নড়াইলের শোলপুর কানা খাল মাইক্রো-ওয়াটারসেড পুনঃখনন কাজ শুরু

এগ্রিলাইফ২৪ ডকম:রাজকীয় নেদারল্যান্ডস্ দূতাবাসের আর্থিক সহায়তায় সফল ফর ইন্টিগ্রেটেড ওয়াটার রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট প্রকল্প ও জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন এর উদ্যোগে নড়াইল সদর উপজেলার সিংগাশোলপুর ইউনিয়নের শোলপুর কানা খাল মাইক্রো-ওয়াটারসেড এর পুনঃখনন কাজ উদ্বোধন উপলক্ষ্যে কৃষক সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

এ উপলক্ষে সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে শোলপুর কানা খাল মাইক্রো-ওয়াটারসেডের সভাপতি মোঃ খায়রুজ্জামানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে খালটির উদ্বোধন পরবর্তী আলোচনা সভায় নড়াইলের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শারমিন আক্তার জাহান বলেন, খালটি বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সলিডারিডাড ও জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন পুনঃখনন করে পানির আঁধার তৈরি করে দিচ্ছে। ফলে ফসলী জমির মধ্য দিয়ে পুনঃখননকৃত এসব খালের পানি দিয়ে ফসলের সেচ সুবিধা নিশ্চিত হবে। জেলা প্রশাসক শারমিন পুনঃখননকৃত খালে আবর্জনা না ফেলার জন্য অনুরোধ করেন। বিশেষ করে ওয়ান টাইম খাবারের প্লেট, পলি ব্যাগ ও অন্যান্য আবর্জনাসমুহ যা পচনশীল নয় সেসব জিনিস খালে না ফেলার জন্য উপস্থিত সকলকে অনুরোধ করেন। জেলা প্রশাসক কানা খালটি একটি মডেল উল্লেখ করে বলেন, আমি জেনে খুশি হলাম যে, এসব খাল খননে উপকারভোগী এলাকার কৃষকরাও শ্রম দিয়ে অংশগ্রহণ করছেন।

অন্যান্যের মধ্যে বিশেষ অতিথি হিসেবে আলোচনা করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ জসীম উদ্দিন ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী বিশ্বজিৎ কুমার কুন্ডু। নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, প্রস্তাবিত খালের উৎস মুখে পানির প্রবাহ সঠিক রাখার জন্য খনন পরবর্তী সময়ে খেয়াল রাখতে হবে। পুনঃখননকৃত খালের পাড়ে ফলজ ও বনজ গাছ লাগানোর পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, তাহলে খালের পাড় সংরক্ষিত থাকবে। উপপরিচালক কৃষিবিদ জসীম উদ্দিন বলেন, খালের পানি ব্যবহার করে ফসল আবাদ করলে উৎপাদন খরচ কমে যাবে। ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন হবে না, ফলে প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা হবে। খালের জৈব কৃষির প্রবর্তন করা যাবে। খননকৃত খালে বিলুপ্ত প্রায় দেশীয় প্রজাতির মাছের প্রাপ্যতা নিশ্চিত হবে।

আলোচনা সভার শুরুতে সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়ার এর ম্যানেজার, রিজেনারেটিভ এগ্রিকালচার কৃষিবিদ ড. নাজমুন্নাহার স্বাগত বক্তব্যে প্রকল্পের কার্যক্রমের উপর সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেন। তিনি উল্লেখ করেন, খালটি পুনঃখননে শোলপর কানা খাল মাইক্রো-ওয়াটারসেডের কৃষকরা প্রায় তিন লক্ষ টাকা খনন বাবদ কমিটির মাধ্যমে ব্যাংকে জমা করেছেন। সলিডারিডাড এর পাশাপাশি কৃষকরাও প্রয়োজনীয় অর্থ খরচ করবেন।

উদ্বোধন ও আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন নড়াইল সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সঞ্চিতা বিশ্বাস, উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ রোকনুজ্জামান, সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়া এর সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার কৃষিবিদ ড. এস এম ফেরদৌস, প্রোগ্রাম অফিসার কৃষিবিদ রায়হানুল ইসলাম চৌধুরী, মনিটরিং ও ইভাল্যুয়েশন অফিসার বিপ্লব কুমার সাহা, জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশনের প্রকল্প ব্যবস্থাপক কৃষিবিদ মোঃ রুবেল আলী, ট্রেনিং অফিসার কৃষিবিদ আরাফাত রহমান, ওয়াটার ক্লাস্টার অফিসার মোঃ নাদিম হোসেন, ওয়াটার ক্লাস্টার ফ্যাসিলিটেটর মোঃ জাহিদ হোসেন, মোঃ নজরুল ইসলাম, মোঃ হাদিউজ্জামান ও মোঃ আশিকুজ্জামান।

খাল খননের সাথে সংশ্লিষ্ট সলিডারিডাড ও জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তাদের সুত্রে জানা যায় শোলপুর, চুনখোলা, তারাপুর ও সিংগেরদাড়ি গ্রামের ১১২৫ কৃষক পরিবার সরাসরি প্রস্তাবিত ২৪৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের খালটি হতে উপকৃত হবেন। ক্যাচমেন্ট এলাকায় ১২ টি স্থানীয় পানি ব্যবহারকারী দল গঠন করা হয়েছে। এছাড়া খালটির ক্যাচমেন্ট এরিয়া ৬ কিলোমিটার ও প্রায় ৩৫৫০ একর জমি সেচের আওতায় চলে আসবে।

সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন ওয়াটার ক্লাস্টার ফ্যাসিলিটেটর বন্দনা রায়।