি ইউরিয়া প্রযুক্তি ইউরিয়া সারের অপচয় কমিয়ে আনে এবং এতে প্রায় ৪০ ভাগ ইউরিয়া সাশ্রয় হয়। সারের কার্যকারীতা বেড়ে যাওয়ায় ধানের ফলনও ২৫-৫০% পর্যন্ত বেড়ে যায়। গুড়া ইউরিয়াকে ব্রিকোয়েট মেশিনের মাধ্যমে চাপ দিয়ে ন্যাপথলিনের মত গুটি ইউরিয়া তৈরী করা হয় যার ২.৭ গ্রাম ওজনের একটি গুটি বোরো ধান লাগানোর ৭-১৫ দিনের মধ্যে প্রতি চার গোছার মাঝখানে ৭-১০ সেমি. গভীরে পুতে দেওয়া হয় আর আমনের ক্ষেত্রে একইভাবে ১.৮ গ্রামের ১টি গুটি ব্যবহার করা হয়। এতে বোরো ধানে হেক্টর প্রতি গুটি ইউরিয়ার দরকার হয় ২৪০ কেজি (১০ ইঞ্চি দ্ধ ৬ ইঞ্চি দুরত্বে) আর আমনের ক্ষেত্রে দরকার হয় ১৫০ কেজি।
গুটি ইউরিয়া একবার ব্যবহার করলেই ধান কাটা পর্যন্ত আর ইউরিয়া সার ব্যবহার করার দরকার হয় না এবং গাছে ইউরিয়াজনিত গুপ্তক্ষুধা থাকেনা। গুটি ইউরিয়া যেহেতু মাটির নীচে পুতে দেয়া হয়, ফলে আগাছা সারের উপর ভাগ বসাতে পারে না। এর ফলে আগাছার পরিমান খুবই কমে যায় যা নিড়ানী খরচ কমাতে সহায়ক হয়। অথচ গুড়া ইউরিয়া ছিটিয়ে প্রয়োগ করলে ধান গাছের আগে আগাছা সার গ্রহণ করার সুযোগ পায় কারন আগাছার শিকড় মাটির উপরের দিকে থাকে এবং এতে যত বার ইউরিয়া সার ছিটানো হয় ততবার নিড়ানী দরকার হয়। গুটি ইউরিয়ার ক্ষেত্রে একটি নিড়ানিই যথেষ্ট। ধানের শীষ উৎপাদন পর্যায়ে যদি নাইট্রোজেনের অভাব বা গুপ্তক্ষুধা থাকে তাহলে ফলন অনেক কমে যায়। গুটি ইউরিয়া প্রয়োগ করলে ধান গাছ সবসময় তার প্রয়োজন অনুযায়ী নাইট্রোজেন পায় বিধায় শীষ উৎপাদন পর্যায়ে নাইট্রোজেনের কোন অভাব থাকেনা। এর ফলে ফলন বেড়ে যায়। গুটি ইউরিয়া প্রয়োগ করা জমিতে গুছিতে শীষবাহী কুশির সংখ্যা বেড়ে যায়, দানার আকার পুষ্ট হয় যার কারণে বেশী ফলন পাওয়া যায় এবং পর্যাপ্ত নাইট্রোজেন গ্রহন করায় দানায় এ্যামাইনো এসিড বেড়ে যায় যা প্রোটিন বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়। গুটি ইউরিয়া ব্যবহারে নাইট্রোজেনের অপচয় কমিয়ে দেয় যায় যা ক্ষতিকারক গ্রীনহাউজ গ্যাস নির্গমন উল্লেখযোগ্য পরিমানে কমাতে সহায়ক। গুটি ইউরিয়ার সম্প্রসারন করতে প্রনোদনার আওতায় কৃষক পর্যায়ে বিতরন করা যেতে পারে।
ধান চাষে বিকল্প ভেজানো ও শুকানো (এডবিøউডি) সেচ পানি ব্যবহারের দক্ষতা বাড়ায় এবং অবিরত পানি রাখার তুলনায় গ্রীনহাউজ গ্যাস নির্গমন কমিয়ে দেয়। এডবিøউডি সেচ অবিরত পানি রাখার তুলনায় শস্যের ফলনকে বাড়ানোর পাশাপাশি মিথেন নির্গমন ৩৭ শতাংশ হ্রাস করে। এডবিøউডি এর জন্য মিথেন নির্গমন অবিরত পানি রাখার নির্গমন; ২.২১ কেজি/হেক্টর/দিন এর তুলনায় কম অর্থ্যাৎ ১.৩৯ কেজি/হেক্টর/দিন। এডবিøউডি ফসলের ফলন বাড়ানোসহ সেচের পানি সংরক্ষন করে, ধানের ক্ষেত থেকে গ্রীনহাউজ নির্গমন কমানোর জন্য একটি প্রতিশ্রæতিশীল কৌশল হিসেবে বিবেচিত।
৭. উত্তম কৃষি চর্চার মাধ্যমে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন করাঃ
পেস্টিসাইড মুলত একটি রাসয়নিক বিষ যাকে বলা হয় ”জীবনের নীরব ঘাতক”। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশী মানুষ মারা যায় হৃদরোগ ও স্ট্রোকের কারনে যার অন্যতম কারন খাদ্যে বিষক্রিয়া। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সংরক্ষন শাখার মতে, দেশে ৩৫৯টি পেস্টিসাইডের ৫৬৬১টি পণ্য ব্যবহারের অনুমতি রয়েছে। এর মধ্যে ৯০টি পেস্টিসাইড প্যান (পেস্টিসাইড অ্যাকশন নেটওয়ার্ক) দ্ধারা বিপজ্জনক হিসাবে শেনীবদ্ধ করা হয়েছে এবং এদের মধ্যে মাত্র ১৪টি পেস্টিসাইডের ২০৩৭টি পণ্য বাজারে রয়েছে।
২০১১ সালে বাংলাদেশে মোট পেস্টিসাইড ব্যবহার হয় ৪৪,৪২৩ টন যার মুল্য ৭৫৫ কোটি টাকা। ২০১১ সালে দেশে শুধু আগাছানাশক ব্যবহার হয় ৪০০০ টন যা ২০১৮ সালে বেড়ে দাড়ায় ৭২৫০ টনে। ২০১৭ সালে দেশে ৩৭,১৮৭ টন পেস্টিসাইড তৈরী করার জন্য ১৫,১০৬ টনের বেশী সক্রিয় উপাদান আমদানী করা হয় যা আগের বছরের চেয়ে ৬ শতাংশ বেশী। যে হারে দেশে পেস্টিসাইড ব্যবহার হচ্ছে তাতে ১৭ কোটি মানুষের মাথাপিছু প্রতিবছর গড়ে পেস্টিসাইড ব্যবহারের পরিমান দাড়ায় প্রায় ২৫০ গ্রাম বা তারও বেশী এবং প্রতিবছর পেস্টিসাইড ব্যবহারের বৃদ্ধির হার ৯.২৪ শতাংশ। বাংলাদেশে ব্যবহৃত পেস্টিসাইডগুলো সাধারনত চীন, ভারত, ও জাপান থেকে আমদানী করা হয়।
বাংলাদেশে সর্বাধিক ব্যবহৃত পেস্টিসাইড কার্বোফুরান ধান, বেগুন, আলু, আখ ও চায়ের মত ফসলে প্রয়োগ করার জন্য ২৫৫টি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নামে বিক্রয় হয়। দেশে প্রতি বছর প্রায় ৮০০০ টন কার্বোফুরান নামক পেস্টিসাইড ব্যবহার করা হয়। ডবিøউএইচও কার্বোফুরানকে ¯œায়ুর উপর দীর্ঘস্থায়ী বিষাক্ত প্রভাব সৃষ্টিকারী পেস্টিসাইড হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের এনভায়রনমেন্ট প্রোটেকশন এজেন্সি ¯œায়ু ও প্রজনন ব্যবস্থার উপর কার্বোফুরানের ক্ষতিকর প্রভাব সর্ম্পকে মানুষকে সতর্ক করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন অনেক বছর আগেই এটিকে নিষিদ্ধ করেছে। কানাডাতেও এটি নিষিদ্ধ। অস্ট্রেলিয়া এর ব্যবহারকে সীমিত করেছে এবং মাত্র ২টি পণ্য সেখানে শর্তসাপেক্ষে ব্যবহৃত হচ্ছে।
অনেক কাজই সাময়িক বন্ধ করে রাখা যায়, শুধু বন্ধ করা যায়না পেটের ক্ষুধা যার জন্য দরকার খাদ্যের যোগান । বিশ্বব্যাপী খাদ্য উৎপাদনের গতি জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে নি¤œমুখী। প্রতিটি দেশই এখন প্রথমে নিজের দেশের খাদ্য চাহিদা মেটাতে ব্যস্ত। ব্যাংক ভর্তি ডলার থাকলেও ১৭ কোটি মানুষের খাবার অন্যদেশ থেকে সংগ্রহ করে খাওয়ানো সম্ভব নয়। তাই, নিজ দেশের খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধিই দেশের মানুষের খাদ্যের যোগানের একমাত্র সঠিক পথ। নুতন অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রথমেই নজর দেয়া দরকার খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর। আর, এজন্য কৃষি মন্ত্রণালয় এবং এর অধীভুক্ত সকল প্রতিষ্ঠানের সাথে বসে এখনই ভবিষ্যত করণীয় ঠিক করা প্রয়োজন এবং এই সরকার অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে কাজটি করবে বলে আশা করছি।
লেখকঃ এগ্রোনমিস্ট অ্যান্ড কনসালট্যান্ট