ফসলী জমির মাঝে পানির রিজার্ভার থাকলে খরার সময় ফসলে সেচ দেয়া যায়-কৃষিবিদ মোঃ রফিকুল ইসলাম

এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম: খুলনা জেলাধীন ডুমুরিয়া উপজেলার খর্ণিয়া ইউনিয়নের রামতেলী খাল পুনঃখনন কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (০৪ মার্চ) প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খুলনার অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ রফিকুল ইসলাম। রফিকুল ইসলাম বলেন, ফসলী জমির মাঝে পানির রিজার্ভার থাকলে খরার সময় ফসলে সেচ দেয়া যায়। আবার পুনঃখননকৃত খাল দিয়ে অতিবুষ্টির সময় পানি নিস্কাশনও করা যায়।

রাজকীয় নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের আর্থিক সহায়তায় জলাবদ্ধতা নিরসনে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সলিডারিডাড সেটওয়ার্ক এশিয়া ও উত্তরণ যে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে তাতে ফসল আবাদে বিশেষভাবে ভুমিকা রাখবে। কৃষিবিদ রফিকুল বলেন, বিএডিসি’র ‍উদ্যোগে খুব শীঘ্রই জলাবদ্ধতা নিরসন ও ফসলে সেচ নিশ্চিত করার জন্য ২৪৪ টি ছোট ছোট খাল ফসলি জমির মধ্য দিয়ে পুনঃখননের পরিকল্পনা করেছে।

ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ আসাদুর রহমানের সভাপতিত্বে খাল পুনঃখননের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন খর্ণিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ দিদারুল ইসলাম দিদার ও মেম্বর আব্দুল হালিম সরদার।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শুরুতে সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়ার সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার কৃষিবিদ ড. এস এম ফেরদৌস ডুমুরিয়তে প্রকল্পের কার্যক্রম সকলকে অবহিত করেন। তিনি বেলন, খালটি পুনঃখনন কৃষকদের জন্য ও কৃষদের দ্বারা হলে খালের পানি প্রবাহের ধারা অপরিবর্তিত থাকবে। রামতেলী মাইক্রো-ওয়াটারসেডের সামাজিক ম্যাপ উপস্থাপন করেন সাধারণ সম্পাদক মোঃ ওলিয়ার রহমান। ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসাদুর রহমান বলেন, পুনঃখনন করা খালে নেট-পাটা ব্যবহার করা যাবে না। খালের গভীরতা ও পানির প্রবাহ ঠিক রাখার জন্য খালের ক্যাচমেন্ট এলাকার কৃষকদের ব্যাপক ভূমিকা থাকতে হবে। কৃষকদের স্বউদ্যোগে খালের কচুরিপানা পরিস্কার ও পাড় মেরামতে আগ্রহ থাকতে হবে।

চেয়ারম্যান দিদার বলেন, ডুমুরিয়া উপজেলার সব এলাকায় প্রচুর পরিমান সবজি উৎপাদন হয়। স্বাদু পানি ব্যতিত ফসল উৎপাদন সম্ভব হয় না। তিনি খর্ণিয়া ইউনিয়নের মজা খাল চিহ্নিত করে পুঃখননের জন্য সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানান।

উদ্বোধনী সভায় উপস্থিত ছিলেন সফল ফর সমন্বিত পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের খুলনা অঞ্চলের ম্যানেজার কৃষিবিদ মোস্তফা নূরুল ইসলাম রেজা, ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ ইনসাদ ইবনে আমিন, অতিরিক্ত কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ ওয়ালিদ হোসেন, সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এর প্রোগ্রাম অফিসার সুব্রত রায়, উত্তরণের ট্রেনিং অফিসার কৃষিবিদ নাবিলা আজহার, ডুমুরিয়া উপজেলা ওয়াটার ক্লাস্টার অফিসার শুক্লা মন্ডল, ওয়াটার ক্লাস্টার ফ্যাসিলিটেটর কামরুল ইসলাম, মোঃ ইসমাইল, পলাশ কুমার রায়, অপর্ণা মন্ডল, এমরান হোসেন, রাজীব চৌধুরী ও পানি ব্যবহারকারী দলের প্রায় ৩০০ নারী ও পুরুষ কৃষিজীবী।

১৮০০ মিটার দৈর্ঘ্যের রামতেলী খালটি খনন হলে ৫টি গ্রামের ১0টি পানি ব্যবহারকারী দলের ৯৩৭ কৃষক পরিবার সরাসরি উপকৃত হবেন বলে সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এর প্রোগ্রাম অফিসার সুব্রত রায় ও উত্তরণের ডুমুরিয়া উপজেলা ওয়াটার ক্লাস্টার অফিসার শুক্লা মন্ডল সুত্রে জানা যায়। উদ্বোধনী আলোচনার পর কৃষিবিদ রফিকুল, আসাদুর রহমান, শেখ দিদারুল ও সফরসঙ্গীরা কোদাল দিয়ে মাটি কেটে খাল পুনঃখননের কাজ শুভ উদ্বোধন করেন।

সমগ্র অনুষ্ঠানটি উপস্থাপন করেন উত্তরণ এর প্রজেক্ট ম্যানেজার কৃষিবিদ মোঃ ইকবাল হোসেন।